উয়েফা ইউরোপা লিগ

রোমাকে কাঁদিয়ে সপ্তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন সেভিয়া

ছবি: এএফপি

প্রথমার্ধে এগিয়ে গেল এএস রোমা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে সমতা টানল সেভিয়া। এরপর সেভিয়া পেনাল্টি পেলেও রেফারি সিদ্ধান্ত পাল্টালেন ভিএআরের সাহায্যে, একই প্রযুক্তির সহায়তায় রোমার পেনাল্টির আবেদনও প্রত্যাখ্যাত হলো। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের জমজমাট লড়াই শেষে অতিরিক্ত সময়ের খেলা হলো ম্যাড়ম্যাড়ে। স্কোরলাইনে পরিবর্তন না আসায় ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে নায়ক বনে গেলেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনু। তার নৈপুণ্যে ফের উয়েফা ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতল সেভিয়া।

বুধবার রাতে ইউরোপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে শেষ হাসি হাসল হোসে লুইস মেন্দিলিবারের শিষ্যরা। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনায় পেনাল্টি শুটআউটে তারা কোচ জোসে মরিনহোর রোমাকে হারাল ৪-১ গোলে।

ইউরোপা লিগে এটি তাদের সপ্তম শিরোপা। নিজেদের রেকর্ডের ঝুলিকে আরও সমৃদ্ধ করল তারা। এর আগে ২০০৬, ২০০৭, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লা লিগার ক্লাবটি।

এর আগে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। পাওলো দিবালার লক্ষ্যভেদে রোমা লিড নেওয়ার সেভিয়া সমতায় ফেরে জিয়ানলুকা মানচিনির আত্মঘাতী গোলে।

গত ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে টাইব্রেকারে জয়সূচক পেনাল্টিটি নিয়েছিলেন গঞ্জালো মন্তিয়েল। এবারও তার সফল স্পট-কিকে শিরোপা নিশ্চিত হলো সেভিয়ার। সেখানে অবশ্য দেখা মেলে চরম নাটকীয়তার। মন্তিয়েল দুবার শট নেওয়ার সুযোগ পান। তার প্রথম স্পট-কিকটি রুই প্যাত্রিসিও সেভ করলেও আগেই গোললাইন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রোমার গোলরক্ষক। ফলে দ্বিতীয়বার শট নেওয়ার নির্দেশ দেন রেফারি। তখন আর জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি মন্তিয়েল।

চারটি স্পট-কিকের সবকটিতে জাল কাঁপায় সেভিয়া। লুকাস ওকাম্পোস, এরিক লামেলা ও ইভান রাকিতিচের পর সফলতা পান মন্তিয়েল। অন্যদিকে, রোমার ব্রায়ান ক্রিস্তান্তে লক্ষ্যভেদ করলেও জিয়ানলুকা মানচিনির শট পা দিয়ে ঠেকান বোনু। এরপর রজার ইবানেজের স্পট-কিক পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

ম্যাচে ছিল ফাউলের ছড়াছড়ি। এতে যেমন বারবার উত্তেজনা ছড়ায়, তেমনি প্রচুর সময় নষ্ট হয়। দুই দল মিলিয়ে মোট ৪০টি (সেভিয়া ২১টি, রোমা ১৯টি) ফাউল করে। সেভিয়ার ছয়জন ও রোমার আটজনকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়।

সেভিয়ার ইউরোপা লিগের ফাইনালে উঠে প্রতিবারই জেতার কীর্তি অক্ষুণ্ণ থাকলেও মরিনহোকে ফিরতে হলো খালি হাতে। স্বঘোষিত 'স্পেশাল ওয়ান' এবারই প্রথম কোনো ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনালে হারের তিক্ত স্বাদ নিলেন। গত মৌসুমে রোমাকে উয়েফা কনফারেন্স লিগের অভিষেক আসরের চ্যাম্পিয়ন করেন তিনি। এর আগে এফসি পোর্তোর হয়ে উয়েফা কাপ (বর্তমান ইউরোপা লিগ) ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইন্টার মিলানের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ইউরোপা লিগ জেতেন মরিনহো।

ইউরোপা লিগ জেতার অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো ইতালিয়ান সিরি আর ক্লাব রোমার। এর আগে একবারই ফাইনালে উঠেছিল তারা। ১৯৯১ সালে উয়েফা কাপের ফাইনালে তারা হেরেছিল ইন্টারের কাছে।

ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আরেকটি বড় সুখবর পেয়েছে সেভিয়া। আগামী ২০২৩-২৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার টিকিট পেয়ে গেছে তারা। অথচ এবারের মৌসুমে লা লিগায় রীতিমতো ধুঁকেছে দলটি। পয়েন্ট তালিকায় বর্তমানে তাদের অবস্থান ১১ নম্বরে। ৩৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪৯।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

4h ago