ভিনিসিয়ুসের গোলে বিশ্বকাপের টিকিট পেল ব্রাজিল

ফুটবলের ইতিহাসে একমাত্র ব্রাজিল দলই বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলেছে। সেই দলটি এবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বেশ ধুঁকেছে। মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত প্যারাগুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পেরেছে দলটি।
সাও পাওলোতে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের হয়ে কার্লো আনচেলত্তির অভিষেকটাও সুখকর ছিলো না। ইকুয়েডরের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে শুরু। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই কাঙ্ক্ষিত জয় পেয়েছেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদে থাকাকালীন সময়ে তার দীর্ঘদিনের শিষ্য ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দেওয়া একমাত্র গোলে জয় মিলে তাদের।
এই জয়ের ফলে ১৬ ম্যাচে ব্রাজিলের পয়েন্ট দাঁড়াল ২৫, এবং বাকি আছে মাত্র দুই রাউন্ডের খেলা। অর্থাৎ, পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য কনমেবলের ছয়টি স্বয়ংক্রিয় কোটার একটি নিশ্চিতভাবেই দখল করে নিয়েছে। সমান ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে আগের দুই মৌসুমে দারুণ পারফর্ম করা ভিনিসিয়ুস জাতীয় দলে সে অর্থে জ্বলে উঠতে পারেন না। তবে আনচেলত্তি এদিন ঠিকই তার সেরাটা বের করতে পেরেছেন। এদিন তার পারফরম্যান্স ছিল চোখধাঁধানো। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন। তাতে সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোর তুলনায় আরও পরিপক্ব এক ব্রাজিল দলকেও সামনে এগিয়ে নিলেন।
আনচেলত্তি এদিন বেঞ্চে কিছুই রাখেননি। নিজের সেরা সব অস্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রাফিনিয়া, ম্যাতিয়াস কুনিয়ার তৈরির দুর্ধর্ষ এক আক্রমণভাগ। ঘরের মাঠে, এক কঠিন পরীক্ষায়। আর সে পরীক্ষায় সফল হয়েই স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি এনে দিয়েছেন।
ম্যাচের শুরু থেকেই মাঝমাঠের দখল রেখেই খেলছিল ব্রাজিল। নিজেদের মধ্যে বল আদান-প্রদান হচ্ছিল। তাদের সামনে বেশ কয়েকটি সুযোগও আসে। মার্টিনেলির একটি ভলি, আর গোলের আগে সবচেয়ে পরিষ্কার সুযোগটি এসেছিল কুনিয়ার পায়ে। কিন্তু বাইরে মেরে বসেন তিনি।
তখন মনে হচ্ছিল ব্রাজিল আবারও নিজেই নিজের বাধা হয়ে দাঁড়াবে… ঠিক তখনই হাজির ভিনিসিয়ুস। ৪৪তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে রাফিনিয়া বলের নিয়ন্ত্রণ হারালেও সেই বল কুনিয়া দখলে নিয়ে বাইলাইনে গিয়ে দারুণ এক কাটব্যাক করেন। এবং তা জালে জড়িয়ে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন ভিনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও সমান আগ্রহ আর আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে নামে ব্রাজিল। রাফিনিয়া মাঝমাঠে নেমে বল তৈরিতে সহায়তা করছিলেন। পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে অসাধারণ খেলেছেন। উইঙ্গারদের গতির কারণে প্যারাগুয়ে পেছনে সরে যেতে বাধ্য হয়। কুনিয়ার সামনে আরেকটি সুযোগ এসেছিল, তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার গোললাইনে এসে ঠেকিয়ে দেন।
সানাব্রিয়ার একটি দুর্বল শট কিছুটা নীরবতা এনেছিল সাও পাওলোয়। এরপর গোমেজের একটি সুযোগে কিছুটা চাপ তৈরি হয়, আর তখন থেকেই গ্যালারিতে শুরু হয় হালকা অসন্তোষের শব্দ। সমর্থকরা অতীতের দুঃস্বপ্ন ফিরতে দিতে চায়নি। মার্তিনেলি এবং গুইমারাইসের দুটি শট থেকে ব্রাজিল ব্যবধান বাড়াতে পারত, তবে গোলরক্ষক দারুণভাবে রক্ষা করেন।
Comments