ফুটবলারদের পরিচয় নিয়ে জালিয়াতি, বিকেএসপিকে নিষিদ্ধ করল বাফুফে

নাম-পরিচয়সহ বিকেএসপির চারজন খেলোয়াড়ের বিভিন্ন প্রকারের তথ্য গোপন করা হয়েছে। এই জালিয়াতিতে ভূমিকা রেখেছেন দেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দুই কোচ শাহিনুর হক ও রবিউল ইসলাম।
ছবি: সংগৃহীত

নাম-পরিচয়সহ বিকেএসপির চারজন খেলোয়াড়ের বিভিন্ন প্রকারের তথ্য গোপন করা হয়েছে। এই জালিয়াতিতে ভূমিকা রেখেছেন দেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দুই কোচ শাহিনুর হক ও রবিউল ইসলাম। তাই ছয়জনকেই নানা ধরনের শাস্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। পাশাপাশি দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা আয়োজিত সকল ফুটবল কার্যক্রম থেকে আগামী এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিকেএসপিকে।

রোববার বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক লাখ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে বিকেএসপিকে। প্রতিষ্ঠানটির দুই কোচ শাহিনুর আর রবিউলকেও সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে আগামী এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। যাদের নাম-পরিচয় জালিয়াতি করা হয়েছিল, সেই চার খেলোয়াড় হলেন তাসিন সাহেব, ইহসান হাবিব রিদুয়ান, রিফাত কাজী ও ইকরামুল ইসলাম। তাদেরকে ছয় ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিকেএসপির ফুটবল শিক্ষার্থীদের নিজেদের পক্ষে খেলানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত মে মাসে চুক্তি স্বাক্ষর করে চকবাজার কিংস ক্লাব। চুক্তি অনুসারে বসুন্ধরা গ্রুপ তৃতীয় বিভাগ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল লিগে চকবাজারের হয়ে অংশ নেন বিকেএসপির নাইমুর রহমান, হাসান মিয়া ও মো. জিফাত। এরপর বসুন্ধরা গ্রুপ দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের জন্য খেলোয়াড় নিবন্ধনের সময় বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল। সেসময় বিকেএসপির হয়ে তাসিন, রিদুয়ান ও রিফাত নিবন্ধন করতে গেলে বাফুফের নজরে পড়ে জালিয়াতির ঘটনা। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাইমুর রহমান নামে তাসিন, হাসান মিয়া নামে রিদুয়ান ও মো. জিফাত নামে রিফাত অংশ নিয়েছিলেন তৃতীয় বিভাগ লিগে।

পরবর্তীতে বাফুফের কাছ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন ওই তিনজন। বাফুফের আইন কর্মকর্তার কাছে সাক্ষাৎকারে ফুটবলাররা আরও জানান, কোচ রবিউল তথ্য গোপনের বিষয়ে অবগত আছেন এবং রবিউলের মাধ্যমেই তারা চকবাজারে সংযুক্ত হন। রবিউলের পাশাপাশি জালিয়াতির জন্য দায়ী হন শাহিনুর, যিনি চকবাজার ও বিকেএসপি উভয় দলেরই প্রধান কোচ ও টিম ম্যানেজার।

সেখানেই শেষ নয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাফুফে তাসিন, রিদুয়ান ও রিফাতকে খেলানো থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা দিলেও সতর্ক হয়নি বিকেএসপি। তাহসান হোসেন নামে তৃতীয় বিভাগ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল লিগে অংশ নেওয়া ইকরামুলকে দ্বিতীয় বিভাগ লিগে খেলায় তারা। গত ২৪ নভেম্বর কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আরামবাগ ফুটবল একাডেমির বিপক্ষে মাঠে নামেন তিনি। এরপর বাফুফের কাছে প্রতিবাদ দাখিল করে আরামবাগ। এরপর এদিন বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক জরিমানার সিদ্ধান্তগুলো।

Comments