সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে রেল লাইন, প্রশস্ত হবে যমুনা সেতু

রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ আরও গতিশীল করতে যমুনা সেতু প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নতুন লেন যুক্ত করতে ইতোমধ্যে সিঙ্গেল রেল ট্র্যাক খুলে নিতে কাজ শুরু করেছে রেল বিভাগ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি লাইনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সেতু কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পরিত্যক্ত রেল লাইন সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার থেকে যমুনা সেতুর অব্যবহৃত এ রেল লাইনটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।'
'ইতোমধ্যে রেল লাইনের নাট-বোল্ট খোলার কাজ শুরু হয়েছে, চার দশমিক আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেল লাইনটি সেতু থেকে পুরোপুরি সরিয়ে নিতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে,' বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, লাইন খুলে নেওয়ার পরে রেল ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুসারে অন্য স্থানে ব্যবহার করা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
সে সময় রেল সংযোগ স্থাপনের দাবি উঠলে তৎকালীন সরকার যমুনা সেতুর পাশ দিয়ে অতিরিক্ত একটি সিঙ্গেল লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সাল থেকে এ লাইন দিয়েই ট্রেন চলাচল করতো।
তবে যমুনা সেতুতে ফাটল দেখা দিলে রেলের জন্য পৃথক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার দশমিক আট কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেল সেতুর ওপর দিয়ে চলতি বছরের মার্চ থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলে পুরোনো লাইনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
নতুন সেতু নির্মাণে আগে পুরোনো লাইন ধরে গতি কমিয়ে সেতু পার হতো ট্রেন।
ইতোমধ্যে যমুনা সেতু প্রশস্তকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়ে দেশের সাতটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সেতু বিভাগ জানিয়েছে, সম্ভাব্যতা যাচায়ের কাজ শেষ হলেই প্রশস্তকরণের মূল কাজ শুরু হবে।
যমুনা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৮ দশমিক দুই মিটার প্রশস্ত যমুনা সেতুর প্রায় তিন দশমিক পাঁচ মিটার রেল লাইনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে যান চলাচলের জন্য মাত্র ছয় দশমিক তিন মিটার প্রশস্ত ডাবল লেন চালু রয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুতে, যা আন্তর্জাতিক সড়ক কাঠামোর হিসাবে অত্যন্ত সরু।'
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি ডাবল লেনের জন্য সড়ক কমপক্ষে সাত দশমিক পাঁচ মিটার প্রশস্ত হতে হয়, কিন্তু অপেক্ষাকৃত সরু লেন দিয়েই প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে যমুনা সেতুর যানবাহন চলাচল করছে। যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়।
সেতুটি যখন নির্মাণ করা হয়, তখন ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিন হাজার যানবাহন চলাচল করতো। এখন ২০ থেকে ২২ হাজার যান চলাচল করে। ঈদের সময় যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
Comments