এশিয়া কাপ ২০২৩
লাইভ আপডেট

বিফলে হৃদয়ের পারফরম্যান্স, বাংলাদেশকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার রেকর্ড জয়

এই হারে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন কার্যত শেষ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের দলের।
ছবি: এএফপি

শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু পেল বাংলাদেশ। তবে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পর খেই হারাল তারা। ২৮ রানের মধ্যে পড়ল ৪ উইকেট। চাপের মুখে দলের হাল ধরে লড়াই করলেন তাওহিদ হৃদয়। লম্বা সময় তাকে সঙ্গ দেওয়া মুশফিকুর রহিম রানের চাহিদা মেটাতে গিয়ে আউট হলেন অসময়ে। হৃদয় ফিফটি হাঁকিয়ে আরও দূর যেতে থাকলে বেঁচে ছিল জয়ের আশা। তবে তিনি আউট হওয়ার পর সব ভেস্তে গেল।

শনিবার কলম্বোতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে লঙ্কানদের কাছে ২১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। চ্যালেঞ্জিং উইকেটে ১১ বল বাকি থাকতে তারা অলআউট হয়েছে ২৩৬ রানে। দলের পক্ষে ৯৭ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে সর্বোচ্চ ৮২ রান আসে হৃদয়ের ব্যাট থেকে। আর কেউ যেতে পারেননি ৩০ রান পর্যন্তও। মুশফিক ২৯, মেহেদী হাসান মিরাজ ২৮ ও নাঈম শেখ ২১ রান করে ফেরেন। শেষ উইকেটে নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ ১২ বলে ২০ রান যোগ করলে তা কেবল হারের ব্যবধানই কমায়। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩ উইকেট করে নেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা, মাথিশা পাথিরানা ও মাহিশ থিকশানা।

এই হারে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন বলা চলে শেষ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের দলের। এই পর্বের আগের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছেও হেরেছিল তারা। অন্যদিকে, নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা ১৩ ওয়ানডে জিতে রেকর্ড গড়ল শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল করল তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪৮.১ ওভারে ২৩৬ (নাঈম ২১, মিরাজ ২৮, লিটন ১৫, সাকিব ৩, মুশফিক ২৯, হৃদয় ৮২, শামীম ৫, নাসুম , তাসকিন ১, শরিফুল ৭, হাসান ; রাজিথা ০/২৯, থিকশানা ৩/৬৯, শানাকা ৩/২৮, পাথিরানা ৩/৫৮, ওয়েলালাগে ১/২৬, ধনঞ্জয়া ০/১৮)।

নাসুমের বিদায়ে থামল বাংলাদেশ

শেষ উইকেটে নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ অসম্ভব কিছু করে দেখানোর আশা জাগালেন। দ্রুত কিছু রান আনলেন তারা। তবে শ্রীলঙ্কা হাতছাড়া হতে দিল না ম্যাচ। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে মাথিশা পাথিরানা ইয়র্কারে বোল্ড করে দিলেন ১৫ বলে ১৫ রান করা নাসুমকে। ২৩৬ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। হাসান অপরাজিত থাকলেন ৭ বলে ১০ রানে।

বোল্ড শরিফুল

বাংলাদেশের নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হলেন শরিফুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কার পেসার মাথিশা পাথিরানার বলে ইনসাইড আউট শট খেলতে গিয়ে স্টাম্প হারালেন তিনি। ৭ বলে তার রান ৭। ৪৭তম ওভারে ২১৬ রানে ৯ উইকেট পড়ল টাইগারদের। তাদের হার প্রায় নিশ্চিত।

ছবি: এএফপি

একই ওভারে থিকশানার শিকার তাসকিন

৪৪তম ওভারে জোড়া শিকার ধরলেন স্পিনার মাহিশ থিকশানা। স্লগ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হলেন তাসকিন আহমেদ। রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি। ৩ বল খেলে তাসকিনের রান ১। ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ২০০। জিততে ৩৬ বলে আরও ৫৮ রান চাই তাদের। বিপরীতে, শ্রীলঙ্কার দরকার মাত্র ২ উইকেট। ফলে তাদের জয়ের সম্ভাবনা এখন ভীষণ জোরালো।

আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলতে থাকা হৃদয় নিভে গেলেন

ফ্রি-হিটে মাহিশ থিকশানার মাথার উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু পরের বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে। ক্যারম বলে পরাস্ত হলেন তিনিও। রিভিউ অবশ্য নিয়েছিলেন হৃদয়। তবে আম্পায়ার্স কলের কারণে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেল, বল গিয়ে আঘাত করত লেগ স্টাম্পের বাইরের অংশে। তার উইকেটের অপেক্ষাতেই ছিল শ্রীলঙ্কা। ৯৭ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮২ রানে থামল হৃদয়ের লড়াই। ৪৪তম ওভারে তার আউটে বাংলাদেশের জয়ের আশা বলা চলে শেষ হয়ে গেল।

টিকতে পারলেন না শামীম

সাতে নেমে ফিনিশিংয়ের দায়িত্ব পালনে আবারও ব্যর্থ হলেন শামীম হোসেন। আবারও দ্রুত ফিরলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শ্রীলঙ্কার স্পিনার মাহিশ থিকশানার ক্যারম বলে এলবিডব্লিউ হলেন তিনি। রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি। ১০ বলে তিনি করলেন ৫ রান। তাওহিদ হৃদয়ের ওপর লক্ষ্য তাড়ার সব বোঝা চাপিয়ে ফিরলেন শামীম। ৪২ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৮৩ রান। ক্রিজে ৮৮ বলে ৬৯ রান করা হৃদয়ের সঙ্গী নাসুম আহমেদ।

১০ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ৮১

ইনিংসের শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট খুইয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তুলেছিল ৮১ রান। তাদের বিপক্ষে জয়ের জন্য বাংলাদেশেরও দরকার ঠিক ৮১ রান। হাতে রয়েছে ৫ উইকেট। ৪০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ১৭৭ রান। ক্রিজে থিতু তাওহিদ হৃদয় ৮১ বলে ৬৫ ও শামীম হোসেন ৭ বলে ৪ রান খেলছেন।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে হৃদয়ের ফিফটি

মুশফিকুর রহিমের বিদায়ের এক বল পরই চার মেরে হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন তাওহিদ হৃদয়। ১৩ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এটি তার চতুর্থ ফিফটি। ব্যক্তিগত মাইলফলকে যেতে তার লাগল ৭৩ বল। তার ইনিংসে চার ৪টি। শ্রীলঙ্কার দেওয়া লক্ষ্য মেলাতে হৃদয়ের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ।

আগ্রাসী হতে গিয়ে সাজঘরে ফিরলেন মুশফিক

আগ্রাসী হতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে দাসুন শানাকার ওপর চড়াও হওয়ার পরিকল্পনায় উল্টো নিজেই আটকে গেলেন। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে বল চলে গেল মিডঅফে থাকা কাসুন রাজিথার হাতে। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধরলেন তৃতীয় শিকার। ৪৮ বলে ৪ চারে মুশফিকের সংগ্রহ ২৯ রান। মাঠ ছাড়ার আগে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১১২ বলে ৭২ রানের জুটি গড়লেন তিনি। ৩৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ১৬০ রান। ক্রিজে হৃদয়ের সঙ্গী শামীম হোসেন।

মুশফিক-হৃদয়ের জুটিতে বাংলাদেশের প্রতিরোধ

৮৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের হাল ধরলেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়। চাপ সামলে শ্রীলঙ্কার বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ লড়াই চালাচ্ছেন তারা। তাদের মধ্যকার পঞ্চম উইকেট জুটির রান ছাড়িয়ে গেছে পঞ্চাশ। দলীয় এই মাইলফলকে পৌঁছাতে লেগেছে ৮৪ বল। জুটিতে অগ্রণী ভূমিকায় আছেন তরুণ হৃদয়। অভিজ্ঞ মুশফিককে দেখা যাচ্ছে সহযোগীর দায়িত্বে। ৩৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৫ রান। মুশফিক ৩৭ বলে ২৩ ও হৃদয় ৫৬ বলে ৩৪ রানে ক্রিজে আছেন। জয়ের জন্য ১৭ ওভারে টাইগারদের চাই আরও ১২৩ রান।

