শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেও আলোচনার দরজা খোলা রাখলেন ট্রাম্প

ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা বলা হলেও এ নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার ট্রাম্প জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এপ্রিলে স্থগিত করা শুল্ক ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা চিঠি অনুযায়ী, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ এবং বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে।

ট্রাম্প গত ২ এপ্রিলকে 'লিবারেশন ডে' আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন দেশের আমদানিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে তিনি ৯০ দিনের জন্য তা স্থগিত করেন। সেই মেয়াদ বুধবার শেষ হওয়ার আগেই তিনি নতুন করে এই চিঠি পাঠালেন।

হুমকির সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত

বাণিজ্য নিয়ে কঠোর অবস্থান দেখালেও আলোচনার পথ খোলা রেখেছেন ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক নৈশভোজে সাংবাদিকেরা ১ আগস্টের সময়সীমা চূড়ান্ত কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, 'আমি বলব সময়সীমাটি চূড়ান্ত, তবে শতভাগ নয়।'

চিঠিতে যে শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে সেটাই শেষ কথা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি বলব এটাই চূড়ান্ত। তবে তারা যদি ভিন্ন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসে এবং তা আমার পছন্দ হয়, তাহলে আমরা সেটাই করব।'

ট্রাম্পের এমন দ্বিমুখী অবস্থানে আলোচনার সুযোগ তৈরি হলেও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হয়েছে। তার এই নতুন হুমকির পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও দরপতন হয়েছে। নাসডাক সূচক ০.৯ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়েছে।

মিত্রদের প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

ট্রাম্পের এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই ঘোষণাকে 'অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটনে তার মার্কিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে একটি 'উভয়ের জন্য লাভজনক সমাধান' খুঁজে বের করার আশা প্রকাশ করেছেন।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার বলেছেন, 'ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ অন্যদের কাছে বিপজ্জনক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয়ই অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং দেশ দুটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে।'

তবে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট অবশ্য বলছেন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা বেশ কয়েকটি ঘোষণা দেবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh-US tariff talks underway in Washington

Based on progress made so far, Bangladesh hopes for a positive outcome

3h ago