নির্বাচনে অংশগ্রহণ বেআইনি না, নৈতিক ভুল হয়ে থাকলে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই: চুন্নু

দলের অতীত 'নৈতিক ভুলের' কারণে দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুল হক চুন্নু।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েল কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ কথা বলেন।
চুন্নু বলেছেন, 'রাজনীতি করতে গিয়ে আমরা সব সময় হয়তো দলীয় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আমরা বিগত অনেকগুলো নির্বাচন করেছি। অনেক সময় অনেকে আমাদের বিভিন্নভাবে কটূক্তি করেন, বিভিন্ন দলের সহযোগী বা স্বৈরাচার সহযোগী হিসেবে আমাদের আখ্যায়িত করেন।'
'আমি মনে করি, আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে কোনো বেআইনি কাজ করিনি। যদি নৈতিকভাবে কোনো ভুল হয়ে থাকে, কোনো ভ্রান্তি হয়ে থাকে, তাহলে এই কাউন্সিলে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাই,' বলেন তিনি।
এই জাপা নেতা আরও বলেন, 'গত প্রায় চার বছর আমি জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে ছিলাম। ভুলভ্রান্তি আমার থাকতে পারে। যেসব ভুল-ভ্রান্তি ছিল, সেগুলো আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।'
সারা দেশ থেকে আসা প্রায় দুই হাজার কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হন।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে জাতীয় পার্টির নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম জহির নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের নাম ঘোষণা করেন।
নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন—মোস্তফা আল মাহমুদ ও মো. আরিফুর রহমান খান।
এছাড়া, কাজী ফিরোজ রশীদ সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কথা উঠছে। কিন্তু কীভাবে নির্বাচন হবে, আদৌ হবে কি না জানি না। তাছাড়া, দেশে এখন যে পরিবেশ বিরাজ করছে, তাতে নির্বাচন কী দরকার! বড় দুই দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে নিলে নির্বাচনের খরচ বাবদ দুই হাজার কোটি টাকা বেঁচে যায়।
তিনি বলেন, সারা দেশে দখলবাজি চলছে। কোনো কিছুতে নিয়ম-কানুনের বালাই নেই। এসব বন্ধ করতে সরকারের দৃশ্যমান উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সবাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। কিন্তু ক্ষমতায় যারা থাকে, তাদের দুর্নীতি চোখে পড়ে না। ক্ষমতা থেকে গেলেই দুর্নীতির মামলা হয়, আবার ক্ষমতায় আসলে দুর্নীতির মামলা উঠে যায়।
ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি, বলেন তিনি।
জাতীয় পার্টিকে তৃণমূলের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন রুহুল আমিন হাওলাদার।
তিনি বলেন, জনগণের আশা ও অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জাতীয় পার্টি রাজপথে থাকবে। আমরা দেশের মানুষকে নতুন পথ দেখাতে চাই। জাতীয় পার্টি এখন শুধু বিরোধী শক্তি নয়, আমরা হয়ে উঠতে চাই জাতির বিকল্প নেতৃত্ব।
Comments