জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসেও অনেক কিছু অর্জন করতে চান শচীন

১৯৭৩ সালে মুম্বাইতে জন্ম নেন শচীন। বাবা মারাঠি ভাষার কবি রমেশ টেন্ডুলকার বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মণের নামে রাখেন তার নাম। শচীন সঙ্গীত জগতে না গেলেও ক্রিকেট মাঠ ভরিয়েছেন তার ব্যাটে তৈরি সুরের মূর্ছনায়।
sachin tendulkar

সুইমিং পুলের পাশে বসে চা পান করছেন। এমন দুটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে শচীন টেন্ডুলকার লিখেছেন, 'অপরাজিত ৫০, এখন চা পানের সময়।' বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার আজই পূর্ণ করলেন জীবনের ৫০ বছর। ক্রিকেট মাঠে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করা ভারতীয় কিংবদন্তি জীবনের ইনিংসে ফিফটি করে বললেন, আরও অনেক কিছু অর্জনের বাকি তার।

১৯৭৩ সালে মুম্বাইতে জন্ম নেন শচীন। বাবা মারাঠি ভাষার কবি রমেশ টেন্ডুলকার বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মণের নামে রাখেন তার নাম। শচীন সঙ্গীত জগতে না গেলেও ক্রিকেট মাঠ ভরিয়েছেন তার ব্যাটে তৈরি সুরের মূর্ছনায়।

মাত্র ১৬ বছর বয়েসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় শচীনের। এরপর বাইশগজে দাপট দেখিয়েছেন টানা ২৪ বছর। ২০১৩ সালে অবসরের পরও ক্রিকেটের সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন তিনি। আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে মেন্টর হিসেবে যুক্ত ব্যাটিংকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়া শচীন।

জন্মদিন উপলক্ষে স্টার স্পোর্টসকে দীর্ঘ সাক্ষাতকার দিয়েছেন মাস্টার ব্যাটার। সেখানে জানান খেলোয়াড়ি জীবনের পরের ইনিংসটাতেও তার অর্জনের আছে অনেক কিছু,  'সত্যি বলতে নেই (আক্ষেপ)। আমার প্রথম ইনিংস ২৪ বছর টিকেছে (ক্রিকেটিং ক্যারিয়ার)। দ্বিতীয় ইনিংসে কেবল ১০ বছর পার হলো। আগেও বলেছি দ্বিতীয় ইনিংসে আরও অনেক কিছুই অর্জন করতে চাই।'

২০১৩ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জীবনের শেষ ম্যাচ খেলেন শচীন। ওই টেস্টের পর তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ। তাকে বিপুল ভালোবাসায় বিদায় জানান মানুষ। তখন হৃদয়স্পর্শ করা এক বক্তব্যও দিয়েছিলেন তিনি। সেই দিনটির কথা তাড়িত করে তাকে, ফেলে আসা সময় দেয় তৃপ্তি,  'দেশের হয়ে খেলা বিশাল গর্বের। মাঠের ভেতরের চ্যালেঞ্জ, টিম মিটিং, ড্রেসিং রুমে বন্ধুত্ব সব এমনিতেই হয়ে যায়। তবে কোন কিছুই স্থায়ী নয়। সম্প্রতি দুটি রোড সেফটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেললাম (সাবেক তারকাদের নিয়ে) মাঠে ফিরতে পারা ছিল দারুণ অভিজ্ঞতা।'

'আমার বিদায়টা ছিল দারুণ। প্রায়ই মনে হতো শেষ ম্যাচের অভিজ্ঞতা কেমন হবে। শেষ পর্যন্ত দিনটিতে যা হয়েছে তা বিশেষ। এই কারণেই আমি কিছু মিস করি না। মাঠ ছাড়ার শেষ দিনটি আমাকে রোমাঞ্চিত করে।'

ডানহাতি শচীনের ব্যাটিং একাধিক প্রজন্মকে করে রেখেছে মোহাবিষ্ট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান, সর্বোচ্চ ১০০ সেঞ্চুরি করে রেকর্ড নিয়ে গেছেন অনেকের স্পর্শের বাইরে। তার ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকারের সম্প্রতি আইপিএল অভিষেক হয়েছে। বাবার মতোন না হয়ে অর্জুন হয়েছেন বাঁহাতি পেস অলরাউন্ডার। অর্জুনকেও একদিন তার মাপের মতো বড় ক্রিকেটার হতেই হবে এমন কোন চাপ অবশ্য দেন না তিনি। সন্তানদের বিকশিত হতে দিতে চান তাদের মতো করে,  'আমার বা-মা আমাকে কখনো কোন চাপ দেননি। নিজে যা করতে চেয়েছি, সেই স্বাধীনতা পেয়েছি। সারা (কন্যা) ও অর্জুনের ক্ষেত্রেও আমি এই নীতি মেনে চলি। কোন চাপ দেই না। তবে যেটাই করে নিজেদের সেরাটা দিতে বলি।'

Comments