রাখাইনে করিডোর বাংলাদেশের ভেতর দিয়েই কেন?

স্টার ফাইল ছবি

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য বিপন্ন জাতিগোষ্ঠীর জন্য 'মানবিক সহায়তা' পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যে একটি চ্যানেল বা করিডোর তৈরি করা হবে, তার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমানের আলোচনায় 'হিউম্যানিটারিয়ান চ্যানেল' বা মানবিক করিডোরের বিষয়টি প্রথমে উত্থাপিত হয়। এ বিষয়ে খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আরাকান আর্মি, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মিয়ানমার সরকার- সবার সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে গিয়েছিলেন। তার ভাষায়, 'জাতিসংঘ মহাসচিবকে আমরা বলেছি, রাখাইনে যে মানবিক সমস্যা, যে সংকট সেটা মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিকল্প নেই। সেই কাজটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেই হবে।'

এর এক মাস পর গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে আসেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এসময় তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে যৌথ সম্মেলনে বলেছিলেন, মিয়ানমারে লড়াই বন্ধ ও সেখানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারের সমস্ত প্রতিবেশী দেশের চাপ বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। এর প্রথম ধাপ হবে সহিংসতা বন্ধ করা এবং একইসঙ্গে এমন কার্যকর ব্যবস্থা গঠন করা, যা মিয়ানমারে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাধানের পথ সুগম করবে- যা স্বাভাবিকভাবেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনকে সহজ করবে।

তার বক্তব্যে দুটি বিষয় খুব স্পষ্ট ছিল; ১. আরাকান আর্মি একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ যেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং ২. রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে যেন বাংলাদেশ একটি চ্যানেল (করিডোর) তৈরি করে।

যদিও এই সংবাদ সম্মেলনের পরদিনই সমকালের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল: রাখাইনে মানবিক করিডোর ইস্যুতে ধীরে চলবে ঢাকা। খবরে বলা হয়, জাতিসংঘ মনে করছে, রাখাইনে মানবিক সহায়তা না পাঠানো হলে সেখানে থাকা বাকি জনগোষ্ঠীর খাদ্য অনুসন্ধানে প্রতিবেশী দেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। আর এবার শুধু রোহিঙ্গারাই নয়, রাখাইনের বাকি জনগোষ্ঠীরও প্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। করিডোরটিকে মানবিক ক্ষেত্রে ত্রাণ পাঠানোর জন্য চিহ্নিত করা হলেও এটি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেখানে আরাকান আর্মিকে কোণঠাসা করতে সব সরবরাহ আটকে দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার; সেখানে বাংলাদেশ হয়ে যে ত্রাণ যাবে, তা রাখাইনের বেসামরিক নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে, নাকি আরাকান আর্মি সেগুলো দখলে নেবে– তার নিশ্চয়তা ঢাকার কাছে নেই। (সমকাল, ১৭ মার্চ ২০২৫)।

এর অর্ধ মাস পর গত ৮ এপ্রিল খলিলুর রহমানকে উদ্ধৃত করেই গণমাধ্যমে বলা হয়, রাখাইনে 'মানবিক সহায়তার চ্যানেল' হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, 'এই জায়গা থেকে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। আমি এটুকু বলতে পারি, আমাদের চেষ্টায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। আমরা চেষ্টা করব, যাতে মানবিক সাহায্য প্রদান প্রক্রিয়াতে আরাকানে একটা স্থিতির অবস্থা আসে, শান্তির অবস্থা আসে এবং সেখান থেকে আরাকান তার নবসূচনা করতে পারে।' (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ০৮ এপ্রিল)।

প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসে খলিলুর রহমান যখন জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলাপ করেন তখন তিনি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি। আর যেদিন (৮ এপ্রিল) বললেন যে, রাখাইনে 'মানবিক সহায়তার চ্যানেল' হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ—তার পরদিনই তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সবশেষ গত ২৭ এপ্রিল বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গৃহযুদ্ধে পর্যুদস্ত রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের কাছে জাতিসংঘ 'করিডোর' দেওয়ার যে অনুরোধ জানিয়েছিল, তাতে অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। তবে এখানে কিছু শর্ত রয়েছে। তিনি শর্তগুলো বলেননি। তার ভাষায়, 'শর্ত পালিত হলে আমরা অবশ্যই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।' করিডোর বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, 'মালপত্র যাওয়ার ব্যবস্থা; অস্ত্র নেওয়া হচ্ছে না।'

