আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। ফাইল ছবি/স্টার

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলায় সাবেক ইসকন নেতা ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালত।

আজ সোমবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন ভার্চুয়াল শুনানির পর এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভার্চুয়ালি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, 'আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য একটি আবেদন করে পুলিশ। আজ ভার্চুয়াল শুনানির পর আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।'

জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরীও দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'তদন্তের সময় হত্যা মামলায় চিন্ময়ের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে আদালতে আবেদন জমা দেন।'

'নিরাপত্তার কারণে জেল খানা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস দাস। আজ শুনানি শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে,' বলেন তিনি।

জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইসকনের প্রাক্তন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এর আগে, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান মামলাটি করেন। তিনি বন্দর নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় ২৫ অক্টোবর আয়োজিত এক সমাবেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ আরও ১৮ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি করেন।

এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আদালত চিন্ময়ের কৃষ্ণ দাসের জামিন আবেদন খারিজ করে দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিন আবেদন খারিজের পর কারাগারে যাওয়ার পথে পুলিশের প্রিজন ভ্যান অবরোধ করেন তার সমর্থকরা। তারা চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করেন, এতে বিকেলে আদালত ভবন এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়।

চিন্ময়ের সমর্থক, পুলিশ ও আইনজীবীদের একটি দলের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ভাঙচুর, হামলা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৭৯ জনের নাম উল্লেখ এবং প্রায় এক হাজার ৪০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়াও, আলিফের বাবা জামাল ৩১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন এবং তার ভাই খান-ই-আলম ৭০ জন আইনজীবীসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

আদালত ভবনের বাইরে সংঘর্ষের সময় মোহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরী নামে আরেকজন ৬৯ জনকে তার ওপর হামলার অভিযোগে পৃথক মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখে শনাক্ত হওয়ার পর  আলিফ হত্যা মামলায় ১১ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Trump says not yet made decision on whether to attack Iran

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

1d ago