সাফজয়ী মেয়েদের পুরস্কারের চেক নিয়ে ৬ মাস ধরে অপেক্ষায় বিসিবি
সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে পুরস্কার হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। ছয় মাস হয়ে গেলেও পুরস্কারের অর্থ বুঝে পাননি সাবিনা খাতুনরা। এই ব্যাপারে বিসিবি তাদের কোনো গাফিলতি দেখছে না। গত বছরের ৪ অক্টোবর চেক তৈরি করেও বাফুফের সাড়া না পাওয়ায় এখনও অপেক্ষায় আছে তারা।
গত ২২ সেপ্টেম্বর নেপালকে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে বাংলাদেশের মেয়েরা। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী মেয়েদের জন্য এরপর আসতে থাকে নানান পুরস্কারের ঘোষণা। লম্বা সময় পার হলেও এখনও অনেক পুরস্কারই বুঝে পাননি জাতীয় দলের নারী ফুটবলাররা।
টাকার অভাবে মায়ানমারে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে নারী দল পাঠাতে পারেনি বাফুফে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গত ৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে এসে ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান কাজী সালাউদ্দিন জানান, 'মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মানিক (বাফুফে সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক) টাকা দিয়েছে। সালামের (বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী) পে অর্ডার করে রেডি আছে। বিসিবির খবর জানি না। অনেকে টিভি পর্দায় বলেছে... তাদের বলছি (আগামী) ২৪ তারিখ (এপ্রিলের) দল যাবে (সিঙ্গাপুরে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব খেলতে), সেখানে টাকা দেন।'
বিসিবির খবর বাফুফে সভাপতি জানেন না জানালেও বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নাজমুল হাসান পাপন দেন ভিন্ন তথ্য। বিসিবি সভাপতি জানান, বারবার যোগাযোগ করেও বরং সাড়া মিলছে না বাফুফের তরফ থেকে, 'ওরা (বাফুফে) নেয় না। বারবার বলা হচ্ছে তো। অক্টোবর মাসে চেক সই করা একদম নামে... নামে।'
'ওরা নিতে আসে না। এই বিষয়ে বেশি ভালো বলতে পারবে আমাদের সিইও। কদিন আগেও ওদের ফোন দেওয়া হয়েছে, "যে আসেন, নেন ভাই।" ওরা তো আসে না। এখন কি করবেন?'
বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী পরে গণমাধ্যমকে দেখান ৪ অক্টোবর ২০২২ সালের তারিখেই তৈরি হয়ে আছে পুরস্কারের চেক। এই ব্যাপারে বাফুফের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি, 'আমাদের বোর্ড সভাপতির একটা কমিটমেন্ট ছিল ৫০ লাখ টাকা (নারী ফুটবল) খেলোয়াড়দের দেওয়ার ব্যাপারে। সেভাবেই বাফুফের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আসলে খেলোয়াড়দের অ্যাভেইলঅ্যাবিলিটি এবং তাদের কাছে চেক তুলে দেওয়ার যে ইচ্ছে আমাদের ছিল, সেটা মিলছিল না বলেই হয়তো দেরিটা হচ্ছিল। কিন্তু আমরা প্রস্তুত ছিলাম তিন-চার মাস আগে থেকেই এবং চেকও প্রস্তুত ছিল। সেটা আমরা যোগাযোগ করেছি এবং সাম্প্রতিক সময়েও আমরা কথা বলেছি। উনারা সুবিধাজনক একটা সময় দিলে আমরা চেকগুলো হস্তান্তর করে দেব। অথবা যদি তা-ও না হয়, উনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা চেকগুলো পৌঁছে দেব। ইচ্ছে আছে ঈদের আগেই দিয়ে দেওয়ার।'
বিসিবির চাওয়া, চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের হাতে সরাসরি চেক তুলে দেওয়ার। মেয়েদের পুরস্কারের অর্থ দেওয়ার আয়োজন করতে তাই বারবার যোগাযোগ করা হচ্ছে বাফুফের সঙ্গে।
Comments