১৭ বছর পর ডারউইনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ, ১৭ রানে জিতল অস্ট্রেলিয়া

মাত্র ৭৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভীষণ ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া। টিম ডেভিডের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা পেল লড়াইয়ের পুঁজি। এরপর বল হাতে আলো ছড়ালেন জশ হ্যাজলউড ও বেন ডোয়ার্শিস। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
রোববার ডারউইনের মারার ওভালে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানে জিতেছে অজিরা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৮ রানে অলআউট হয় দলটি। জবাবে পুরো ওভার খেলে প্রোটিয়ারা করতে পারে ৯ উইকেটে ১৬১ রান।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর ডারউইনে অনুষ্ঠিত হলো কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহরের ভেন্যুটিতে চারটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট হয়েছিল। সবগুলো ওয়ানডে ও একটি টেস্টে স্বাগতিক দলের প্রতিপক্ষের নাম ছিল বাংলাদেশ। বাকি টেস্ট ম্যাচটি তারা খেলেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
কাগিসো রাবাদা ও কিওনা মাফাকার তোপে একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল অজিরা। তবে পাঁচে নামা ডেভিডের ভাবনা ছিল একেবারে ভিন্ন। পাল্টা আক্রমণে ৮৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। ৫২ বল মোকাবিলায় মারেন চারটি চার ও আটটি ছক্কা।
চতুর্থ ওভারে ডেভিড যখন ক্রিজে যান, তখন অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৩ উইকেটে ৩০। এরপর চতুর্থ উইকেটে তার সঙ্গে ক্যামেরন গ্রিনের জুটি ছিল ১৬ বলে ৪০ রানের। তারপর আবার ঘটে বিপর্যয়। স্কোরবোর্ডে ৫ রান যোগ হওয়ার মধ্যে সাজঘরে ফেরেন গ্রিন, মিচেল ওয়েন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
টেলএন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে ডেভিড এরপর নিজের কাঁধে তুলে নেন দায়িত্ব। সপ্তম উইকেটে ডোয়ার্শিসের সঙ্গে ৪২ বলে ৫৯ ও অষ্টম উইকেটে ন্যাথান এলিসের সঙ্গে ২৩ বলে ৩০ রান যোগ করেন। দলকে তিনি পাইয়ে দেন চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।
২৯ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করা ডেভিড অবশ্য ভাগ্যের সহায়তাও পান। ৫৬ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর ৮৩ রানেও জীবন পান একই কায়দায়। পরের বলেই যদিও থামতে হয় তাকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান আসে গ্রিনের ব্যাট থেকে। বিদায় নেওয়ার আগে উত্তাল ব্যাটিংয়ে ১৩ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে মাফাকা ৪ উইকেট শিকার করেন ২০ রানে। ২ উইকেট নিতে রাবাদার খরচা ২৯ রান। একটি করে উইকেট পান লুঙ্গি এনগিডি, জর্জ লিন্ডা ও সেনুরান মুথুসামি।
রান তাড়ায় ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারালেও রায়ান রিকেলটন ও ট্রিস্টান স্টাবস প্রোটিয়াদের আশা দেখান। চতুর্থ উইকেটে তারা আনেন ৫২ বলে ৭২ রান। কিন্তু হ্যাজলউড এই জুটি ভাঙলে লাগে মড়ক। ১০ বলে ৩ রানের মধ্যে ৪ উইকেটের পতন ঘটে। ১৫তম ওভারে হ্যাজলউড ও ১৬তম ওভারে অ্যাডাম জ্যাম্পা ধরেন জোড়া শিকার।
ম্যাচের শেষ ওভারে হাতে ৩ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের দরকার ছিল ২১ রান। ডোয়ার্শিস স্রেফ ৩ রান দেওয়ার পাশাপাশি রিকেলটন ও রাবাদাকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন। ওপেনার রিকেলটন ৫৫ বলে সাতটি চার ও একটি ছয়ে করেন ৭১ রান। স্টাবস খেলেন পাঁচটি চারের সাহায্যে ২৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংস।
ডোয়ার্শিস ৩ উইকেট নেন ২৬ রানে। সমান সংখ্যক উইকেট পেতে হ্যাজলউডের খরচা ২৭ রান। জ্যাম্পা ৩৩ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন। বাকি উইকেটটি যায় ম্যাক্সওয়েলের ঝুলিতে।
Comments