লাল জার্সি নিয়ে বিতর্কে নতি স্বীকার ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের

বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই ব্রাজিলে উৎসবের আমেজ। মাঠের লড়াই শুরু হওয়ার অনেক আগেই জার্সি, পতাকা, সাজসজ্জা নিয়ে উন্মাদনায় মেতে ওঠেন সমর্থকরা। কিন্তু আসন্ন ২০২৬ বিশ্বকাপকে ঘিরে একেবারেই ভিন্ন এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল দেশটির ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। কারণ, নাইকি ব্রাজিলের জন্য বানাচ্ছিল লাল রঙের অ্যাওয়ে জার্সি।
গত এপ্রিল মাসে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয় যে ব্রাজিল জাতীয় দল আসন্ন বিশ্বকাপে লাল জার্সি পরতে পারে। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। কারণ, ব্রাজিলে লাল রঙ সরাসরি রাজনীতির প্রতীক। এটি বামপন্থি ক্ষমতাসীন দল 'ওয়ার্কার্স পার্টি'র রঙ, যেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
অন্যদিকে ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সমর্থকেরা সবসময় দেশের ঐতিহ্যবাহী সবুজ-হলুদ ব্যবহার করেন রাজনৈতিক সমাবেশে। ফলে জার্সির রঙের বিষয়টি অচিরেই ফুটবল থেকে সরে গিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করে।
ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের নবনিযুক্ত সভাপতি সামির জাউদ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার স্পষ্ট অবস্থান জানান। ব্রাজিলের জনপ্রিয় ক্রীড়াচ্যানেল স্পোর্ত টিভিকে তিনি বলেন, 'আমি লাল জার্সির উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। কারণ এটা পরিষ্কার যে অ্যাওয়ে জার্সির রঙ নিয়ে মানুষের রাজনৈতিক অবস্থান জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের পতাকার রঙই জাতীয় দলের আসল পরিচয়, তাই জার্সিতেও সেই চার রঙ—নীল, হলুদ, সবুজ ও সাদা—ব্যবহার করা উচিত।'
তিনি আরও বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাল রঙের বিপক্ষে থাকলেও তার কারণ রাজনৈতিক নয়; বরং জাতীয় প্রতীককে অক্ষুণ্ণ রাখা।
নাইকি এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে এবং নতুন অ্যাওয়ে কিট হিসেবে নীল রঙের জার্সি তৈরির কাজ শুরু করেছে। জানা গেছে, লাল জার্সির পুরো পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল সিবিএফের সাবেক সভাপতি এডনালদো রদ্রিগেসের সময়ে। সামির জাউদ দায়িত্ব নেওয়ার পরই সেই পরিকল্পনায় পূর্ণচ্ছেদ টানা হলো।
লাল জার্সির খবর প্রকাশের পর খ্যাতিমান ক্রীড়া সাংবাদিক পাওলো ভিনিসিউস কোয়েলো মন্তব্য করেছিলেন, 'এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার ঘাটতি স্পষ্ট। বিশেষ করে যখন একটি দল ইতিমধ্যেই হলুদ রঙকে নিজেদের রাজনৈতিক প্রতীকে রূপ দিয়েছে, তখন লাল জার্সি আরও বড় বিভ্রান্তি তৈরি করত।'
Comments