একাদশে ফিরেই জ্বলে উঠলেন নাসুম, ১০৩ রানেই শেষ ডাচরা

রিশাদ হোসেনের জায়গায় একাদশে ফিরেই জ্বলে উঠলেন নাসুম আহমেদ। এই বাঁহাতি স্পিনারকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়ার পথে বল হাতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের বোলারদের নৈপুণ্যে কোনোমতে একশ পার করেই গুটিয়ে গেল নেদারল্যান্ডস।
সোমবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও টস জিতে সফরকারীদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় টাইগাররা। ১৫ বল বাকি থাকতে ডাচরা অলআউট হয়েছে স্রেফ ১০৩ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা স্বাগতিক দল তাই ম্যাচের মাঝপথেই পাচ্ছে সিরিজ জয়ের জোরাল সুবাস।
বাংলাদেশের পাঁচ বোলারের সবাই উইকেটের স্বাদ নেন। নাসুম চার ওভারের কোটা পূর্ণ করে ২১ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। মোস্তাফিজ তিন ওভারে ১৮ রানে ও তাসকিন চার ওভারে ২২ রানে পান দুটি করে উইকেট। শরিফুল ইসলামের পরিবর্তে একাদশে ঢোকা তানজিম হাসান সাকিব তিন ওভারে ১ উইকেট নিতে দেন ১৬ রান। শেখ মেহেদী হাসান ৩.৩ ওভারে ১ উইকেট পান ২৪ রানের বিনিময়ে।
অফ স্পিনার শেখ মেহেদী ও ডানহাতি পেসার তাসকিনের করা প্রথম দুই ওভারে নেদারল্যান্ডস তোলে ১৪ রান। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে গিয়েই অধিনায়ক লিটন দাসের রাখা আস্থার প্রতিদান দেন নাসুম। পরপর দুই বলে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে উল্লাসে মাতান।
দ্বিতীয় ডেলিভারিতে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড অনে তাওহিদ হৃদয়ের তালুবন্দি হন ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাউড। ১০ বলে ৮ রান করেন তিনি। পরের ডেলিভারিতে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ মেলে তেজা নিদামানুরুর। স্কয়ার কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তিনি ধরা পড়েন তানজিমের হাতে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা ছিল ডাচদের। আরেক ওপেনার বিক্রমজিৎ দ্রুত রান আনতে মনোযোগী ছিলেন। তাকে ডানা মেলতে দেননি তাসকিন। ষষ্ঠ ওভারে স্লোয়ার বুঝতে না পেরে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন বিক্রমজিৎ। ১৭ বলে চারটি চারের সাহায্যে তিনি করেন ২৪ রান।
৩৭ রানে ৩ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর প্রতিপক্ষকে আরও চেপে ধরে টাইগাররা। পরের বলেই আরেকটি উইকেট পেতে পারতেন তাসকিন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পিছলে পড়ে যাওয়ায় বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন তানজিম। রানের খাতা খোলার আগেই বেঁচে যান শারিজ আহমেদ।
নবম ওভারে প্রথমবারের মতো বল হাতে পান বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ। উইকেট উৎসবে যোগ দিতে সময় নেননি তিনি। তৃতীয় ডেলিভারিতে মিড অন থেকে পেছনে ঘুরে দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নেন পারভেজ হোসেন ইমন। নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস থামেন ১১ বলে ৯ রানে।
তানজিমের করা পরের ওভারে ডাচদের বিপদ আরও ঘনীভূত হয়। চতুর্থ ডেলিভারিতে সাইফ হাসানের সরাসরি থ্রোতে নোয়াহ ক্রোস রানআউট হওয়ার পরের বলে শারিজ পুল করার চেষ্টায় উইকেটরক্ষক লিটনের গ্লাভসে ধরা পড়েন।
ক্রোস করেন ৩ বলে ২ রান। শারিজ আউট হন ১৭ বলে ১২ রান করে। ইনিংসের মাঝপথে ধুঁকতে থাকা নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৬২ রান। ফলে দলটির তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছানো নিয়েই শঙ্কা দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত খুড়িয়ে খুড়িয়ে তা করতে পারে তারা।
একাদশ ওভারে আক্রমণে ফিরে আবার উইকেট পান মোস্তাফিজ। তার চমৎকার ডেলিভারিতে বোল্ড হন ৩ বলে ২ রান করা সিকান্দার জুলফিকার। এরপর কাইল ক্লেইনকে (৭ বলে ৪ রান) তাসকিন ক্যাচ বানালে এবং পল ফন মিকেরেনকে (৭ বলে ৩ রান) নাসুম এলবিডব্লিউ করলে অলআউট হওয়ার দুয়ারে পৌঁছে যায় ডাচরা। ৮১ রানে পতন হয় তাদের নবম উইকেটের।
শেষ উইকেটে ১৮ বলে ২২ রানের জুটিতে তিন অঙ্কে যায় নেদারল্যান্ডস। আরিয়ান দত্তকে বোল্ড করে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছোট রাখেন শেখ মেহেদী। সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে নয়ে নামা আরিয়ানের ব্যাট থেকে। ২৪ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ড্যানিয়েল ডোরাম অপরাজিত থাকেন ৫ বলে ২ রানে।
Comments