সাদমানের সেঞ্চুরির পর শেষ বিকালে ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশের অস্বস্তি

এক পর্যায়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২৫৯ রান। অর্থাৎ বড় পুঁজি গড়ে প্রথম ইনিংসে ভালো লিড পাওয়ার হাতছানি ছিল তাদের সামনে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসার ঘূর্ণিতে শেষ বিকালে ব্যাটিং ধসে পড়ল টাইগাররা। মাত্র ২০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট খুইয়ে বরং অস্বস্তিতে ভুগছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ৬৪ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তাদের হাতে আছে ৩ উইকেট। সকালের প্রথম বলে জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে অলআউট হওয়ার পর প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৯১ রান। ক্রিজে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৭ বলে ১৬ এবং তাইজুল ইসলাম ১১ বলে ৫ রানে।
চার বছর পর ওপেনার সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিতে ভালো অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টপাটপ উইকেট হারিয়ে সেই স্বস্তি মিলিয়ে গেছে হাওয়ায়। সাত বছরের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বাঁহাতি ব্যাটার করেন ১২০ রান। ১৮১ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ১৬ চার ও ১ ছক্কা। তার আগের শতকটিও ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০২১ সালে হারারেতে অপরাজিত ১১৫ রান করেছিলেন তিনি। সেটা ছাপিয়ে আরও এবার আরও বড় ইনিংস খেলেন সাদমান।
প্রথম সেশনে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ১০৫ রান। দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেট পড়লেও আসে ১০০ রান। তৃতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টাও প্রায় নির্বিঘ্নে পার করে দিচ্ছিলেন অধিনায়ক শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ইনিংসের ৭১তম ওভারের চতুর্থ ডেলিভারিতে ভাঙে ৯৯ বলে ৬৫ রানের জুটি। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। ৫৪ বলে ২৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আক্রমণে ফেরা মাসেকেসা পান প্রথম টেস্ট উইকেটের মধুর স্বাদ।
৭৫তম ওভারে দ্বিতীয় শিকার ধরেন মাসেকেসা। লেগে ঘুরানোর চেষ্টায় ফিরতি ক্যাচ দিয়ে টিকতে পারেননি জাকের আলী অনিক। ১৩ বলে তার রান ৫। কিছুক্ষণ পর বড় ধাক্কা খায় টাইগাররা। ৭৭তম ওভারের শেষ বলে রানআউটে কাটা পড়েন অভিজ্ঞ মুশফিক। আহেতুক রান নিতে গিয়ে বিপদ দেকে আনেন তিনি। ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন ওয়েসলি মাধেভেরে। সিলেটে আগের টেস্টে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ মুশফিক আউট হন ৫৯ বলে ৪০ রানে।
৮৩তম ওভারে মাসেকেসা আবার আঘাত হানেন। দ্বিতীয় স্লিপে শন উইলিয়ামসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ভাঙে নাঈম হাসানের প্রতিরোধ। ২৩ বলে ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দিনের শেষ চার ওভারে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি মিরাজ ও তাইজুল। মাসেকেসার শিকার ৪৪ রানে ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ব্লেসিং মুজারাবানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান বেনেট।
প্রথম পাঁচ ব্যাটার দুই অঙ্ক ছুঁলেও ফিফটি ছাড়াতে পারেন কেবল সাদমান। তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নামা আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় করেন ৮০ বলে ৩৯ রান। প্রায় আড়াই বছর ও ৩৩ ইনিংস পর এই সংস্করণে শতরানের জুটি মেলে বাংলাদেশের। সাদমান ও এনামুল গড়েন ১১৮ রানের জুটি। এরপর তিনে নামা মুমিনুল হক করেন ৬৪ বলে ৩৩ রান।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আগামীকাল তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ লিড কতটা বাড়িয়ে নিতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Comments