শুরুতেই খালেদের তোপ, ৫ উইকেট খুইয়ে কাঁপছে শ্রীলঙ্কা
আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে দিনের শুরুতে উইকেটের আর্দ্রতা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা জানালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়কের চাওয়া পূরণ করলেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। অসাধারণ বোলিংয়ে প্রতিপক্ষের টপ অর্ডারকে একাই ধসিয়ে দিলেন তিনি। এরপর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দীনেশ চান্দিমাল সাজঘরে ফিরলে বিপদ বাড়ল শ্রীলঙ্কার।
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে পাঠানো বাংলাদেশ প্রথম সেশনেই করছে উইকেট উৎসব। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে চাপে থাকা সফরকারীদের সংগ্রহ ২২ ওভারে ৯২ রান। দলটির প্রথম পাঁচ ব্যাটারের সবাই মাঠ ছেড়ে গেছেন। ক্রিজে আছেন অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৪ বলে ২৫ ও কামিন্দু মেন্ডিস ১৯ বলে ১১ রানে। ৩ উইকেট নেওয়া খালেদের পাশাপাশি শরিফুল ইসলামও বোলিংয়ে ভীতি ছড়াচ্ছেন। অভিষিক্ত নাহিদ রানা ততটা কার্যকর হতে পারেননি এখনও।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেই শ্রীলঙ্কার ইনিংসে আঘাত করেন খালেদ। তার ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করতে প্রলুব্ধ হন নিশান মাদুশকা। পেছনে চলে যাওয়া বল তৃতীয় স্লিপে দারুণভাবে লুফে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২ রান করা মাদুশকার বিদায়ের পর পেসারদের লাইন ও লেংথ কিছুটা এলোমেলো হয় যায়। সেই সুযোগে চাপ সামলে জুটি গড়ার পথে এগোন দিমুথ করুনারত্নে ও কুসল মেন্ডিস।
ইনিংসের ১২তম ওভারে খালেদ আবির্ভূত হন রুদ্রমূর্তিতে। সিলেটে জন্ম নেওয়া ডানহাতি পেসার ধরেন জোড়া শিকার। দ্বিতীয় বলটি ছিল শর্ট ও অফ স্টাম্পের বাইরে। দ্বিধায় থাকা কুসল শেষ মুহূর্তে ব্যাট সরিয়ে নিতে চেয়েও পারেননি। গালিতে সহজ ক্যাচ হাতে জমান জাকির হাসান। কুসল থামেন ১৬ রান করে। ভাঙে ৩৭ রানের জুটি।
ষষ্ঠ বলটি ছিল চোখ ধাঁধানো। তাতে বোকা বনে বোল্ড হন করুনারত্নে। বাঁহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে রাউন্ড দ্য উইকেটে ফুল লেংথ ডেলিভারি করেন খালেদ। ড্রাইভ করতে চেয়ে ব্যাট-প্যাডের মধ্যে বড় ফাঁক রেখে দেন করুনারত্নে। সেই জায়গা দিয়ে তীক্ষ্ণ বাঁক খেয়ে বল ঢুকে উপড়ে ফেলে স্টাম্প। ১৭ রানে আউট হন করুনারত্নে।
ম্যাথিউসকে থিতু হতে দেননি শান্ত। খালেদের বল কভারে ঠেলে রানের জন্য দৌড় দেন স্ট্রাইকে থাকা চান্দিমাল। কিন্তু সাড়া দিতে দেরি করে ফেলেন ম্যাথিউস। তিনি পপিং ক্রিজের বাইরে থাকতেই সরাসরি থ্রোতে বাংলাদেশের দলনেতা ভেঙে ফেলেন স্টাম্প। দলীয় রান পঞ্চাশ পূর্ণ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট পড়ে যায় শ্রীলঙ্কার। ম্যাথিউসের সংগ্রহ ৭ রান।
১৫তম ওভারে শ্রীলঙ্কা বিপদ আরও ঘনীভূত হয়। শরিফুল আক্রমণে ফেরার পরই লেগ স্লিপ রেখে দেন শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়কের বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল কাজে লেগে যায়। লেগ স্টাম্পে থাকা ডেলিভারি চান্দিমাল গ্ল্যান্স করলে বল মাটিতে ছোঁয়ার আগে দুর্দান্ত কায়দায় তালুবন্দি করেন মিরাজ। মাঠের আম্পায়াররা নিশ্চিত না হওয়ায় তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হয়। রড টাকার কয়েক দফা রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্ত জানান। চান্দিমাল ফেরেন ৯ রানে। স্রেফ ৫৭ রানেই পড়ে যায় পঞ্চম উইকেট।
পরের বলে ফের উল্লাস করতে পারতেন শরিফুল। প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু মেন্ডিস। তবে দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদুল হাসান জয়। বল হাতে লাগলেও মুঠোয় নিতে ব্যর্থ হন তিনি। সেশনের বাকিটা সময় ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে পাল্টা আক্রমণের মনোভাব দেখায় শ্রীলঙ্কা। বিশেষ করে দলনেতা ধনঞ্জয়া সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি মারছেন। শরিফুল ও নাহিদের করা শেষ দুই ওভারে আসে যথাক্রমে ৮ ও ১৩ রান। ধনঞ্জয়া ও কামিন্দুর অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৩৬ বলে ৩৫।
Comments