বাটলারের বীরত্বে নারাইনকে ম্লান করে রেকর্ডছোঁয়া জয় রাজস্থানের

ছবি: বিসিসিআই

শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য রাজস্থান রয়্যালসের সামনে দাঁড়াল ৯৬ রানের ভীষণ কঠিন সমীকরণ। ৩৩ বলে ৪২ রান নিয়ে ধুঁকতে থাকা ওপেনার জস বাটলার তখনই গিয়ার বাড়ানো শুরু করলেন। রভম্যান পাওয়েলকে কিছু সময়ের জন্য যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পাওয়ার পর বাকি দায়িত্বটা একার কাঁধে তুলে নিলেন ইংলিশ তারকা। আলোর গতিতে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে অবিশ্বাস্য ও স্মরণীয় একটি জয় পাইয়ে দিলেন তিনি। এতে বিফলে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সুনিল নারাইনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।

মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে স্বাগতিকদের ২ উইকেটে হারিয়েছে রাজস্থান। বাটলারের বীরত্বে ২২৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ম্যাচের একদম শেষ ডেলিভারিতে।

৬০ বলে ৯ চার ও ৬ ছক্কায় তাণ্ডব চালিয়ে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাচসেরা বাটলার। ৩৬ বলে ফিফটি পূরণের পর তিনি শতরান স্পর্শ করেন ৫৫ বলে। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। গত ৬ এপ্রিল তার আগের সেঞ্চুরিতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়েছিল রাজস্থান। সেদিন ম্লান হয়ে গিয়েছিল প্রতিপক্ষের ভারতীয় তারকা বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি।

এদিন একই আক্ষেপে পুড়তে হলো নারাইননকে। বাটলারের মতোই ওপেনিংয়ে নেমে তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারের স্বাদ নেন তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে আউট হওয়ার আগে ৫৬ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তিনি মারেন ১৩ চারের সঙ্গে ৬ ছক্কা। নারাইনের আফসোস আরও বেশি হতে পারে অন্য একটি কারণে। ৫০৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই যে তার প্রথম সেঞ্চুরি! পুরোদস্তুর বোলার থেকে বোলিং অলরাউন্ডারে পরিণত হওয়া ক্যারিবিয়ান তারকার নামের পাশে এতদিন ছিল কেবল ১৫টি হাফসেঞ্চুরি।

১৩ বলে ২৬ রানের ক্যামিও খেলে রভম্যান যখন বিদায় নেন, তখনও জয় থেকে ৪৬ রান দূরে রাজস্থান। বল বাকি ছিল ১৮। বাটলার বাদে স্বীকৃত ব্যাটার নেই আর কেউ। সেই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বুক চিতিয়ে ২২ গজে দাঁড়িয়ে যান তিনি। পরের সবগুলো বল একাই মোকাবিলা করে কলকাতার মুঠো থেকে ছিনিয়ে আনেন জয়।

সেঞ্চুরির পথে বাটলার পেরিয়ে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক সাবেক নক্ষত্র ক্রিস গেইলকে। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসরের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতটি সেঞ্চুরি এখন বাটলারের। গেইল ছয়টি সেঞ্চুরি নিয়ে নেমে গেছেন তিন নম্বরে। এই তালিকায় আটটি সেঞ্চুরি নিয়ে সবার উপরে আছেন কোহলি।

উত্তেজনাপূর্ণ রান তাড়ায় নিজেদের রেকর্ডে ভাগও বসাল রাজস্থান। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার প্রথম কীর্তি হয়েছিল ২০২০ সালে। শারজাহতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের (বর্তমান পাঞ্জাব কিংস) বিপক্ষে ২২৪ রানের লক্ষ্যের পেছনেই ছুটে ৪ উইকেটে জিতেছিল রাজস্থান। চার বছরের ব্যবধানে সেই অর্জনে ফের নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করল তারা।

এই জয়ে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান মজবুত করল সঞ্জু স্যামসনের নেতৃত্বাধীন রাজস্থান। সাত ম্যাচে ষষ্ঠ জয়ে তাদের অর্জন ১২ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলা কলকাতা নেট রান রেটের হিসাবে দুইয়ে রয়েছে। তাদের মতো ৮ পয়েন্ট করে নিয়ে তিনে ও চারে অবস্থান করছে যথাক্রমে চেন্নাই সুপার কিংস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

Comments

The Daily Star  | English

A blatant river grab

Confluence of Dhaleshwari and Shitalakkhya under siege from Shah Cement

12h ago