প্রশ্ন হলো, মালপত্র নেওয়ার এই করিডোর আর কী কী কাজে ব্যবহৃত হবে; মালপত্রের আড়ালে অন্য কিছু নেওয়া হবে কি না—সে বিষয়ে তিনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন? এ নিয়ে সংশয় রয়েছে বলেই করিডোর ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করছে বিএনপি ও জামায়াত। সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ে গণসংযোগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'রাখাইনে করিডোর ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারের উচিত ছিল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা।' তিনি বলেন, 'রাখাইনে বিপন্ন জাতিগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দিতে বিএনপির আপত্তি নেই। কিন্তু এটি হতে হবে সব মানুষের সমর্থনে।' ফখরুল বলেন, 'বিএনপি এই অঞ্চলে গাজার মতো আরেকটি পরিস্থিতি দেখতে চায় না।' অন্যদিকে, করিডোরের বিষয়টি পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানও। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ বিষয়টি জাতির সামনে স্পষ্ট করা দরকার। কারণ এর সঙ্গে অনেক নিরাপত্তা বিষয় জড়িত থাকতে পারে।'

তার মানে দেশের অন্যতম প্রধান দুটি দল—যারা অভ্যুত্থানের পরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের অন্যতম প্রধান স্টেকহোল্ডার—তারাও করিডোরের কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রশ্ন হলো, এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই একটি অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার কেন এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলো? জাতিসংঘ চেয়েছে বলে? জাতিসংঘ সবসময় কি বাংলাদেশের কল্যাণে কাজ করবে? জাতিসংঘ কি এই অঞ্চলে নতুন কোনো রাষ্ট্র গঠন বা কোনো একটি দেশে বা দেশের সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হলে তার দায় নেবে? জাতিসংঘ যে মানবিক সংকটের কথা বলছে, তারা কি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানবাধিকারের প্রশ্নে সরব? 

রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য করিডোর দিলে নিরাপত্তার প্রশ্নের বাইরেও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের কী লাভ সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশের আলটিমেট লক্ষ্য যদি হয় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো, সেটি কি এই করিডোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে অর্জিত হবে?

করিডোর হলেই কী লাভ?

১. করিডোর ঘোষণা করা হলেও সেটি বাস্তবায়ন তথা সাফল্য নির্ভর করবে জাতিসংঘের ওপর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন মানবিক ও উন্নয়ন সহযোগিতায় বরাদ্দ কমিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ও রাখাইনে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জন্য জাতিসংঘ পর্যাপ্ত তহবিল পাবে কি না, সেটি বিরাট চিন্তার বিষয়। যদি পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকে, তাহলে করিডোর খুলেও কোনো লাভ হবে না।

২. রাখাইনে জাতিসংঘ যে মানবিক সহায়তা (প্রধানত খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী) পাঠাতে চায়, সেগুলো মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে রাখাইনে পৌঁছানো যেহেতু কঠিন, তাই সহজ পথ হিসেবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে তারা পণ্য পাঠাতে চায়। প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের স্থলপথই কি একমাত্র উপায়?

৩. গত সোমবার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার একটি খবরে বলা হয়েছে, দেশের ভেতর রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া এবং একইসঙ্গে মিয়ানমারে জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মি ছাড়াও মিয়ানমারে প্রভাব আছে- এমন আঞ্চলিক সব পক্ষ একমত না হলে প্রস্তাবিত করিডোরটি বাংলাদেশের জন্য সামরিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তারা মনে করেন, জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো মানবিক করিডোরের জন্য বাংলাদেশের বিকল্প হিসেবে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দর ছাড়াও বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমার উপকূলের অনেক জায়গাই ব্যবহার করতে পারে। (বিবিসি বাংলা, ২৮ এপ্রিল ২০২৫)। সুতরাং সেই পথে না গিয়ে জাতিসংঘ কেন বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে করিডোর চায়— সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

