কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ, সড়কে আগুন

কেএমপির সামনে বিক্ষোভ। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ শনিবার দুপুর থেকে তারা কেএমপির সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটা থেকে আন্দোলনকারীরা কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। তারা সড়কের দুই পাশ আটকে স্লোগান দিতে থাকেন। আন্দোলনে খুলনার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে খানজাহান আলী সড়কের সুন্দরবন কলেজ থেকে রূপসা ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা স্লোগানে বলেন, 'সুকান্তের চামড়া, তুলে নেব আমরা', 'পুলিশ কমিশনারের চামড়া, তুলে নেব আমরা', 'দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত', 'জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো', 'পুলিশ কমিশনার জুলফিকার, আস্ত একটা স্বৈরাচার', 'জুলফিকারের চামড়া, তুলে নেব আমরা', 'পুলিশ কমিশনার জুলফিকার এখন হবে চৌকিদার', 'লড়তে হবে, লড়তে হবে—এই লড়াই জিততে হবে'।

বিক্ষোভকারীরা জানান, গত মঙ্গলবার খানজাহান আলী থানা এলাকায় স্থানীয় জনতা উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাশকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। কিন্তু পুলিশ পরে তাকে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার ও বৃহস্পতিবার টানা দুই দিন কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার এবং কেএমপির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপেই এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কমিশনার অপসারণের দাবিতে সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই সময়সীমা শনিবার দুপুর ১২টায় শেষ হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় শনিবার ফের কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে জড়ো হন তারা। এরপর আন্দোলন আরও উত্তপ্ত হয়। বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড দেন। ফলে পুরো এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগর শাখার অন্যতম মুখপাত্র রুমি রহমান বলেন, 'খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রকমের অবনতির দিকে যাচ্ছে। মানুষ নিজেদের সম্পূর্ণ অনিরাপদ মনে করছে। পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা অবিলম্বে তার অপসারণ চাই।'

এদিকে কেএমপি সূত্র জানায়, উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাশকে বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Police: Equipped to inflict heavy casualties

Police arms records show the brutal truth behind the July killings; the force bought 7 times more lethal weapons than non-lethal ones in 2021-23

10h ago