র‍্যাঙ্কিং দিয়ে কিছুই বোঝা যায় না: সিঙ্গাপুর কোচ ওগুরা

সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ান দলগুলোর মধ্যে শক্তিমত্তার পার্থক্য অনেকটাই কমে এসেছে। এশিয়া থেকে এবার নতুন দুটি দল বিশ্বকাপে সুযোগ করে নেওয়াই তার প্রমাণ। ঠিক এমনটাই বললেন সিঙ্গাপুর জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ সুতোমু ওগুরা। তার মতে, আধুনিক ফুটবলে র‍্যাঙ্কিং দিয়ে ম্যাচের ফল নির্ধারণ করা যায় না।

গত কয়েক সপ্তাহে উজবেকিস্তান ও জর্ডান প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে—যা এশিয়ান ফুটবলের পরিবর্তিত চিত্রই তুলে ধরে। এমন সময়ে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আগামীকাল ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৬১ নম্বরে থাকা সিঙ্গাপুর ও ১৮৩তম স্থানে থাকা স্বাগতিক বাংলাদেশ।

অর্থাৎ কাগজে-কলমে ফেভারিট সিঙ্গাপুর। কিন্তু তাদের ফেভারিট ধরা হলেও কোচ ওগুরা সেটা মানতে নারাজ। আজ ঢাকার একটি হোটেলে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ওগুরা বলেন, 'আমার কাছে র‍্যাঙ্কিংয়ের তেমন কোনো অর্থ নেই। আমাদের গ্রুপটি এখন বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি অনেকটা বিশ্বকাপের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে নতুন দলগুলো—যেমন উজবেকিস্তান ও জর্ডান—প্রথমবারের মতো কোয়ালিফাই করেছে।'

নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি আরও বলেন, 'এটাই এখন এশিয়ান ফুটবলের বাস্তবতা। আগে দলগুলোর মধ্যে বড় পার্থক্য ছিল, এখন সেটা অনেকটাই ঘুচে গেছে। সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশ—অনেক দেশই এখন এশিয়ান কাপে খেলার সম্ভাবনা রাখে।'

মূলত এই উপলব্ধি এসেছে গ্রুপ 'সি'-এর প্রথম রাউন্ডের দুটি ম্যাচ ড্র হওয়ার পর। যেখানে বাংলাদেশ বনাম ভারত ও সিঙ্গাপুর বনাম হংকংয়ের মধ্যকার দুটি ম্যাচই গোলশূন্য ড্র হয়। যা বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ওগুরা জানান, তারা ধাপে ধাপে এগোতে চান এবং এখন তাদের চোখ শুধুই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে।

'আমাদের গ্রুপে এখন খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থা। কালকের ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করার প্রক্রিয়াটা দীর্ঘ, কিন্তু আমার কাছে প্রতিটি ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখন পুরো মনোযোগ দিচ্ছি বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে,' বলেন সিঙ্গাপুর কোচ।

বাংলাদেশ দলে হামজা চৌধুরী, শমিত সোম ও ফাহামেদুল ইসলামের মতো প্রবাসী ফুটবলারদের অন্তর্ভুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সিঙ্গাপুর কোচ। তার মতে, এতে দলে শক্তি বাড়বে এবং দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যেও ভালো একটি বার্তা যাবে।

'আমি বিস্তারিত জানি না, তবে শুনেছি কয়েকজন বিদেশে বেড়ে ওঠা খেলোয়াড় এখন বাংলাদেশের হয়ে খেলছেন। শুধু হামজা নয়, ইংল্যান্ড, কানাডা ও ইতালি থেকেও খেলোয়াড় এসেছে। এটা অবশ্যই জাতীয় দলের জন্য ভালো,' বলেন ওগুরা।

সিঙ্গাপুর দলের ডিফেন্ডার আমিরুল আদলিও কোচের সুরেই বাংলাদেশের প্রতি সম্মান প্রকাশ করেন এবং জানান, প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন, 'গত কিছু ম্যাচে আমি দেখেছি, বাংলাদেশ ভালো খেলছে। ভারতের সঙ্গে ড্র করেছে। বিষয়টা শুধু হামজার না, পুরো দল নিয়েই আমাদের ভাবতে হচ্ছে।'

'বাংলাদেশ একটি ভালো দল এবং ওদের মাঠ সবসময় দর্শকে পরিপূর্ণ থাকে। তাই এটা একটা কঠিন কিন্তু উপভোগ্য ম্যাচ হতে যাচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

গত ৫ জুন মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ছয় ম্যাচের জয়হীন ধারা ভেঙে বাংলাদেশে এসেছে সিঙ্গাপুর দল। ওই ছয় ম্যাচের মধ্যে তারা দুটি ড্র করে, বাকি চারটি হারে, যার মধ্যে মার্চে নেপালের কাছে ১-০ গোলের পরাজয়ও ছিল।

ইতিহাস বলছে, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর এর আগে মাত্র দুবার মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে ঢাকায় একটি প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলে হারে বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

‘People's will, not mine’

Yunus tells Malaysia's Bernama why he stepped into Bangladesh's political hot seat

8h ago