হেফাজতের দাবির মুখে নরসিংদীতে কলেজশিক্ষককে ওএসডি

হেফাজতে ইসলামের দাবির মুখে নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
নরসিংদী জেলা হেফাজতে ইসলামের গতকাল রোববারের বিক্ষোভ-সমাবেশের পর আজ সোমবার এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাক আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে ওএসডির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে সরাসরি কিছু উল্লেখ নেই। তবে, নাদিরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কারণে যে ওএসডি করা হয়নি, এটাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।'
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশে সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে ওএসডির পাশাপাশি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওএসডির নোটিশ ফেসবুকে আপলোড করে নাদিরা লিখেছেন, 'আমার বাক-স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। একজন নারী হিসেবে এ ঘটনার প্রতিবাদ করছি। তবে, মানুষের অধিকার নিয়ে আমার বাক-স্বাধীনতাকে চেপে রাখা যাবে না।'
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক ও অধিকারকর্মী নাদিরা ইয়াসমিন 'নারী অঙ্গন' অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক। সম্প্রতি উত্তরাধিকার আইন বিষয়ে পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার চেয়ে লেখালেখি করেছেন তিনি।
তার লেখার বিরোধিতা করে নরসিংদীর হেফজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন তাকে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করে।
তারা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে একই দাবিতে স্মারকলিপিও দেয়।
ওএসডি আদেশের পর মন্তব্য জানতে নরসিংদী জেলা হেফাজতে ইসলামীর মহাসচিব মাওলানা ঈসমাইল হোসাইন নূরপুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নাদিরা ইয়াসমিনকে অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু, আমাদের কারও কারও দাবি শুধু বদলি নয়, তাকে চাকরিচ্যুত করা। তবে, নতুন আন্দোলনের কথা আপাতত ভাবছি না, প্রেক্ষাপট পরবর্তী করণীয় ঠিক করে দেবে।'
এদিকে, সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনের নিরাপত্তা ও তাকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তি ও সংগঠনকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৪৭ নাগরিক।
তার নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'মতপ্রকাশের জন্য একজন নারী শিক্ষককে হুমকি, বিক্ষোভ ও চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক। এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।'
Comments