বিস্ফোরক ইনিংস খেলে সাংবাদিক বোনের প্রশ্নে যে উত্তর দিলেন জাকের
জাকের আলি অনিক আবেগ সামলাতে পারেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নামার আগে বলেছিলেন, সাফল্য আত্মহারা কিংবা ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ে যাওয়ার ধরণ নাই তার। সোমবার রাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিস্ফোরক ইনিংস খেলে তাকে পাওয়া গেল তেমন নির্মোহ।
জাকেরের কাগজে কলমে অভিষেক হয়েছে গত বছর অক্টোবরে। সেটা এশিয়ান গেমসে, যেখানে খেলেছে দ্বিতীয় সারির দল। নিজ মাঠ সিলেটে জাকেরের বাংলাদেশের হয়ে 'আসল' অভিষেক হলো আজই। লঙ্কানদের বিপক্ষে ২০৭ রান তাড়ায় বাংলাদেশের যখন কোন আশা দেখা যাচ্ছিল না তখন ডানহাতি ব্যাটার করলেন ৩৪ বলে ৬৮ রান। দল না জিতলেও বীরত্ব দেখিয়ে আলো কাড়েন তিনি।
এই ম্যাচ দেখতে তার বড় বোন স্থানীয় সাংবাদিক শাকিলা ববি তার স্বামী ও সন্তান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। পেশাদার সাংবাদিক শাকিলা পরে সংবাদ সম্মেলনেও অংশ নেন।
অন্যান্য সাংবাদিকের কয়েকটি প্রশ্নের পর ভাইকে প্রশ্ন করার সুযোগ পান শাকিলা। সম্পর্কের জায়গা সরিয়ে পেশাদার আদলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, 'আপনি সিলেটের ছেলে। ঘরের মাঠে পারফর্ম করলেন, মানুষ আপনার পক্ষে ছিলো। কতটা উপভোগ করেছেন?'
জাকেরও একদম পেশাদারিত্বের ছাপ রাখেন উত্তরে, 'আমি সব সময় সিলেটের মাঠে খেলতে পছন্দ করি। আমার প্রথম শ্রেণীর অভিষেকও এখানে। আমি আগেও বলেছি এই মাঠের আবহ সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। উইকেট আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো ছিলো। গুড টু ব্যাট অন।'
২০৭ রান তাড়ায় ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিলো ৪ উইকেটে ৭৮। ওখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু জাকেরের। রিয়াদ ৫৪ করে ফেরার পর শেখ মেহেদীকে নিয়ে ৬৫ রানের আরেক জুটিতে ম্যাচ নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬ ছক্কার রেকর্ডের দিন শেষ ওভারের উত্তেজনায় আনেন ম্যাচ। তবে শেষ ৬ বলে ১২ রানের সমীকরণ না মেলার হতাশা বেশি কাজ করছে তাকে, বাংলাদেশ যে হেরেছে ৩ রানে, 'রিশাদকে বলেছিলাম চেষ্টা করতে আমাকে স্ট্রাইক দেওয়ার। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওর উইকেট পড়ে যায়। তারপর আমিও স্ট্রাইক পাই। ৪ বলে ১০ লাগত, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল ইনশাল্লাহ পারব যেহেতু থ্রো আউট দ্য ইনিংস ভালো যাচ্ছিল। সংযোগ হয়নি।'
'যদি ম্যাচটা জিততে পারতাম, ১০-১২ রান করেও যদি ম্যাচ জিততে পারতাম আমার কাছে বেশি খুশি লাগত। ভালো খেলেছি আলহামদুলিল্লাহ। ম্যাচ জিতলে আরও খুশি হতাম।'
সদ্য সমাপ্ত বিপিএল দিয়ে আলোয় আসেন জাকের। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জায়গা পান জাতীয় দলে। বিপিএলের পর পর শ্রীলঙ্কা সিরিজ হওয়ায় মোমেন্টাম কাজে দিয়েছে বললে মত জাকেরের, 'এই জিনিসটা কাজে দিয়েছে। বিপিএলের (শেষের) দুই দিনের মধ্যে এখানে খেলা, আমার মনে হয় ওই জিনিসটা কাজে দিয়েছে। ওই আবহ থেকে টি-টোয়েন্টি খেলতে আসা কাজে দিয়েছে। যেহেতু এটা আমার হোম গ্রাউন্ড, এখানকার মাঠ, উইকেট সম্পর্কে ধারণা ছিলো।'
এই সিরিজে শুরুতে দলেই ছিলেন না জাকের। অফ স্পিনার আলিস আল ইসলামের চোটে শেষ মুহুর্তে দলে আসেন, তবে দলে আসার মানসিক প্রস্তুতির তার ছিলো, 'মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আলিসের যখন চোট হলো আমি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। শান্ত আমার সঙ্গে কথা বলে নিয়েছিল যে "তোর কিন্তু যাওয়ার চান্স আছে, তুই মেন্টালি রেডি থাকিস", আমার সঙ্গে আগেই কথা হয়েছে। আমি প্রস্তুত ছিলাম।'
Comments