তবুও নিজেকেই দায় দিচ্ছেন তাওহিদ

দলীয় ৩৫ রানেই যখন দলের অর্ধেক ব্যাটার হারিয়ে লেজ প্রায় বের হয়ে যায় যায় অবস্থা, তখন জাকের আলীকে নিয়ে হাল ধরলেন তাওহিদ হৃদয়। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে দলকে এনে দিলেন সম্মানজনক পুঁজি। সেই পুঁজি নিয়ে জয় মিলেনি বটে, তবে হৃদয় জিতে নিয়েছেন তাওহিদ। কিন্তু এমন ইনিংসের পরও নিজেকেই দায় দিচ্ছেন এই ক্রিকেটার।
বৃহস্পতিবার ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারার ম্যাচে নবম ওভারেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডের খোঁজ চলছিল তখন। হয়তো বিব্রতকর এই রেকর্ডে বাংলাদেশের নাম চলেও আসতো, যদি জাকের আলির সহজ ক্যাচ না ছাড়তেন রোহিত শর্মা। এরপর ১৫৪ রানের রেকর্ড গড়েন তারা, যা ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
জাকের ৬৮ রানে বিদায় নিলেও ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। ঠিক ১০০ রান করে শেষ ওভারে আউট হন। প্রথম ফিফটি তুলেছিলেন ৮৫ বলে, যেখানে পরের ফিফটি তুলেছেন মাত্র ২৯ বলে। তবে নিজের শেষ ১৪ বলে করেছেন ১১ রান। শেষ দিকে ক্র্যাম্প না করলে রান আরও দ্রুত গতিতে করতে পারতেন। তাওহিদের আক্ষেপ সেখানেই।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, 'আমরা ভাবনায় পরিষ্কার ছিলাম যে, টস জিতলে কী করতে চাই। ব্যাটিং করারই পরিকল্পনা ছিল গোটা দলের। দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে গেছে… এজন্য জিনিসটা এরকম হয়েছে। দ্রুত উইকেট যাওয়ার পরও যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি আমি ও জাকের, দুজনের একজন যদি আরও ভালোভাবে ম্যাচটা শেষ করতে পারতাম, তাহলে অন্তত ২৬০-২৭০ রান হতো।'
'তখন ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতো। ওরা রান তাড়া করেছে ৪৭ ওভারে। এত সহজ ছিল না উইকেট। আমাদের মনে হয়, ৩০ থেকে ৪০ রান কম করে ফেলেছি,' আক্ষেপ করে বলেন তাওহিদ। ম্যাচের ৪৫ ওভার থেকেই ক্র্যাম্প মারাত্মক ভোগাতে থাকে তাওহিদকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরও দৌড়াতেই পারছিলেন না ঠিকমতো। রান নেওয়ার সময় খোঁড়াচ্ছিলেন। মোহাম্মদ শামির বলে একবার শট নিতে গিয়ে তো পড়েই যান।
ক্র্যাম্প না করলে আরও ২০-৩০ রান বেশি করতে পারতেন বলে মনে করেন এই তরুণ, 'আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার ক্র্যাম্পিং করাটাই ওই সময়… যদি আমি ঠিকঠাক থাকতাম, তাহলে আরো ২০-৩০ রান বেশি হতে পারত দলের। পাঁচ উইকেট যাওয়ার পর এতটা সহজ ছিল না। ওই সময় ধৈর্য ধরেছি। নিজের সঙ্গে কথা বলেছি যে কীভাবে এখান থেকে বের হওয়া যায়।'
'একটা সময় অনেক ডট বল দিয়েছি। তবে আমার মনে হয়েছে, পরে তা পুষিয়ে দিতে পারব। কারণ, আমার সেই সামর্থ্য আছে। যদি ক্র্যাম্পিং ওই সময় না হতো, তাহলে হয়তো দলের জন্য আরও ২০-৩০ রান বেশি করে দিতে পারতাম,' যোগ করেন এই ক্রিকেটার।
সেঞ্চুরিতে তৃপ্তি পেলেও মন ভালো নেই তাওহিদের, 'আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম শতক, তবে সবটুকুই বৃথা হয় যখন দল হেরে যায়। শতরানের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়ার শেষ নেই, তবে মন খারাপ। হয়তো আমি আর একটু ভালো খেললে দলের জন্য আরও ভালো হতো। পরের ম্যাচে ফিরতে চাই, যত কষ্টই সহ্য করতে হোক না কেন।'
Comments