বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আসার ‘বড় এক ফ্যাক্টর’ আছে শমিতের

Shamit Shome
শমিত সোম। ছবি: সংগ্রহ

শমিত সোমের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই কানাডায়। স্বাভাবিকভাবেই আলাপটা শুরু হয়েছিলো ইংরেজিতে। ধারণা ছিল, হামজা চৌধুরীর মতন ইংরেজি ও সিলেটী আঞ্চলিক ভাষায় কথা চলবে। কিন্তু শমিত নিজে থেকেই যখন স্পষ্ট উচ্চারণে বাংলা বলতে থাকলেন, বিস্মিত হতে হলো বৈকি! জামাল ভূঁইয়া এত বছর বাংলাদেশে থেকেও মাতৃভাষায় ঠিক সড়গড় নন, কথা বলেন ভাঙা বাংলায়। হামজা সারল্য মেশানো সিলেটী আঞ্চলিক ভাষা পারেন, তাতে হয়তো আছে মিষ্টতা।

শমিতের টোনেও বিদেশে বসবাসের কিছুটা ঘ্রাণ আছে, তবে একদম প্রমিত বাংলাতেই কথা বলতে পারেন তিনি। বোঝা যায়, তার পরিবারে বাংলার চর্চাটা আছে। সিলেটে শেকড়ের সূত্র ধরে বেশ কিছুদিন ধরেই শমিতের একটা সাক্ষাৎকার চাইছিলাম। বাংলাদেশের ফুটবলে তিনি যুক্ত হচ্ছেন, তার কথা তো শোনা উচিত। পেশাদার ফুটবলের ব্যস্ততায় তার সময় হয়ে উঠছিল না। কিংবা বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে কী বলতে পারেন, সেটা নিয়েও নিজের মনে দোলাচল থাকতে পারে। অবশেষে তার নাগাল পাওয়া গেল। কিছুটা সময় দিতে তিনি রাজী হলেন।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আগামী ১০ জুন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হতে যাচ্ছে কানাডা জাতীয় দলে খেলা শমিতের। এই ম্যাচ খেলতে দেশের উদ্দেশ্যে ফ্লাইটে চড়ার আগে কানাডা প্রিমিয়ার লিগের দল ক্যাভালরি এফসির মিডফিল্ডার কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে। জানিয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামার রোমাঞ্চের কথা, শুনিয়েছেন কানাডার হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা। কোন ভাবনা থেকে কবে তার বাংলাদেশের হয়ে খেলার প্রক্রিয়া শুরু হলো, সেই গল্পও  শুনিয়েছেন।

বাংলাদেশের কয়েকজন ফুটবলারের সঙ্গে তার আগে থেকেই চেনাজানা ছিল, কথা বলেছেন হামজা চৌধুরীকে নিয়ে। নিজে মিডফিল্ডার বলে লুকা মদ্রিচ, টনি ক্রুসদের স্টাইল অনুসরণ করেন শমিত। শৈশব থেকে ভালোবাসেন সেস্ক ফ্র্যাব্রেগাসকে। বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন তারকা কথা বলেছেন ফুটবলের পথচলা নিয়ে, তার পজিশন নিয়ে, সিঙ্গাপুরে ম্যাচে তিনি কোথায় খেলতে পারেন সেই ধারণা দিয়েছেন। কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে কী নিয়ে আলাপ হচ্ছে শেয়ার করেছেন কিছুটা। শমিতের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হবে বুধবারের প্রিন্ট সংস্করণে।

শ্রীমঙ্গলে পৈত্রিক বাড়িতে শৈশবে বেড়াতে আসার নিরালা সময়, অবারিত প্রকৃতির স্নিগ্ধ সান্নিধ্যের স্মৃতি দোলা দিয়ে যায় শমিতকে। তার বাবা মানস সোম পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট), তার মা নন্দিতা সোম সাথির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শমিতের বাবা-মা নব্বই দশকের শুরুতে পাড়ি জমান কানাডায়, থিতুও হয়ে যান ওদেশে। সেখানেই শমিত ও তার একমাত্র বোনের জন্ম-বেড়ে ওঠা। শমিত বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন বলে বাবা-মা রোমাঞ্চিত, তুমুল আগ্রহে অপেক্ষায় দাদা-দাদি। শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকায় আসার পরিকল্পনা করছেন স্বজনরা।

শমিত নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে আসছেন, বাংলাদেশের ফুটবলে অবদান রাখতে চান তিনি। বিশেষ করে এখানকার ফুটবল ভক্তদের ভালোবাসা বেশি  স্পর্শ করেছে তাকে। জানালেন, 'আমি এটার জন্য খুব কৃতজ্ঞ। আমি এই ভালোবাসাটা খুব অনুভব করি, সবাই যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাকে ওয়েলকাম করছে। আমার এখানে আসার পেছনে ওটাও একটা বড় ফ্যাক্টর। আমি তো সাপোর্ট পাচ্ছি বাংলাদেশের ভক্তদের দিক থেকে।'

**শমিত সোমের সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকালের দ্য ডেইলি স্টারের প্রিন্ট সংস্করণে।

Comments