মাদারীপুরে শতবর্ষী বটগাছ কাটার বিষয়ে যা জানা গেল

গতকাল সোমবার একদল লোক শতবর্ষী বটগাছটি কেটে ফেলে। ছবি: স্টার

মাদারীপুর সদর উপজেলায় একটি শতবর্ষী বটগাছ কাটা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরের কান্দি এলাকায় কুমার নদের পাশের ওই গাছটিকে ঘিরে এলাকায় বিভিন্ন লোকবিশ্বাস প্রচলিত আছে। 

গতকাল সোমবার বটগাছটি কাটার ভিডিও ছড়িয়ে গেলে, তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

শতবর্ষী বটগাছ। ছবি: স্টার

স্থানীয়দের অনেকে মনে করছেন, বটগাছকে ঘিরে কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন ও পূজা-প্রার্থনায় করায় স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা 'অসন্তুষ্ট' হয়ে গাছটি কাটার নির্দেশ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে শিরখারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাছটিতে বিভিন্ন মানুষজন মোমবাতি জ্বালাত, কেউ লাল সুতা-কাপড় বাঁধতেন। এগুলো "ধর্মীয় পরিপন্থী" কাজ হওয়ায় ইউনিয়নের কিছু লোক একমত হয়ে গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'

কিন্তু মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব জানান, জমির মালিক বিক্রি করে দেওয়ায় গাছটি কেটে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ইউএনও ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শতবর্ষী বটগাছ কেটে ফেলার তথ্য পেয়ে  জেলার বন কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ আমাদের অনেকেই সেখানে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেছেন। জানতে পেরেছি গাছটিকে পুরোপুরি কাটা হয়নি, শাখা-প্রশাখা-কাণ্ড কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা গাছটিকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।' 

কেন এবং কারা গাছটি কেটেছে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, 'আমি স্থানীয়দের সঙ্গে ও বটগাছের জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। জানতে পেরেছি জমির মালিক ওই জমিতে বসবাসের জন্য বাড়ি তুলবেন। তাই বটগাছটি তিনি ১৫০০ টাকায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় বিক্রি করেছেন। পরে ওই মাদ্রাসার লোকজন এসে গাছটি কেটে নিচ্ছিলেন।'  

তবে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জেলার বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইউএনও বলেন, 'স্থানীয়রা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গাছটি কেটে ফেলতে চেয়েছিলেন বলে জানা গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

তবে, ওই জমির মালিক ও বটগাছ কিনে নেওয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে জেলা বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বটগাছ একটি সংরক্ষিত প্রজাতি। কেউ চাইলেই এটি কেটে ফেলতে পারবেন না। এই গাছসহ এলাকার শতবর্ষী গাছগুলোকে চিহ্নিত করে সংরক্ষণের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।'

Comments

The Daily Star  | English

Banks see sluggish deposit growth as high inflation weighs on savers

Banks have registered sluggish growth in deposits throughout the current fiscal year as elevated inflation and an economic slowdown have squeezed the scope for many to save, even though the interest rate has risen.

14h ago