খুলনা সিটি নির্বাচন: ৩১ বর্তমান কাউন্সিলরের ১৬ জন পরাজিত

বিজয়ীদের কাতারে বিএনপির কোনো প্রার্থীই নেই। এবার ১৬ জন নতুন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, আর ১৫ জন আগের অবস্থান ধরে রেখেছেন।  
খুলনা সিটি নির্বাচন: ৩১ বর্তমান কাউন্সিলরের ১৬ জন পরাজিত
ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

এবার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পদ হারিয়েছেন অর্ধেকেরও বেশি বর্তমান কাউন্সিলর। দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর হিসেবে থাকা কয়েকজন দাপুটে কাউন্সিলরও রয়েছেন এ তালিকায়। এ ছাড়া একটি বাদে সবগুলো ওয়ার্ডে জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই।  

খুলনা সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে ৩১টি। গতবার নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই ছিল বিএনপির প্রার্থী। সেবার কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ১৩ জন, বিএনপির ৯ জন ও অন্যান্য ৯ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন।

দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এবার বিএনপির ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩ জন বর্তমান কাউন্সিলর।

বিজয়ীদের কাতারে বিএনপির কোনো প্রার্থীই নেই। এবার ১৬ জন নতুন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, আর ১৫ জন আগের অবস্থান ধরে রেখেছেন।  
 
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন ২ আওয়ামী লীগ নেতা। তারা হলেন- ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এস এম খুরশিদ আহম্মেদ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেড এ মাহমুদ। বাকি ২৯টির মধ্যে ২৮টিতে আওয়ামী লীগ এবং শুধুমাত্র ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। 

নির্বাচিত অন্যরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি এবার বিজয়ী হতে পারেননি। সেখানে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাদাত মিনা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. সাইফুল ইসলাম পরাজিত হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মনিরুজ্জামানের কাছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য মো. আবদুস সালাম আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা মো. কবির হোসেন মোল্লা। ওই ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোহাম্মদ আলী এবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ এবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদের জায়গা নিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শেখ খালিদ আহম্মেদ। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এইচ এম ডালিম পরাজিত হয়েছেন যুবলীগ নেতা মো. সাহিদুর রহমানের কাছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এম ডি মাহফুজুর রহমান আবারও বিজয়ী হয়েছেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী তালাত হোসেনের জায়গা নিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শরীফুল ইসলাম। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মুন্সী আবদুল ওয়াদুদ পরাজিত হয়েছেন। ওই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন যুবলীগ নেতা মো. নাইমুল ইসলাম। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের জায়গা নিয়েছেন শফিকুল ইসলাম।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ মোসারাফ হোসেন এবার নির্বাচন করেনি। ওই ওয়ার্ড থেকে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মফিজুর রহমান। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলাম। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ছিলেন মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস। ওই ওয়ার্ডে জিতেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান ইফতেখার। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ হাফিজুর রহমান এবারও বিজয়ী হয়েছেন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান নির্বাচন করেননি। ওই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগ নেতা এস এম রাজুল হাসান। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন বিএনপি নেতা আশফাকুর রহমান। তিনি দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। তবে জিততে পারেননি। ওই ওয়ার্ডে জিতেছেন মহানগর শ্রমিক লীগ নেতা মো. জাকির হোসেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য শেখ মো. গাউসুল আযম আবারও নির্বাচিত হয়েছেন।

২১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. শামসুজ্জামান মিয়া পরাজিত হয়েছে, সেখানে জিতেছেন যুবলীগ নেতা ইমরুল হাসান। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী আবুল কালাম আজাদ আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ইমাম হাসান চৌধুরী আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. আলী আকবর আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. গোলাম মাওলা আবারও জয় পেয়েছেন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম রফিউদ্দিন আহমেদ। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আজমল আহমেদের জায়গায় জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হাসান। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির মো. সাইফুল ইসলাম এবারও জয় পেয়েছেন।

এ ছাড়া ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মহানগর আওয়ামী লীগ সদস্য এস এম মোজাফফর রশিদী। এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য আরিফ হোসেন।

 

Comments