শান্ত-লিটনদের অদ্ভুতুড়ে ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা নেই মিরাজের, রাজ্জাক বলছেন ‘গ্রহণযোগ্য নয়’
কামিন্দু মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভাদের ব্যাটিংয়ের সময় মনে হচ্ছিলো উইকেটে বোলারদের জন্য তেমন কিছুই নেই। বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামতে সেই উইকেটই যেন হয়ে গেলো ব্যাটারদের জন্য মাইনফিল্ড! আসলে উইকেটের কোন অদল-বদল হয়নি। ব্যাটারদের মানসিকতা, দক্ষতা প্রয়োগ, পরিস্থিতি বিচার করার ক্ষমতা তৈরি করেছে ফারাক।
সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে বিশাল হারের দ্বারপ্রান্তে। ৫১১ রানের লক্ষ্যে ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ৪৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ম্যাচ শেষ হওয়ার সম্ভাবনাই এখন প্রবল। ম্যাচের ফল কি হবে এটা বোধহয় বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না।
শ্রীলঙ্কা ৫১০ রানের বিশাল লিড নেওয়ার পরই মূলত বাস্তবতার বিচারে ম্যাচের ফল নির্ধারিতই হয়ে গিয়েছিলো। তারপরও লঙ্কানরা যে উইকেটে এত রান করল, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছ থেকে লড়াই প্রত্যাশা করেছিলেন সমর্থকরা। সেটা তো আসেইনি, আত্মঘাতী শটের মিছিলে তৈরি হয়েছে বিস্ময়।
বিশ্ব ফার্নান্দোর ইনিংসের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউতে বিদায় নেন মাহমুদুল হাসান জয়। কাসুন রাজিতার দ্বিতীয় ওভারে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন অধিনায়ক শান্ত। উইকেটের পেছনে খোঁচা মেরে ফেরেন শাহাদাত হোসেন দিপুও।
সবাইকে ছাড়িয়ে যান লিটন দাস। দিপু আউট হওয়ার পর কিপার ব্যাটার ছয়ে নেমে প্রথম বলেই এগিয়ে এসে পুল শটে উড়াতে যান ফার্নেন্দোকে। টাইমিং গড়বড় করে সহজ ক্যাচে থামেন তিনি। ম্যাচের প্রেক্ষিতে এমন শট দেখে হতভম্ব হয়ে যেতে হয় সবাইকেই।
ম্যাচ শেষে দলের হয়ে কথা বলতে আসা মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে জানতে চাওয়া হয় এসব শটের ব্যাখ্যা আসলে কি? তিনি স্পষ্ট কোন ধারণা দিতে পারেননি, 'এটার ব্যাখ্যা যে খেলোয়াড় খেলে ব্যক্তিগতভাবে সেই আসলে বলতে পারবে তার পরিস্থিতি কি চলছে। ওই মুহূর্তে কি চিন্তা করছে। শেষের দিকে অবশ্যই এটা কঠিন। আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। যেহেতু আমরা পেশাদার খেলোয়াড়। ব্যক্তিগতভাবে আমাদের যে আউটগুলো হয়েছে অবশ্যই হতাশাজনক। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। মুমিনুল ভাই আছে, আমি আছি আমরা যদি একটু রান করতে পারি আমাদের জন্য ভালো হবে।'
বাংলাদেশের অমন হতাশাজনক দিন মাটে বসেই দেখেছেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। খেলা শেষে বেরিয়ে তিনি ব্যাটারদের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি, 'ব্যাটিংয়ের দিক থেকে যদি বলেন আমার কাছে খুবই অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে এবং গ্রহণযোগ্য নয়। এই রকম ব্যাটিং হবে, বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে…ওরা ভালো ব্যাটিং করেছে। ওদের ব্যাটিং দেখার পর আমাদের ব্যাটিং দুইরকম মনে হয়েছে। আমি হতাশ।'
'পিচের সমস্যা হবে কেন? আধা ঘন্টার মধ্যে পিচ কি আকাশ পাতাল পার্থক্য হয়ে যাবে নাকি। কিছুক্ষণ আগেই ওরা দুইজন এক শো মেরে গেল। ১০ মিনিটের ব্রেক থাকে। ১০ মিনিটে উইকেটে কী এমন হলো? আসলে আমাদের অ্যাপ্লিকেশনে কিছু ভুল হয়েছে।'
পাঁচ আউটের মধ্যে লিটনের আউট নিয়েই বেশ সমালোচনা হচ্ছে। ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নেমেই ছক্কা মারতে গিয়ে তুলে দেন ক্যাচ। রাজ্জাক দায় দিচ্ছেন অবশ্য সবাইকেই, 'হতাশাজনক। টেস্ট ম্যাচে একজন সিনিয়র ব্যাটসম্যান এভাবে আউট হওয়া ঠিক নয়। আসলে লিটন দাস একা বলে নয়, এখানে কিন্তু ৫টা উইকেট পড়ে গেছে। সবারই ভুল। যারা যারা টেস্ট ম্যাচ খেলছে, তাদের ওর বয়স কম, ও ছোট, ও এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, এগুলো বলার আসলে সুযোগ নেই। এরকম সুযোগ আসলে হ্যান্ডেল করতে পারবে বলেই তাকে দেওয়া হয়েছে। কারও একার দোষ নয়।'
Comments