এশিয়া কাপ ২০২৩

মুজিবের আউটের পরও সুপার ফোরে যেতে পারত আফগানিস্তান

ছবি: আইসিসি টুইটার

শ্রীলঙ্কাকে টপকে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে যেতে ১ বলে চাই ৩ রান। মুজিব উর রহমান ছক্কা মারার চেষ্টায় সীমানার কাছে ক্যাচ তুলে আউট হলেন। তৎক্ষণাৎ রাজ্যের হতাশা ঢেকে ফেলল আফগানিস্তান দলকে। নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা রশিদ খানের শরীরী ভাষাতেই ফুটে উঠল, বিদায় মেনে নিয়েছেন তারা। অথচ তখনও সম্ভাবনা ছিল আফগানিস্তানের।

মঙ্গলবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা টস জিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৯১ রান জমা করে স্কোরবোর্ডে। আসরের 'এ' গ্রুপ থেকে সুপার ফোরে ওঠার জন্য আফগানরা পায় ৩৭.১ ওভারে লক্ষ্য ছোঁয়ার চ্যালেঞ্জ। সেটা পূরণে নিজেদের উজাড় করে দেন দলটির ব্যাটাররা- রহমত শাহ, হাশমতুল্লাহ শহিদি, মোহাম্মদ নবি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, করিম জানাত ও রশিদ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তৈরি হয় নাটকীয় পরিস্থিতি। হিসাবের গরমিলে আগেই হাল ছেড়ে দিয়ে সুযোগ হারায় আফগানিস্তান!

রশিদ তিনটি চারের সাহায্যে ১২ রান আনায় ৩৭ ওভার শেষে আফগানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৮৯ রান। ফলে নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে লঙ্কানদের বাড়ি পাঠিয়ে নিজেরা সুপার ফোরে খেলার জন্য পরের বলে ৩ রানের চাহিদা ছিল তাদের। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার করা ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে মুজিবের বিদায়ে সেই সমীকরণ মেলাতে না পারলেও সম্ভাবনা টিকেছিল দলটির। সেজন্য ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে ২৯৫ রান কিংবা ৩৮.১ ওভারের মধ্যে ২৯৭ রানে পৌঁছাতে হতো তাদের।

সেগুলো কেমন করে হতো? ২৮৯ বা ২৯০ রানে থাকাকালে ছক্কা কিংবা ২৯১ রানে থাকাকালে চার হাঁকিয়ে ২৯৫ রানে (বা ২৯৫ রান পেরিয়ে) যেতে পারত আফগানিস্তান। আবার ২৯১ রানে থাকাকালে ছক্কা মারলে তাদের সংগ্রহ পৌঁছাত ২৯৭ রানে। দুই ক্ষেত্রেই নেট রান রেটের হিসাবে বাদ পড়ে যেত লঙ্কানরা।

আফগানিস্তানের ড্রেসিং রুম থেকে এসব হিসাবনিকাশ নিয়ে কোনো বার্তা সম্ভবত মাঠে পাঠানো হয়নি। রশিদের শরীরী ভাষা, মুজিবের আউটের পর ক্রিজে যাওয়া ফজলহক ফারুকির ব্যাটিং থেকে সেটা অনুমান করা যায়। তিন বল খেলা ফারুকি কোনোটিতেই হাঁকানোর চেষ্টা করেননি, ফুল টস ডেলিভারি পেয়েও ছিলেন সাবধানী! অথচ ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ২৮৯ থেকে ২৯৫ রানে চলে গেলেই সুপার ফোরের টিকিট পেয়ে যেত আফগানিস্তান।

ফারুকি নিজে যেমন মারার প্রয়াস দেখাননি, তেমনি অন্যপ্রান্তে ১৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থেকে যাওয়া রশিদকেও স্ট্রাইক দেওয়ার মনোভাব ছিল না তার। হয়তো স্রেফ টিকে থেকে ওভারটি পার করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

নাটকীয়তা আরও একধাপ উঁচুতে চলে যায় শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান ম্যাচটা হেরে গেলে। ৩৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ডিফেন্স করতে ব্যর্থ হয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন ফারুকি। রিভিউ নিলেও মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আসেনি কোনো পরিবর্তন। স্মরণীয় লড়াই শেষে ২ রানের রোমাঞ্চকর জয়ের উল্লাসে মাতে শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠেছে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে। এই গ্রুপ থেকে আগেই সুপার ফোর নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের।

আফগানিস্তানের এমন হৃদয়ভাঙা হারে নিরপেক্ষ দর্শকদেরও হয়তো আক্ষেপ জেগেছে। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে, ম্যাচের ধারাভাষ্যকাররাও যখন বারবার বলছিলেন যে ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে ছক্কা মেরে ২৯৫ রানে যেতে পারলে দলটি সুপার ফোরে যাবে, তখনও কোনো বার্তা কি যায়নি রশিদ-ফারুকিদের কাছে নাকি তাদের ড্রেসিং রুম জানতই না পরবর্তী হিসাবনিকাশ?

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

4h ago