‘এখন অনেক ঘাসের উইকেট থাকে’
দেশের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এক সময় পেসারদের একাদশে জায়গা পাওয়াই ছিলো কঠিন। কারণ সারাদিন তাদের তেমন কোন কাজ থাকত না। ৮০ ওভার পরও নেওয়া হতো না নতুন বল। প্রাণহীন উইকেটে বল করে যেতেন স্পিনাররা। এই পরিস্থিতি বদলে গেছে। গত দুই-তিন বছরে নিয়মিত রাখা হচ্ছে ঘাসের উইকেট, ৮০ ওভার পর নতুন বল নেওয়া করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। তাতে গুরুত্ব বেড়েছে পেসারদের। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বিপিএলে দুর্দান্ত স্পেলে মাত করা বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি মনে করেন, উইকেট ভালো করার ফল পাচ্ছেন তারা।
বিপিএলে এবার আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন পেসাররা। ২২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি শরিফুল ইসলাম। তিনি জাতীয় দলের খেলোয়াড় হলেও জাতীয় দলের বাইরের কয়েকজনও আলো ছড়িয়েছেন। ভালো করতে দেখা গেছে শহিদুল ইসলামকে। ঘণ্টায় ১৫০ কিমি ছুঁইছুঁই গতি তোলে নজর কেড়েছেন নাহিদ রানা।
সোমবার রাতে বরিশালের বিপক্ষে রনি যখন বল করতে আসেন তখন দলটি ছিল দুইশো ছাড়ানোর সম্ভাবনায়। দ্বাদশ ওভারে টম ব্যান্টন যখন আউট হন তখন ১১০ রানে পড়েছে কেবল ২ উইকেট।
দলের ৬ষ্ঠ বোলার হিসেবে ১৩তম ওভারে বল হাতে পান টুর্নামেন্টে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলা রনি। প্রথম বলেই তিনি উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান মুশফিকুর রহিমকে। এক বল পরই বোল্ড সৌম্য সরকার। ওভারের পঞ্চম বলে কাইল মেয়ার্সকে তুলে উল্লাসে মাতেন তিনি। প্রথম ওভারেই তিন উইকে! এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে পুরো করেন পাঁচ উইকেট।
শেষ পর্যন্ত তার ফিগার দাঁড়ায় ৪-০-১২-৫! বিপিএল দেশি বোলারদের মধ্যে যা সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। এই খবর অবশ্য জানতেন না রনি, 'এটা আসলে জানতাম না আমি। ভালো লাগছে আলহামদুলিল্লাহ। ৫ উইকেট তো একজন বোলারের জন্য সবসময় স্পেশাল। আমার জন্য স্পেশাল দিন ছিল।'
এই বিশেষ দিন এমনি এমনি আসেনি। একাদশে সুযোগ না পাওয়ায় অনুশীলনে নিজেকে প্রমাণের তাগিদ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন।রান আপ ও হাতের স্যুইং নিয়ে কাজ করে গতি বাড়িয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্য আসরে জুতসই চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেকে তৈরির বিশ্বাসও ছিলো ভেতরে।
জাতীয় দলের হয়ে ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলে সেই ২০১৮ সালের দিকে বাদ পড়া পেসার জানালেন, পেসারদের এখন সুসময় চলছে। শুধু তিনি নন এখন উইকেট ভালো হওয়ায় সার্বিকভাবেই পেসারদের উন্নতি লক্ষণীয়, 'অবশ্যই গত দুই-তিন বছরে আমাদের উইকেট অনেক ভালো হয়েছে। আগে অনেক ফ্ল্যাট থাকত। এখন অনেক ঘাসের উইকেট থাকে। এখন আমাদের অনেক জোরে জোরে বোলার বের হচ্ছে। আপনি যখন বোলারদের পক্ষে একটু কাজ করবেন বোলাররাও সেভাবে ডেলিভার করবে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের বোলাররা এখন ভালো জোরে বল করে। আগে হয়ত ১-২ জন ১৪০ এ করত এখন অনেকে ১৫০ (কিমি/ঘণ্টা) চলে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। আমি মনে করি বিসিবি অনেক ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। ভালো উইকেটে আমরা বোলিং করতে পারছি।'
Comments