টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ

David Warner

যে উইকেটে আগের ম্যাচে প্রায় দুইশো ছুঁইছুঁই রান করল দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই উইকেটে নেমে কেমন যেন খোলসবন্দি হয়ে রইলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ দেখাতে না পেরে দেড়শোর আগেই থামল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। রান তাড়ায় অস্টেলিয়ার ইনিংস বৃষ্টি বাগড়া পড়লেও ডেভিড ওয়ার্য়নার, ট্রেভিস হেডদের ঝাঁজে তারা সমীকরণ মিলিয়ে ফেলল তুড়ি মেরে।

অ্যান্টিগায় সুপার এইটের লড়াই হয়েছে একপেশে। ডিএলএস মেথডে বাংলাদেশকে ২৮ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করে স্রেফ ১৪০ রানের পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। ১১.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে ১০০ রান তুলতে বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। বৃষ্টি আইনে তাই সহজেই জিতে পুরো পয়েন্ট তুলে নিল মিচেল মার্শের দল।

দলকে জিতিয়ে ৩৫ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন ওয়ার্নার, হেড ২১ বলে করে যান ৩১। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নেমে স্রেফ ৬ বলের উপস্থিতিতে করেন ১৪ রান। তবে এদের কেউ নন, ম্যাচ সেরা কামিন্স। বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ দিকে হানা দিয়ে হ্যাটট্রিক তুলে নেন তিনি।

অ্যান্টিগার মাঠের উইকেট ব্যবহৃত হলেও ১৪১ রানের লক্ষ্য আসলে বেশ সাদামাটা।  রান তাড়ায় দুরন্ত শুরু করে দুই অজি ওপেনার  হেড ও ওয়ার্নার তা বুঝিয়েও দেন দ্রুত।  পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে আনেন ৫৯ রান। পাওয়ার প্লের পরই নামে বৃষ্টি। তাতে বেশ কিছুটা সময় বন্ধ থাকে খেলা।

বৃষ্টি বিরতিতে খানিকটা মোমেন্টাম হারায় অস্ট্রেলিয়া। বল করতে এসে উইকেট তুলেন রিশাদ হোসেন, রিশাদের লেগ স্পিনে ভড়কে বোল্ড হন ২১ বলে ৩১ করা হেড। পরের ওভারে তিনি ফেরান মিচেল মার্শকেও। এতে ম্যাচের প্রভাব ততটা ছিলো না।

ওয়ার্নার চালিয়ে যেতে থাকেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল যোগ দিয়ে করতে থাকেন আগ্রাসী ব্যাটিং। রিশাদের তৃতীয় ওভার থেকে আসে ১৩ রান।  তাসকিনকে ছক্কায় উড়িয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়া স্পর্শ করে শতরান, এরপর আবার নামে বৃষ্টি। ম্যাচ তখন অস্ট্রেলিয়ার অনেকটা মুঠোয়। এই ধাপে অনেকটা অপেক্ষার পর আর খেলা শুরুর অবস্থা আসেনি। ম্যাচের সমাপ্তি টানেন আম্পায়াররা।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে  ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মিচেল স্টার্কের সোজা বল সামান্য নিচু হয়েছিলো, ডিফেন্স করতে গিয়ে সামলাতে পারেননি তানজিদ হাসান তামিম। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন তিনি।

ক্রিজে এসেই স্টার্ককে চার মেরে শুরু করেন শান্ত। আরেক প্রান্তে লিটন তখন খোলসবন্দি। জশ হ্যাজেলউডকে প্রথম ওভার দেন মেডেন। ১০ বলে গিয়ে করেন ১ রান। এরপর কিছুটা ডানা মেলে মিচেল স্টার্কের বলে বের করেন দুই বাউন্ডারি।

শান্ত ছিলেন সাবলীল, রানের খোঁজে থেকে গতি বাড়ান নিয়মিত। অ্যাডাম জাম্পাকেও সুযোগ পেয়ে মারেন চার। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৩৯ তুলে বাংলাদেশ। লিটন পাওয়ার প্লের পরও ভুগতে থাকেন। একের পর এক ডটের চাপ তাকে ও দলকে দেয় অস্বস্তি। সেই অস্বস্তি দূর করতে অ্যাডাম জাম্পাকে স্লগ সুইপ মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ডানহাতি ব্যাটার। ২৫ বলের উপস্থিতিতে তিনি করেন স্রেফ ১৬ রান।

দ্রুত রান আনার চিন্তায় চারে রিশাদকে নামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু লাভ হয়নি। তিনি ৪ বলে ২ রান করে দেন ক্যাচ। অধিনায়ক দিচ্ছিলেন আস্থা, তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ইনিংস টানার পথে ছিলেন তিনি। তবে বাজে ছন্দ থেকে বেরিয়ে ফিফটি পাওয়া হয়নি তার। শুরুর সাবলীলতা হারিয়ে তিনিও ডট বলে চাপ নিজের দিকে নিয়ে নিচ্ছিলেন।   জাম্পার বলে ৩৬ বলে ৪১ রান করে হন এলবিডব্লিউ।

সাকিব আল হাসান এসেও ধুঁকতে থাকেন। জড়তা কাটিয়ে মারার চিন্তায় যেতে পারেননি তিনি। ১৭তম ওভারে মার্কাস স্টয়নিসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় তার রান ১০ বলে ৮। আরেক পাশে হৃদয় তখন থিতু, যদিও শুরুতে তিনিও খেলছিলেন বেশ সতর্ক হয়ে। অবশ্য শেষ দিকে তিনিই  কিছুটা মেলে ধরেন ডানা। বাড়াতে থাকেন রান।

তবে বাংলাদেশ দেড়শো পেরুতে পারেনি কারণ অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও এদিন ব্যর্থ (৩ বলে ২)। প্যাট কামিন্সের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে স্টাম্পে নামিয়ে বোল্ড তিনি। মাহমুদউল্লাহকে ফেরানোর পরের বলেই শেখ মেহেদীকে আউট করেছিলেন কামিন্স। সেটা ছিলো ওভারের শেষ বল।  হ্যাটট্রিকের সুযোগ আসে তার ইনিংসের শেষ ওভারে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন অজি পেসার। কামিন্সকে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ধরা দেন ২৮ বলে ৪০ করা হৃদয়।

বাংলাদেশ দেড়শোর নিচে আটকে যাওয়ার পরই ম্যাচের ফলের আভাস মিলছিলো। শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া সেই আভাসই সত্য করে দাপট দেখিয়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Trump brokered ceasefire agreement in contact with Israel, Iran: White House official

Meanwhile, fresh series of explosions were reported in the Iranian capital Tehran, as per AFP journalist

1d ago