শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে স্পেনের বিপক্ষে হার এড়াল ব্রাজিল

ছবি: এএফপি

ম্যাচ শুরুর ৩৬ মিনিটের মধ্যে স্পেনের বিপক্ষে দুই গোল হজম করা ব্রাজিল দমে না গিয়ে ঘুরে দাঁড়াল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে ফের তাদের জালে বল ঢোকায় জাগল হারের শঙ্কা। এরপর তৈরি হলো রীতিমতো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগমুহূর্তে পেনাল্টি পেল সেলেসাওরা। স্নায়ুচাপ সামলে লুকাস পাকেতা ঠাণ্ডা মাথায় নিশানা ভেদ করায় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ল কোচ দরিভাল জুনিয়রের দল।

মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ঠাসা রোমাঞ্চকর প্রীতি ম্যাচ শেষ হয়েছে ৩-৩ সমতায়। দুই ফুটবল পরাশক্তির জমজমাট লড়াইয়ে মোট তিনটি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। দুটি পায় স্প্যানিশরা, একটি ব্রাজিলিয়ানরা।

স্বাগতিকদের হয়ে স্পট-কিক থেকে জোড়া গোল করেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রদ্রি। অন্যটি আসে আরবি লাইপজিগ উইঙ্গার দানি অলমোর পা থেকে। ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেড মিডফিল্ডার পাকেতা ছাড়া রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্বজয়ীদের বাকি দুই গোলদাতা হলেন রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার রদ্রিগো ও পালমেইরাস স্ট্রাইকার এনদ্রিক।

ম্যাচে বল দখল ও আক্রমণে আধিপত্য দেখায় ২০১০ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা স্পেন। ৫৯ শতাংশ সময় বল পায়ে রেখে তারা গোলমুখে নেয় ১৯টি শট। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল আটটি। অন্যদিকে, ব্রাজিল ১২টি শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

ম্যাচের একাদশ মিনিটে জোয়াও গোমেস ডি-বক্সে ফাউল করে বসেন বার্সেলোনা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর পর রদ্রি গোলপোস্টের একেবারে মাঝ বরাবর জোরালো শট মেরে এগিয়ে দেন স্পেনকে। বলের ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেননি ডানদিকে ডাইভ দেওয়া গোলরক্ষক বেন্তো।

ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা ১৬ বছর বয়সী ইয়ামালের সঙ্গে অলমোর যুগলবন্দিতে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় ৩৬তম মিনিটে। বক্সে বল পেয়ে পায়ের কারুকাজে এক স্পর্শেই লুকাস বেরালদো ও ব্রুনো গিমারেসকে এড়িয়ে যান অলমো। এরপর বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোল করেন তিনি।

চার মিনিট পর ম্যাচের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে স্পেন। সেখানে দায় আছে তাদের গোলরক্ষক উনাই সিমোনের। অমার্জনীয় এক ভুল করে বসেন তিনি। সতীর্থকে পাস দেওয়ার চেষ্টায় রদ্রিগোর পায়ে বল ঠেলে দেন তিনি। সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেননি রদ্রিগো। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে সিমোনের মাথার ওপর দিয়ে চিপ করে ব্যবধান কমান তিনি।

প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে গোলের উল্লাস করা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমতা টানে। বদলি নামা এনদ্রিক টানা দ্বিতীয় ম্যাচে খুঁজে পান জাল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গত শনিবার রাতে তার পা থেকেই এসেছিল জয়সূচক গোল। আগামী জুলাইতে রিয়ালে যোগ দিতে যাওয়ার আগে ক্লাবটির ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে আলো ছড়ান ১৭ বছর বয়সী ফুটবলার। বক্সের ভেতরের প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ের দর্শনীয় ভলিতে স্কোরলাইন ২-২ করেন তিনি।

জয়ের লক্ষ্যে দুই দলই এরপর আক্রমণের ধার বাড়ায়। ফলে কয়েক দফা পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় বেন্তো ও সিমোনকে। ৮৭তম মিনিটে জেতার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি করে স্প্যানিশরা। পিএসজি ডিফেন্ডার বেরালদো ডি-বক্সে ফেলে দেন দানি কারভাহালকে। আবার স্পট-কিক নেওয়ার সুযোগ পেয়ে কোনো ভুল করেননি রদ্রি।

যোগ করা সময়ের পাঁচ মিনিটে চাপ বাড়ায় ব্রাজিল। ম্যাচ শেষ হতে যখন আর স্রেফ কয়েক সেকেন্ড বাকি, তখনই ওয়েন্দারসন গালেনোকে বক্সে ফাউল করেন কারভাহাল। পেনাল্টি নেওয়ার গুরুদায়িত্ব পেয়ে বাঁ দিকের পোস্ট দিয়ে সিমোনকে ফাঁকি দেন পাকেতা। ৩-৩ গোল হলে তীব্র উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে সফরকারীরা।

এই নিয়ে দুই দলের ১০ বারের সাক্ষাতে ব্রাজিলের জয় পাঁচটি। স্পেনের জিতেছে দুটি ম্যাচ। বাকি তিনটি হয়েছে ড্র। ব্রাজিলিয়ানদের বিপক্ষে জয়ের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো স্প্যানিশদের। মুখোমুখি দেখায় শেষবার তারা জিতেছিল সেই ১৯৯০ সালে।
 

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

9h ago