উত্তরা ট্র্যাজেডিতে শোকাহত বাটলার ও আফঈদা

নেপালের বিপক্ষে দাপুটে জয়, অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। সব মিলিয়ে সোমবার বাংলাদেশের কিশোরীদের জন্য হওয়ার কথা ছিল আনন্দে ভেসে যাওয়ার দিন। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভয়াবহ এক বেদনার ছায়ায় ঢাকা। খেলার মাঠের উল্লাসকে মুছে দিল আকাশ থেকে নেমে আসা এক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি।
ঢাকার উত্তরা এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান কমপক্ষে ২৩ জন। আহত হন আরও ১৭০ জনের বেশি। দুর্ঘটনাস্থল ছিল একটি স্কুলের খুব কাছাকাছি। সেই স্কুলের শিক্ষার্থীরাই এই ভয়াবহতার প্রধান শিকার। এমন এক দিনে যখন জাতি শোকাহত, তখন বিজয়ের উদযাপন যেন হয়ে উঠেছিল নীরব, নিঃশব্দ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান কোচ পিটার বাটলার তার বক্তব্য শুরুই করেন শোক জানিয়ে। তার কণ্ঠে ফুটে উঠেছিল আবেগের ভার, 'সবার আগে আমি, আমরা আজকের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যখন কোনো শিশু বা মানুষ প্রাণ হারায়, তখন উদযাপন মানায় না। আমাদের হৃদয় ও প্রার্থনা তাদের জন্য, যারা মারা গেছেন, যারা আহত হয়েছেন, সেই শিশুদের জন্য।'
শুধু কোচই নন, নেতৃত্বেও আবেগ ছুঁয়ে গেছে দর্শকদের মন। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার জানান, ট্র্যাজেডির খবর শোনার পরই তারা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন এই ট্রফি জিততে হবে, অন্তত একটুখানি স্বস্তি ফিরিয়ে দেওয়ার আশায়।
'আমরা আজকের ম্যাচ খেলতে নেমেছিলাম সেই ভয়াবহ খবর শোনার পর। অনেক স্কুলশিক্ষার্থী আহত বা নিহত হয়েছে বিমান দুর্ঘটনায়। তখনই আমরা ভেবে নিই, এই ট্রফিটা জিততেই হবে, যেন অন্তত কারও মুখে একটু হাসি এনে দিতে পারি,' বলেন আফঈদা।
বাংলাদেশ দলের উদযাপন তাই ছিল সংযত, শ্রদ্ধাভরে মাথা নত করে। উৎসবের রঙ সেখানে মিশে গিয়েছিল কালো শোকের আবরণে। এই জয় চ্যাম্পিয়নরা উৎসর্গ করেছে উত্তরার সেইসব শোকস্তব্ধ পরিবারকে, যারা হারিয়েছেন সন্তান, স্বজন, সহপাঠী কিংবা প্রিয় মুখ।
Comments