পুতিনের সঙ্গে বৈঠক

ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে আলাস্কা আসিনি: ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বৈঠকে অংশ নিতে ইতোমধ্যে আলাস্কার পথে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেন চুক্তির মধ্যস্থতা করার জন্য আলাস্কা যাননি। বরং, তার লক্ষ্য পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনা।

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কারেজ শহরের এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন জয়েন্ট বিমানঘাঁটিতে বৈঠকে বসবেন দুই প্রেসিডেন্ট।

আজ শুক্রবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধে চুক্তির পক্ষ হিসেবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এই ভাবনাকে স্বাগত জানান, কিন্তু ইউরোপকে এর নেতৃত্ব দিতে হবে।

'এ ধরনের পদক্ষেপের মধ্যে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান করানো অন্তর্ভুক্ত থাকবে না,' স্পষ্ট করেন বলেন ট্রাম্প।

'আমি ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য এখানে আসিনি,' বলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বহনকারী এয়ার ফোর্স ওয়ানের বিমানটি ইতোমধ্যে আলাস্কার উদ্দেশে এয়ারবেস অ্যান্ড্রুজ ছেড়েছে।

স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় তারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন। হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, রাত পৌনে ১০টায় ট্রাম্প ওয়াশিংটন ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রায় চার বছর পর দুই শক্তিধর দেশের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হতে চলেছে। এই বৈঠককে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য প্রত্যাশার চাপ। তবে যুদ্ধ অবসান নিয়ে মস্কো, কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের চিন্তা ভিন্ন বলেই মনে হচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, 'আমি আমাকে ভালো থাকতে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছি না। আমার এটা প্রয়োজন নেই।'

'আমি আমার দেশের বিষয়ে মনোযোগ দিতে চাই। তবে আমি অনেক জীবন বাঁচানোর জন্য এটি করছি,' বলেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, 'পুতিন যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হন, তবে রাশিয়ার শাস্তি পেতে হবে।'

'হ্যাঁ, এটি খুব গুরুতর হবে,' মস্কোর ওপর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য আলাস্কা যাওয়ার পথে পুতিনের সঙ্গে তার সুসম্পর্কের বিষয়টি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন, 'আমি লক্ষ্য করেছি যে তিনি (পুতিন) রাশিয়া থেকে অনেক ব্যবসায়ীকে নিয়ে আসছেন। এটা ভালো। আমি এটা পছন্দ করেছি, কারণ তারা ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু যুদ্ধ নিয়ে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা ব্যবসা পাচ্ছে না।'

রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করবেন কি না, জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, 'যদি আলোচনায় অগ্রগতি অর্জন করি, তাহলে আমি এটি নিয়ে আলোচনা করব। কারণ এটি তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর একটি। আমি অর্থনীতিকে যেভাবে গঠন করেছি, তার একটি অংশ তারা পেতে চায়।'

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন আলাস্কায় আজকের শীর্ষ সম্মেলন থেকে 'কিছু প্রাপ্তি' আসবে।

এদিকে, এ শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়া তার একটি স্পষ্ট অবস্থান উপস্থাপন করতে প্রস্তুত, যা মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর আলোকপাত করবে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ কথা জানিয়েছেন বলে দেশটির গণমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

শুক্রবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে লাভরভ অবশ্য শীর্ষ সম্মেলনের সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে অনুমান করতে রাজি হননি।

তিনি ইতোমধ্যে আলাস্কা পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।

লাভরভ বলেন, 'আমরা আগে থেকে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করছি না। আমরা জানি আমাদের কিছু যুক্তি আছে। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। আমরা সেগুলো উপস্থাপন করব।'

ট্রাম্প যখন আলাস্কা যাচ্ছেন তখন পুতিন সেখানে পৌঁছে গেছেন। এর আগে তিনি রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের শহর মাগাদানে ছিলেন। সেখানে তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, মাগাদানে পুতিন একটি স্থানীয় শিল্প কারখানা পরিদর্শন করেন।

মস্কো থেকে মাগাদানে উড়োজাহাজে যেতে প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। সেখান থেকে আলাস্কা যেতে আরও ৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক প্রসঙ্গে অবশ্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ধারণা, পুরো আলোচনার ফলাফল 'নির্ভর করবে' যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।

এ বৈঠককে তিনি পরবর্তীতে একটি 'ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের' সম্ভাবনার পথ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, 'এই বৈঠকটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি বাস্তবসম্মত পথ এবং ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া ত্রিপক্ষীয় বাস্তব আলোচনার পথ খোলার একটি প্রক্রিয়া।'

'যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে এবং রাশিয়াকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করছি,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Trump meets Putin in Alaska summit

Donald Trump and Vladimir Putin were scheduled to hold talks in Alaska yesterday, focused on the US president’s push to seal a ceasefire deal on Ukraine but with a last-gasp offer from Putin of a possible face-saving nuclear accord on the table too.

1h ago