এবারের বর্ষা কেন আলাদা, কেমন থাকবে আগস্টের বাকি দিনগুলো

আপাতত সারা দেশেই বৃষ্টি কম থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে মাসের শেষে আবারও বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে। কারণ সাগরে আরও একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আজ সোমবার আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশে পাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা ধারণা করছি, ২৭ আগস্ট লঘুচাপটি সৃষ্টি হতে পারে।'
'আগামী কয়েকদিন সারা দেশেই বৃষ্টি কম থাকবে। লঘুচাপটি যদি ঘনীভূত হয় বা স্থলভাগে উঠে আসে, সে ক্ষেত্রে আবারও বৃষ্টি বাড়বে,' বলেন তিনি।
নাজমুল আরও বলেন, 'খুব বেশি বৃষ্টি হয়তো হবে না। আমরা মনে করছি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটারের (ভারী বৃষ্টি) মধ্যেই থাকবে। উপকূলীয় এলাকায় কিছুটা বেশি হতে পারে।'
টানা কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর অব্দি বিরতিহীন ঝরছে বৃষ্টি, কখনো কালো মেঘ বিকেলে নামিয়ে আনছে সন্ধ্যা, কোনো কোনো দিন এই রোদ তো এই বৃষ্টি—গত কয়েক বছরে এমন অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে।
নদী-নালা, খাল-বিল, ভরে টইটুম্বুর। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এবারের বর্ষা 'আলাদা' কিংবা 'অস্বাভাবিক' নয়, বরং এটাই বর্ষার স্বাভাবিক রূপ।
প্রতিবছরই বৃষ্টিপাতের কিছুটা বিচ্যুতি দেখা যায়, তবে গত কয়েক বছর অস্বাভাবিকের বৃষ্টি ছিল বেশ কম, বলেন তারা।
সাধারণত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। অক্টোবরের শুরুতে মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বিদায় নেয়।
পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাসে ২১ দিন বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক। সেখানে এবার ২৫ দিনে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত হয়, সেটা অন্যান্য বছরের মতোই ছিল। তবে সাগরে সৃষ্ট একাধিক লঘুচাপের প্রভাবে এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির আজ সোমবার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জুলাই মাসে ৭, ১৪ ও ২৪ তারিখে তিনটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। যার প্রভাবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়।'
৮ জুলাই ফেনীতে দেশের সর্বোচ্চ ৩৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
'খুলনা ও বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। খুলনায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৮২ দশমিক নয় শতাংশ ও বরিশালে ৬৪ দশমিক দুই শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যেটা হয়, সাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হলে উপকূলীয় এলাকায় বেশি বৃষ্টি হয়,' বলেন কবির।
পরিসংখ্যান অনুসারে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে প্রায় আট শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। রংপুরে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল সবচেয়ে কম—৩৮ দশমিক এক শতাংশ। আবহাওয়া অধিদপ্তর ২১ দিন বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক বিবেচনা করলেও এই বিভাগে ১৯ দিন বৃষ্টি হয়েছে।
Comments