এশিয়া কাপ ২০২৩

অতি লোভে বিপদ ডেকে এনেছেন ব্যাটাররা!

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গত এক বছরে গড়ে তিনশোর বেশি রান হচ্ছে। দারুণ উইকেট, দ্রুত আউটফিল্ড আর ছোট বাউন্ডারি। ব্যাটারদের জন্য কন্ডিশন ছিলো লোভনীয়। কিন্তু অতি লোভ করতে গেলে আবার বিপদ। সেটাই হয়েছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান

বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যাটিং স্বর্গে কাজটা কি অতি সহজ ভেবেছিলেন? পাকিস্তানের বোলিং শক্তি বিবেচনায় না নিয়ে তাদের খেলার ধরণ সেই আভাসই দেয়। সহকারি কোচ নিক পোথাসও বললেন, সম্ভবত তেমন চিন্তায় ঘুরেছে। যাতে শট নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে গড়বড় করে ডুবেছে দল।

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গত এক বছরে গড়ে তিনশোর বেশি রান হচ্ছে। দারুণ উইকেট, দ্রুত আউটফিল্ড আর ছোট বাউন্ডারি। ব্যাটারদের জন্য কন্ডিশন ছিলো লোভনীয়। কিন্তু অতি লোভ করতে গেলে আবার বিপদ। সেটাই হয়েছে বাংলাদেশের।

ভুল সময়ে ভুল শটের মহড়ায় এমন ব্যাটিং স্বর্গেও বাংলাদেশ ১১ ওভারের বেশি থাকতে গুটিয়ে যায় ১৯৩ রানে। যে রান তুলে জিততে পাকিস্তানের কোন সমস্যা হয়নি।

ম্যাচ শেষে দলের হয়ে কথা বলতে এসে পোথাস জানান, ভুলটা তাদের ব্যাটাররা করেছেন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে,  'টস জিতে ব্যাটিং করার মানে আমরা বড় রান করতে চেয়েছি। আমরা যেসব পথ বেছেছি তাতে (শট মারার) হয়ত ওদের পেস আক্রমণের বিপক্ষে তাতে কাজটা কিছুটা সহজভাবে নিয়ে নিয়েছিলাম। আদর্শভাবে আমাদের আরও লম্বা সময় ব্যাট করা দরকার ছিল, রান আনা দরকার ছিল। কিন্তু এটাই খেলার ধরণ, এটাই টপ পেস আক্রমণের বিপক্ষে হয়ে যায়। এখান থেকে উন্নতির জায়গা আছে।'

তবে আত্মপক্ষ সমর্থন করতেও পিছপা হলেন না পোথাস। এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিন ম্যাচে দুইটা ছিল প্রতিপক্ষের নিজেদের কন্ডিশনে। এটাকে একটা ঢাল হিসেবে হাজির করতেও চাইলেন তিনি,  'আমরা এখনো পর্যন্ত তিনটা ম্যাচ খেলেছি। দুইটা ম্যাচই ছিল হোম টিমের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডিতে খেললাম তাদের হোম কন্ডিশনে। পাকিস্তানের বিপক্ষে লাহোরে খেললাম তাদের হোম কন্ডিশনে। এটা সব সময় কঠিন, সব সময়ই ভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে।'

খেলা শেষে সাকিব আল হাসান বলছিলেন, তাদের ব্যাটিংয়ে অবস্থা এখন 'হট এন্ড কোল্ড।' মানে এই আকাশে উড়ছে তো এই মাটিতে আছড়ে পড়ছে। এই জায়গায় ধারাবাহিকতার ঘাটতির পেছনে সঠিক সমন্বয় আর পালাবদলকে কারণ হিসেবে দেখছেন সহকারি কোচ, 'আমরা যেটার দিকে মুখিয়ে আছে সেটা হচ্ছে ধারাবাহিকতা। আমরা ক্যান্ডিতে ভালো ব্যাট করিনি, আবার লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খুব ভালো ব্যাট করেছি। আজ রাতে (গতকাল) আবার প্রয়োগ করতে পারিনি ব্যাটিংয়ে। আমরা নিজেদের জন্য সঠিক সমন্বয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আমরাদের দলটা পালাবদলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কিছু ধারাবাহিকতা দরকার, এটাই আপাতত লক্ষ্য।'

অল্প পুঁজি নিয়েও বোলাররা তাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কন্ডিশন প্রতিকূল থাকায় তাদের পক্ষে অভাবনীয় কিছু করা সম্ভব ছিল না। বোলারদের কৃতিত্ব দিয়ে ব্যাটারদেরই সব দায় দিলেন পোথাস,  'আমাদের বোলিং আক্রমণ দারুণ করছে। আমরা যদি একটা ভালো পুঁজি গড়তে পারি তারা আমাদের জন্য কাজটা করে দেয়। গত বছর দেখা গেছে স্পিন আক্রমণ ও পেস আক্রমণ কতটা ভালো ছিল বাংলাদেশের। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আমি বলব আজ আমরা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেছি। আমরা সম্ভবত ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। পালাবদলের মধ্য থাকা দলের জন্য এটা খুব চ্যালেঞ্জের।'

Comments