৪. করিডোর দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার তথা রাখাইনে ফেরত পাঠানো যাবে—তার কি কোনো সম্ভাবনা রয়েছে? কেননা রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় পরিচয় মুসলিম বলে আরাকান আর্মি তাদের ওউন করে না। বরং তারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি মুসলিম হিসেবে বিবেচনা করে। যারা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই মনে করে না, তারা এই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সহায়তা করবে, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। উপরন্তু মিয়ানমার সরকারও ঠিক একই কারণে রোহিঙ্গাদের উৎখাত করেছে। অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির দৃষ্টিভঙ্গিতে খুব বেশি ফারাক নেই।

৫. জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কি মনে করছে যে, স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামরত আরাকান আর্মিকে সহযোগিতার বিনিময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হবে? সেক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের ভূমিকা কী হবে? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, এই ইস্যুতে চীনের ভূমিকা কী হবে? মনে রাখতে হবে, এই অঞ্চলের তিনটি বৃহৎ শক্তি ভারত, চীন ও মিয়ানমার চরমভাবে মুসলিমবিদ্বেষী। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। চীনও তাই। মিয়ানমার তো বটেই। উপরন্তু রাখাইনসহ মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে চীনের বিনিয়োগ এবং ভূরাজনৈতিক কৌশলের কারণে তার নানাবিধ স্বার্থ সেখানে রয়েছে। ফলে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ার ফলে রাখাইনে আরাকান আর্মির স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতা আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত চীন কতটুকু সমর্থন দেবে—সেটি অনেক হিসাব-নিকাশের বিষয়। ফলে রাখাইনে মানবিক সহায়তার জন্য করিডোর দিলেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হয়ে যাবে, বিষয়টি এত সহজ নয়।

৬. করিডোর তৈরি করে অনেক সময় মূল সমস্যার সমাধান এড়িয়ে যাওয়া হয়। বাস্তব সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে মানবিক করিডোরকে অস্থায়ী সমাধান হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়। তৃতীয় কোনো পক্ষ সেখান থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে।

৭. অনেকে মনে করেন, প্রায় ১৩ লাখ বা তারও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যেমন সারা পৃথিবীতে মানবতার উদাহরণ দেখিয়েছে, একইভাবে এখন রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য করিডোর খুলে দিলে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আরও সম্মানিত হবে। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের ব্যাপারে উন্নত দেশগুলোর সহানুভূতি ও সমর্থন বাড়বে। মানবিক করিডোর পরিচালনায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশগুলোর কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা ও অনুদান পাওয়ার সুযোগও হয়তো তৈরি হবে। করিডোরের মধ্য দিয়ে রাখাইনের পরিস্থিতি যদি উন্নত করা যায়, তাহলে সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু একইসঙ্গে এটিও মনে রাখতে হবে যে, করিডোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিজেই কোনো ঝুঁকিতে পড়ে যাবে কি না। বিশেষ করে করিডোরকে যদি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে।

৮. রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য করিডোর দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত একটি প্রক্সি ওয়ারে জড়িয়ে যাবে কি না—সেই প্রশ্নও রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এবং বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হবে কি না এবং সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য আরেকটা বিপদ তৈরি হবে কি না, সেটিও ভেবে দেখা দরকার।

পরিশেষে…

করিডোর অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। অবশ্যই মূলধারার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যেসব শর্তের কথা বলেছেন, সেগুলো পরিষ্কার করা দরকার। করিডোর কোথায় হবে, সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ কী, ব্যবস্থাপনা কী হবে এবং সেখানে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ কতটুকু থাকবে—ইত্যাদি বিষয় খুব খোলাসা করে জাতিকে জানাতে হবে। না হয় এই ইস্যুতে কোনো জটিলতা তৈরি হলে বা সত্যি সত্যিই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের কোনো প্রশ্ন দেখা দিলে তার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।


আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক

Comments

The Daily Star  | English

Tax officials protest at NBR headquarters over draft revenue law

Several hundred tax and customs officials staged a demonstration at the National Board of Revenue (NBR) headquarters in Dhaka today, demanding revisions to a draft ordinance that proposes dividing the board into two separate divisions and allowing top appointments from outside the revenue cadre.

19m ago