সাবেকদের বিশ্বাস ব্রাজিলের গর্বের দিন ফেরাবেন আনচেলত্তি

তিন বছরের মধ্যে চারজন কোচ বদল করতে হয়েছে ব্রাজিলকে। বিশ্বকাপের পর কোপা আমেরিকার ব্যর্থতা, ব্যর্থতা বিশ্বকাপ  বাছাইপর্বে। দিশেহারা ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন তীব্র তাগিদ ছিলো কার্লো আনচেলত্তিকে পাওয়ার। ব্রাজিলিয়ের ইতিহাসে প্রথম কোন বিদেশিকে তারা দায়িত্ব দিয়েছে উপায়হীন হয়ে, কোণঠাসা জাতীয় দলকে জাগাতে। ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলাররা এই নিয়োগে আশাবাদের কথাই শুনিয়েছেন। তাদের মতে হয়ত আনচেলত্তির হাত ধরেই ফিরবে পাঁচ বারের বিশ্বসেরাদের সুদিন।

ক্লাব ফুটবলে ইতিহাস আনচেলত্তি সফলতম কোচ। বিশেষ করে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জেতেছেন সম্ভাব্য প্রায় সব ট্রফি। চলতি মাসে ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে যাওয়া এই কোচ  ইংল্যান্ড, স্পেন, জার্মানি, ইতালি এবং ফ্রান্স - ইউরোপের শীর্ষ পাঁচটি লিগের প্রতিটিতে শিরোপা জেতা প্রথম কোচ। গত তিন মৌসুমে রিয়ালকে দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং লা লিগা ডাবল জিতিয়েছেন।

ব্রাজিলের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ খেলা ফেলিপে মেলো এই নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমি খুব খুশি, এবং আমি বিশ্বাস করি না এমন কেউ আছেন যিনি বিশ্বের সেরা কোচের আগমন ঘোষণায় খুশি নন।'

২০২২ বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় তিতে চাকরি ছাড়ার পর থেকে রামোন মেনেজেস, ফার্নান্দো দিনিজ এবং দরিভাল জুনিয়র দলের দায়িত্বে ছিলেন। তাদের কেউই ব্রাজিলকে চাঙ্গা করতে পারেননি। 

১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী এবং জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ কার্লোস দুঙ্গা বলেছেন সবার উচিত আনচেলত্তিকে সাহায্য করা, 'যদি আমরা তিন বছরেরও কম সময়ে চারজন কোচ পরিবর্তন করি, তবে কিছু একটা ঠিকঠাক চলছে না (...) আমার মতে, আনচেলত্তিকে ফল পাওয়ার জন্য আনা হয়েছে, তাই আমাদের তাকে সাহায্য করতে হবে।'

২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টায় ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে ব্রাজিল চতুর্থ স্থানে রয়েছে, ১৪টি ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র ছয়টিতে জিতেছে। আগামী বছরের বিশ্বকাপে এই অঞ্চল থেকে ছয়টি দল যোগ্যতা অর্জন করবে। বিশ্বকাপে নিশ্চিত করা নিয়ে হয়ত বড় শঙ্কা নেই। তবে ব্রাজিল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বিশ্বকাপে যাবে এটা মেনে নেওয়ার মতন না সমর্থকদের কাছে। আনচেলত্তির মাধ্যমে দাপট ফেরাতে চায় সেলেসাওরা।

১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী মাউরো সিলভা বলেছেন, 'বিশ্বের বিভিন্ন ফুটবল স্কুলের একটি বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি তার রয়েছে, এবং আমি মনে করি এটি একটি বড় সম্পদ।'

'ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের জন্য এটি একটি স্পর্শকাতর মুহূর্ত। আমাদের কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তবে সব মিলিয়ে, আমি আশা করি আনচেলত্তি সফল হবেন।'

সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় ফর্মিকা, যিনি সাতটি মহিলা বিশ্বকাপ এবং ব্রাজিলের হয়ে রেকর্ড সাতটি অলিম্পিক গেমসে খেলেছেন, তিনিও আশা করছেন সুদিনের, 'তার হাতে বেশি সময় নেই, তবে আমি আশা করি তিনি এবং তার কোচিং স্টাফ এবং খেলোয়াড়রা যতটা সম্ভব একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন (...) আজকের যা কিছু ঘটছে তা পরিবর্তন করার জন্য আপনার মধ্যে সেই স্পৃহা এবং শৃঙ্খলা থাকতে হবে; আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে এটি সম্ভব।'

আনচেলত্তি ব্রাজিলকে কোথায় নিয়ে যান সময়ই বলে দেবে। ব্রাজিলের বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি সমর্থক এখন তার মুন্সিয়ানার দিকেই তাকিয়ে।

Comments