ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স: ২০১৬ সালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেল সরকার

রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ও জ্যেষ্ঠতার ক্রম নির্ধারণকারী 'ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স' নিয়ে ২০১৬ সালের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নতুন করে আপিলের সুযোগ পেল সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ সরকারের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং একই সঙ্গে আপিলের শুনানির জন্য আগামী ৪ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন।
বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ এই বিষয়ে দেওয়া রায় চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
বর্তমানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ১৯৮৬ সালে প্রণীত এবং ২০০৮ সালে সংশোধিত বিদ্যমান ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স অনুযায়ী যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
সংসদের স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতি যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ অবস্থানে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর প্রধানরা এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে ১২তম স্থানে রয়েছেন।
একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, হাইকোর্ট ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বিদ্যমান ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে এবং সরকারকে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের জন্য একটি নতুন ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স জারি করার এবং জেলা জজ এবং সমমানের বিচারিক কর্মকর্তাদের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান এবং সরকারি সচিবদের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে সরকার আপিল করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল নিষ্পত্তির পর আপিল বিভাগ একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন।
পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর আপিল বিভাগ পূর্ণাঙ্গ রায়ে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে এবং জেলা জজদের মর্যাদা সরকারি সচিবদের সমতুল্য করে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধনের নির্দেশ দেয়। রায়ে আরও বলা হয়, প্রধান বিচারপতির পদমর্যাদা স্পিকারের সমতুল্য হওয়া উচিত।
২০১৭ সালে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান এই রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন।
পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলকে (এএজি) রিভিউ পিটিশনে পক্ষ করা হয়।
আদালতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন দোলন। ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং রিট আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নিহাদ কবির শুনানি পরিচালনা করেন।
Comments