কুড়িগ্রাম-রমনা ২৯ কিলোমিটার রেলপথ পাড়ি দিতে আড়াই ঘণ্টা

ছবি: স্টার

মাত্র ২৯ কিলোমিটার রেলপথ। সেই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। কুড়িগ্রামের চিলমারী থেকে জেলা শহর পর্যন্ত রুটি একটি লোকাল ট্রেন প্রতিদিন একবারই চলাচল করে।

যাত্রীদের অভিযোগ, এই ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সময় নেয়। যেখানে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলে ঘণ্টায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার বেগে, সেখানে এই ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার।

সূত্র জানিয়েছে, কুড়িগ্রাম-রমনা রুটে কুড়িগ্রাম, পাঁচপীর, উলিপুর, বালাবাড়ী ও রমনা—এই পাঁচটি স্টেশন থাকলেও কার্যত রেলপথের সেবার মান নাজুক। চিলমারীর রমনা স্টেশনে প্রতিদিন শতাধিক যাত্রী ট্রেনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা
অপেক্ষা করেন।

ষাটোর্ধ্ব মফির উদ্দিন বলেন, 'এক সময় রমনা ছিল ব্যস্ততম স্টেশন। প্রতিদিন তিন জোড়া ট্রেন চলতো। এখন কখনো চলে, কখনো চলে না। তবু অপেক্ষা করি, কারণ ট্রেনই সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যাতায়াতের মাধ্যম।'

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, 'চিলমারী ভাঙনপ্রবণ ও দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা। এখানকার মানুষ অনেকেই কুড়িগ্রাম বা অন্য শহরে গিয়ে দিনমজুরির কাজ করেন। স্বল্প খরচে যাতায়াতের জন্য ট্রেনই তাদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু রেললাইন এতো খারাপ যে, যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।'

তিনি বলেন, 'রেলপথ সংস্কারের একটি প্রকল্প শুরু হলেও, মাঝ পথে থেমে গেছে।'

রেল কর্তৃপক্ষের মতে, চিলমারী-কুড়িগ্রাম রেলপথ পুনর্বাসন ও আধুনিকায়নের জন্য ২০২৩ সালে দুটি পৃথক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কুড়িগ্রাম-উলিপুর ১৯ কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয় ২৯ কোটি টাকা এবং রমনা-উলিপুর ১০ কিলোমিটারে ধরা হয় ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

প্রকল্পের আওতায় মাটি ভরাট, সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণ, নতুন রেললাইন ও স্লিপার বসানো এবং ১২টি সেতু-কালভার্ট সংস্কারের কথা ছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়িয়ে প্রথমে এ বছরের জুন এবং সর্বশেষ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ম্যানেজার রুবেল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আর্থিক সংকটে ভুগছি। রেলওয়ে এখনো আমাদের কাজের অর্ধেক বিল দেয়নি। ফলে প্রয়োজনীয় মালামাল কিনতে পারছি
না, কাজও এগোচ্ছে না।'

তিনি জানান, কুড়িগ্রাম-উলিপুর অংশে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও রমনা-উলিপুর অংশে কাজ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ।

'আমরা যদি সম্পূর্ণ বিল পেতাম, তাহলে দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হতো,' বলেন রুবেল।

লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী শিপন ইসলাম বলেন, 'ঠিকাদার আর্থিক সংকটে থাকায় প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি। আমরা উপরের দপ্তরে জানিয়েছি যাতে বিল অনুমোদন হয়।'

তিনি বলেন, 'চেষ্টা চলছে যাতে চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।'

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

3h ago