চেলসিকে কটাক্ষ ও গার্দিওলার কড়া সমালোচনায় মরিনহো

বিশ্ব ফুটবলে তিনি পরিচিত 'দ্য স্পেশাল ওয়ান' নামে। সাহসী, বিতর্কিত এবং সোজাসাপ্টা কথায় নিজের অবস্থান জানান দিতে যিনি দ্বিধা করেন না। সেই জোসে মোরিনহো আবারও ফিরে এলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফেনারবেক কোচ মরিনহো খোঁচা মেরেছেন তার সাবেক ক্লাব চেলসিকে। একই সঙ্গে তীব্র সমালোচনা করেছেন ম্যানচেস্টার সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলার।
কিছু দিন আগেই ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে পিএসজিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে চেলসি। কিন্তু এই জয়ে মুগ্ধ নন মোরিনহো। পর্তুগিজ টিভি চ্যানেল ক্যানাল ১১-এ দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'ঠিক আছে, এই ক্লাব বিশ্বকাপে কোল পালমারের পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু পুরো টুর্নামেন্টটা আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ বা ইন্টারের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রি-সিজনে খেলা সেই প্রদর্শনী ম্যাচগুলোর কথা। আমার মনে হয় এই শিরোপার আসল গুরুত্ব কেবল চেলসির জন্যই, তারা এখন এই লোগো দিয়ে অনেক জার্সি বিক্রি করতে পারবে।"
তার মতে, শিরোপার গৌরবের চেয়ে ব্র্যান্ডিং-ই ছিল ক্লাবটির মূল উদ্দেশ্য।
চেলসির সমালোচনার পাশাপাশি মরিনহো আলাদা করে প্রশংসা করেছেন প্যারিস স্যাঁ জার্মেইনের। ফরাসি ক্লাবটি এবারের মৌসুমে প্রথমবারের মতো জিতেছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তাও আবার কিলিয়ান এমবাপেকে রিয়াল মাদ্রিদে বিক্রি করার পর।
'এই মৌসুমের আসল বিজয়ী পিএসজি। ঘরোয়া লিগ তো ওরা সবসময়ই জেতে। কিন্তু এবার তারা ইউরোপও জয় করেছে, এমবাপেকে ছেড়ে দিয়ে। এটা অনেক বড় অর্জন,' বলেন ৬২ বছর বয়সী এই কোচ।
শুধু চেলসি নয়, ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলাকেও ছাড় দেননি মোরিনহো। সিটির দায়িত্ব নেওয়ার পর গার্দিওলার প্রথম বড় সিদ্ধান্ত ছিল ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের প্রথম গোলরক্ষক জো হার্টকে বাদ দিয়ে ক্লদিও ব্রাভো এবং পরে এদেরসনকে দলে আনা।
এ প্রসঙ্গে মরিনহো বলেন, 'তুমি যদি নিজের ধারণা নিয়েই মরো, তবে তুমি বোকা। কোচদের উচিত তাদের দল অনুযায়ী ভাবনাকে বদলানো। কাঠের মতো পায়ের গোলরক্ষক দিয়ে পেছন থেকে খেলা গড়তে গেলে বিপদ অবধারিত। গার্দিওলার কাছে তখন ছিল ইংল্যান্ডের সেরা গোলরক্ষক জো হার্ট। কিন্তু তিনি চাইলেন ব্রাভো, পরে আনলেন এদেরসন।'
মরিনহোর এসব মন্তব্য যে যথারীতি বিতর্ক তৈরি করবে, তা বলাই বাহুল্য। কেউ বলছেন এটি তার ব্যক্তিগত মত, কেউ বলছেন প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি এক ধরণের মানসিক চাপ তৈরি করার কৌশল। তবে এটুকু পরিষ্কার, বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে রঙিন এবং স্পষ্টভাষী কোচদের একজন মরিনহো এখনও নিজের চরিত্রে অনড়।
মরিনহোর এই সাক্ষাৎকার ইতোমধ্যেই ফুটবল বিশ্বে আলোচনার ঝড় তুলেছে। চেলসি ও গার্দিওলার প্রতি তাঁর এই খোঁচা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটুকু স্পষ্ট, মরিনহো এখনও নিজের বিতর্কিত, সাহসী ও স্পষ্টভাষী রূপে আগের মতোই রয়ে গেছেন।
Comments