ধারণার চেয়েও দ্রুত ধ্বংস হতে পারে মহাবিশ্ব: গবেষণা

মহাবিশ্বের মহাপ্রয়াণ নিয়ে বিজ্ঞানীদের হিসেব উল্টে দিয়েছে নতুন এক গবেষণা।
ডাচ বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণার বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, পূর্বে ধারণা করা সময়ের চেয়ে অনেক দ্রুত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে সৃষ্টিজগত।
তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এখনো আমাদের হাতে আছে ১০৭৮ (১ এর পর ৭৮টি শূন্য) বছর সময় আছে।
এরপরও এটি একটি বড় ধরনের সংশোধন। কারণ আগে ধারণা করা হচ্ছিল, ১০১১০০ (১ এর পর ১১০০টি শূন্য) বছর স্থায়ী হবে মহাবিশ্ব।
মহাবিশ্বের সময়কাল নিয়ে র্যাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে 'জার্নাল অব কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকেল ফিজিক্স' নামের এক জার্নালে।
গবেষণার প্রধান লেখক হেইনো ফালকে বলেন, 'পূর্বে ধারণা করা সময়ের চেয়ে অনেক দ্রুতই আসবে মহাবিশ্বের চূড়ান্ত সমাপ্তি, তবে সৌভাগ্যক্রমে এটিও বেশ দূরে।'
র্যাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিজ্ঞানী সাদা বামন (হোয়াইট ডোয়ার্ফ) তারার মতো দীর্ঘজীবী মহাজাগতিক বস্তুগুলো কখন ধ্বংস হবে, তা বের করার উদ্দেশ্যে গবেষণাটি শুরু করেন।
স্টিফেন হকিংয়ের নামে নামকরণ হওয়া 'হকিং বিকিরণ' তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তারা এই হিসাব করেন।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে হকিং বলেছিলেন, কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল আছে। ব্ল্যাক হোল থেকে নির্গত হওয়া বিকিরণে কারণে এটি পানির গ্লাসে ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া ট্যাবলেটের মতোই নিঃশেষ হয়ে যাবে।
র্যাডবাউডের বিজ্ঞানীরা এই ধারণা অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর ওপর প্রয়োগ করেন। তারা দেখেন, একটি বস্তুর নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার সময়টা নির্ভর করে তার ঘনত্বের ওপর।
এভাবে তারা মহাবিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বস্তু—সাদা বামনের তাত্ত্বিক বিলুপ্তিকাল নির্ধারণ করতে সক্ষম হন।
গবেষণার সহ-লেখক ওয়াল্টার ভ্যান সুইলেকমের মতে, 'এই ধরনের প্রশ্ন ও বিশ্লেষণ করে আমরা তত্ত্বগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে চাই। এভাবে একদিন হয়তো হকিং বিকিরণের রহস্য উন্মোচন করতে পারব।'
মহাবিশ্বের সমাপ্তি নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। পৃথিবীর বাইরে বসতি গড়তে না পারলে এর অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে মানবজাতি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আজ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন বছর পর সূর্য এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠবে যে সমুদ্রের সব পানি বাষ্পীভূত হয়ে যাবে এবং গ্রহে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে না।
আট বিলিয়ন বছরের মধ্যে সূর্য প্রসারিত হয়ে পৃথিবীকে গ্রাস করে নিবে।
Comments