ইশরাকের শপথের ব্যবস্থা না করলে বড় আন্দোলন হতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ

আদালতের রায়ে মেয়র নির্বাচিত ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে দ্রুত শপথ গ্রহণ করানো না হলে, ঢাকার চলমান আন্দোলন আরও বড় হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ সোমবার বিকেলে সিলেট নগরীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, 'ঢাকায় কয়েকদিন ধরে জনগণ নগর ভবন তালাবদ্ধ করে রেখেছে, চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করে রেখেছে এবং আলটিমেটাম দিয়েছে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে। আদালতের রায়ে মেয়র ঘোষিত হয়েছেন ইশরাক। নির্বাচন কমিশন আদালতের রায় মেনে যার নামে গেজেট প্রকাশ করেছে, তাকে আপনারা শপথ গ্রহণ করাবেন না, বিভিন্ন ইস্যু করছেন। তাহলে এটা আইনের শাসন হলো?'
তিনি আরও বলেন, 'ইউনুস সাহেব ও তার কমবয়সী উপদেষ্টারা মনে করছেন তারা আইন মানবেন না, কোর্টের আদেশ মানবেন না, ইলেকশন কমিশনের গেজেট নোটিফিকেশনকে তোয়াক্কা করবেন না। তাহলে গণতন্ত্রের বিপরীতে আপনাদের যাত্রা শুরু হলো।'
'আমরা সবসময় আপনাদের সহযোগিতা করেছি। এই সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার মানে এই না যে আমরা দস্তখৎ দিয়েছি, আপনাকে যা করবেন তাই সহ্য করব,' বলেন এই বিএনপি নেতা।
সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমি আহ্বান করছি অতি অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আদালত ঘোষিত ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় ঢাকার এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আরও বৃহৎ আন্দোলন হতে পারে।'
বক্তব্যে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, 'ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি চিরতরে বন্ধ করতে হলে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বসেছি—কীভাবে বিচার বিভাগের, প্রশাসনের কিংবা অন্যান্য খাতের সংস্কার হবে, কীভাবে বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারবে এবং সাংবিধানিকভাবে কোনো একনায়ক সৃষ্টি হতে পারবে না—সেজন্য আমরা কাজ করছি।'
'এই সংস্কারের ফল যদি আমরা পেতে চাই, তাহলে নির্বাচিত সংসদের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সে কথা বললে অন্তর্বর্তী সরকার খুব নারাজ হয়। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচন না চায়, তাহলে আর কী চাইবে? বর্তমান সভ্য দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই, কিন্তু সেই নির্বাচনের কথা বললেই তারা গোস্বা হন,' বলেন তিনি।
'একজন নারী উপদেষ্টা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান তাদের নির্বাচিত করেছে। তারা যদি সেভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা আছে কেন? নির্বাচন কমিশনের কাজ কী? কেউ কেউ আজীবন ক্ষমতা ভোগের স্বপ্ন দেখছেন,' প্রশ্ন রাখেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ পুরোটাই তাদের কথায় উঠবে বসবে—তারা যা চাইবে, তাই হবে, সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে—এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আপনারা যে রাস্তায় হাঁটছেন, তা অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক। আপনারা গণতন্ত্রের বিপরীত ভাষায় কথা বলছেন, আইনের শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন।'
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, 'আপনার কয়েকজন উপদেষ্টা চক্রান্ত করে দেশের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। তাদের সম্পর্কে আমরা আপনাকে জানিয়েছি—আপনি সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা অনুরোধ করেছি, আপনি যত শিগগির সম্ভব ওয়াদা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিন। তাতে আপনার সম্মান রক্ষা পাবে, দেশের মানুষ আশ্বস্ত হবে এবং স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল হবে।'
Comments