ইরানকে আলোচনার টেবিলে ব্যস্ত রেখে ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র

তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন। ছবি: এএফপি

ইরানের ওপর নজিরবিহীন হামলার আগে ইসরায়েলে গোপনে শত শত হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্রসহ সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসন যখন ইরানের সাথে পারমাণবিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছিল, ঠিক তখনই প্রায় ৩০০টি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট আইকে জানায়, এত বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ এটাই প্রমাণ করে যে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত ছিল।

তবে শুক্রবারের হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের হেলফায়ার বা অন্য কোনো বড় অস্ত্রের চালান পাঠানোর খবর প্রকাশিত হয়নি।

হেলফায়ার হলো লেজার-গাইডেড আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে। একই প্রতিষ্ঠানের তৈরি এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট ব্যবহার করে ইসরায়েল।

হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জন্য খুব কার্যকর না হলেও, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। বিমান থেকে ছোড়া এসব ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং কমান্ড সেন্টারগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং বিপ্লবী গার্ড প্রধান হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। এদের সঙ্গে ছয় জন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইরান।

ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলের এই হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানত। এই মাসের শুরুতেই মিডিল ইস্ট আই জানায়, সিআইএকে এপ্রিল ও মে মাসেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত করা হয়েছিল।

তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্প এমন একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন যে, তিনি নেতানিয়াহুর প্রকাশ্য চাপ সত্ত্বেও হামলার বিরোধিতা করবেন। কিন্তু শুক্রবার মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে দুজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন কেবল হামলার বিরোধিতা করার 'ভান' করছিল, কিন্তু সত্যিকার অর্থে তারা এর বিরোধিতা করেনি।

ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি ইরানকে নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য ৬০ দিনের সময় দিয়েছিলেন। সময়সীমা পার হওয়ার পরদিন অর্থাৎ ৬১তম দিনে হামলা চালায় ইসরায়েল।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানকে কোনো প্রকার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ না করার শর্ত দেওয়ায় আলোচনা ষষ্ঠ দফায় গড়ায়। তবে আগামীকাল রোববার এই আলোচনায় ইরান অংশ নেবে কিনা তা এখন অনিশ্চিত।

দুজন মার্কিন কর্মকর্তা মিডিল ইস্ট আইকে জানান, আলোচনার পুরো সময়জুড়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিল। ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তির অংশ হিসেবে এসব অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন কংগ্রেস এই চুক্তি অনুমোদন করে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has identified overseas assets worth nearly Tk 40,000 crore, accumulated with money laundered abroad from Bangladesh, according to the Chief Adviser’s Office.

1h ago