আমার পজিশন হুমকির মুখে নয়: জামাল

বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ফুটবলার জামাল ভূঁইয়া। যদিও তিনি দলের অধিনায়ক, তবে ধীরে ধীরে দল থেকে কিছুটা ছিটকে পড়ছেন। ৮২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাত্র তিনবার তিনি শুরুর একাদশে ছিলেন না, যার সর্বশেষটি ছিল এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে। শেফিল্ড ইউনাইটেডের হামজা চৌধুরী বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার পর, প্রশ্ন উঠছে—৩৫ বছর বয়সী এই অধিনায়কের লাল-সবুজদের সঙ্গে সময় কি শেষের পথে?

এ বিষয়সহ ফুটবল ঘিরে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া এই মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া কথা বলেন দ্য ডেইলিস্টারের আনিসুর রহমান ও আতিক আনামের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ নিচে তুলে ধরা হলো।

দ্য ডেইলি স্টার: ১২ বছর আগে আপনি প্রথম বিদেশে জন্ম নেওয়া ফুটবলার হিসেবে বাংলাদেশ দলে খেলেছিলেন। এখন হামজা চৌধুরীর মতো খেলোয়াড়েরা আপনার দেখানো পথ অনুসরণ করছেন। এটা ভেবে আপনার কেমন লাগে?

জামাল ভূঁইয়া: অবশ্যই গর্ব লাগে যে হামজা আমার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশে খেলতে এসেছে। এমনকি যখন তারিক (কাজী) বাংলাদেশে অভিষেক করেছিল, তখনও আমি গর্ববোধ করেছিলাম। আমি তারিকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম, কারণ প্রথম মৌসুমে ওর কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। এখন হামজা খেলছে, এটা খুবই ইতিবাচক বিষয়, কারণ ও আমাদের থেকে দুই-তিন স্তর ওপরে এবং এটা আমার জন্যও অনুপ্রেরণা।

ডেইলি স্টার: আপনি কি মনে করেন, হামজার আগমন দলের ড্রেসিংরুমের আত্মবিশ্বাস ও পরিবেশে প্রভাব ফেলেছে?

জামাল: ড্রেসিংরুম একই আছে, তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি, কারণ একজন মানুষ অন্যজনকে বদলে দিতে পারে না। তবে আত্মবিশ্বাসের মাত্রা আমি দেখেছি ৫০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উঠে গেছে।

ডেইলি স্টার: হামজার সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

জামাল: হামজা খুবই বিনয়ী এবং শান্ত স্বভাবের মানুষ। ভারত থেকে ফেরার পর ও এবং ওর পরিবার আমার ঢাকার বাসায় এসেছিল। পরদিন ও ইংল্যান্ড চলে যায় আর আমি ডেনমার্কে ফিরি।

ডেইলি স্টার: হামজার উপস্থিতিতে আপনি কি মনে করেন আপনার জায়গা হুমকির মুখে?

জামাল: যদি আপনি পেছনে ফিরে দেখেন, হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে আমি কখনোই সেই পজিশনে খেলিনি, যেখানে হামজা ভারত ম্যাচে খেলেছে। আমি ডান মিডফিল্ডার, বাঁ মিডফিল্ডার বা ১০ নম্বর পজিশনে খেলেছি। তবে আমি আগেও বহুবার সেই পজিশনে খেলেছি যেটা এখন হামজা ও মোহাম্মদ হৃদয় খেলছে। তাই আমি মনে করি না আমার অবস্থান হুমকির মুখে।

ডেইলি স্টার: আপনি শিলংয়ে অধিনায়ক হিসেবে মিডিয়ার সামনে এলেন, কিন্তু অনেকেই বিস্মিত হল যখন আপনাকে একাদশে বা বদলি হিসেবেও দেখা গেল না। আপনি কেমন অনুভব করলেন?

জামাল: অবশ্যই আমি হতাশ হয়েছিলাম। কারণ একজন ফুটবলারের স্বাভাবিক ইচ্ছা থাকে ম্যাচ খেলার। আমার অবস্থাও তাই ছিল। আমি মনে করি, গত সাত-আট বছরে এটিই ছিল ভারতের সবচেয়ে দুর্বল দল এবং আমাদের ম্যাচটি জেতা উচিত ছিল।

ডেইলি স্টার: কোচ বা কেউ কি আগেই জানিয়েছিল যে আপনি একাদশে থাকবেন না?

জামাল: না, কেউ আমাকে আগে কিছু বলেনি। ম্যাচের পর কোচ শুধু বলল, 'এটা দলের ভালোর জন্য করা হয়েছে।' এতটুকুই বলেছে।

ডেইলি স্টার: কিছুদিন ধরে আপনি বাংলাদেশের হয়ে পুরো ৯০ মিনিট খেলছেন না। কোচের সঙ্গে কি এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে?

জামাল: কোচ যা ভালো মনে করে সেটাই করে। তবে অবশ্যই আমি যতটা সম্ভব খেলতে চাই—এটা কোনো গোপন বিষয় নয়।

ডেইলি স্টার: আবাহনীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে আপনি ঘরোয়া মৌসুমের প্রথমার্ধ মিস করেছেন। কিভাবে আপনি নিজেকে মোটিভেটেড রেখেছেন? কী ছিল আপনার রুটিন?

জামাল: আমি ডেনমার্কে একটি ক্লাবের হয়ে খেলেছি। সত্যি বলতে, আমি যখন ফুটবল খেলি তখন অন্য কিছু ভাবি না। তাই আমার জন্য ফুটবলে মনোযোগ রাখা সহজ ছিল। সকালবেলা জিমে যেতাম আর বিকেলে ফুটবল প্র্যাকটিস করতাম।

ডেইলি স্টার: এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাকি ম্যাচগুলোর প্রতি আপনার প্রত্যাশা কী?

জামাল: আমাদের সামনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে, দুটোই ঘরের মাঠে। যদি পূর্ণ পয়েন্ট পেতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে। আশা করি আমরা যোগ্যতা অর্জন করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই গ্রুপের দলগুলোর মান অনেকটাই কাছাকাছি।

ডেইলি স্টার: ২০২৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শেষে কোচ কাবরেরা বলেছিলেন, সেটাই হওয়া উচিত আমাদের মানদণ্ড। আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ সেই মান ধরে রাখতে পারবে?

জামাল: বিশ্বকাপ বাছাইয়ে যেসব দলের বিপক্ষে আমরা খেলেছি, তারা সাফের প্রতিপক্ষদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী—এটা নির্দ্বিধায় সত্যি।

ডেইলি স্টার: আপনি এএফসি 'এ' লাইসেন্স কোর্স করছেন, তাহলে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে কোচিং নিয়ে কিছু ভাবনা আছে। সেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন?

জামাল: আমি নিশ্চিত না যে ভবিষ্যতে কোচ হব কিনা। আপাতত 'এ' লাইসেন্স নিচ্ছি যাতে কৌশল, কোচিং, শেখানো ও পদ্ধতি সম্পর্কে বেশি জানতে পারি।

Comments

The Daily Star  | English

Remittance-rich Sylhet ranks poorest in new index

Long seen as the “London of Bangladesh” for its foreign earnings and opulent villas, Sylhet has been dealt a sobering blow. The country’s first Multidimensional Poverty Index (MPI) has revealed that the division is, in fact, the poorest in Bangladesh when measured by access to education, healthc

5h ago