বিপদ বাড়িয়ে লিটনও সাজঘরে

ত্রাতা হতে পারলেন না লিটন দাস। বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়িয়ে বিদায় নিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিনার দুনিথ ভেলালাগের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ঠিকমতো সংযোগ করতে পারলেন না। শুরুতে গ্লাভসে জমাতে ব্যর্থ হলেও দুই হাঁটুর ফাঁকে বল আটকালেন কুসল মেন্ডিস। এরপর তা গ্লাভসবন্দি করে মাতলেন উল্লাসে। ২৪ বলে ১ চারে লিটনের রান ১৫। ১৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৮৪ রান। চাপমুক্ত হতে বড় একটি জুটি গড়তে হবে তাদের। সেজন্য ক্রিজে থাকা মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবে তারা।

ছবি: এএফপি

সাকিবের আউটে চাপে বাংলাদেশ

১৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ল বাংলাদেশ। রিভিউ নিয়ে সাকিব আল হাসানকে ফেরাল শ্রীলঙ্কা। পেসার মাথিশা পাথিরানার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে পরাস্ত হলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বল গ্লাভসে জমিয়ে উল্লাসে মাতলেন কুসল মেন্ডিস। তবে লঙ্কান ক্রিকেটারদের জোরালো আবেদন সত্ত্বেও সাড়া দিলেন না আম্পায়ার। নেওয়া হলো রিভিউ। আলট্রাএজে দেখা গেল, বল পেছনে যাওয়ার আগে ছুঁয়েছে ব্যাট। পাল্টে যাওয়া সিদ্ধান্তে ৭ বলে ৩ রান করে আউট সাকিব। ১৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৭৩। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গে যোগ দিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।

নাঈমের সংগ্রামের অবসান ঘটল বাজে কায়দায়

ক্রিজে শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন নাঈম শেখ। রানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছিল তাকে। ডট বল খেলছিলেন একের পর এক। তার ইনিংসের ইতি ঘটল বাজেভাবে। দাসুন শানাকার শর্ট বল কীভাবে খেলবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন নাঈম। শেষ পর্যন্ত যা খেললেন সেটাকে কোনো শটের তকমা দেওয়া ভীষণ কঠিন। আকাশে উঠে যাওয়া বল অনায়াসে গ্লাভসবন্দি করলেন উইকেটরক্ষক কুসল মেন্ডিস। এতে ভালো শুরুর পর অল্প সময়ের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারাল বাংলাদেশ। দুজনকেই সাজঘরে পাঠালেন শানাকা। ৪৬ বলে ১ চারে নাঈমের সংগ্রহ ২১ রান। ১৪ ওভার শেষে টাইগারদের স্কোর ২ উইকেটে ৬০ রান। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটার লিটন দাস ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

মিরাজকে উপরে খেলানোর কারণ
ফাইল ছবি: এএফপি

জুটি ভাঙল মিরাজের বিদায়ে

শ্রীলঙ্কাকে ব্রেক থ্রু দিলেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বাংলাদেশ হারাল প্রথম উইকেট। তার খাটো লেংথের বল পুল করার চেষ্টায় টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেললেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিডউইকেটে ক্যাচ লুফে নিলেন বদলি ফিল্ডার দাসুন হেমন্থা। ২৯ বলে ৪ চারে ২৮ রানে বিদায় নিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকা মিরাজ। এতে ভাঙল ৬৭ বলে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। ১২ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৭ রান। ক্রিজে নাঈম শেখের সঙ্গী হলেন লিটন দাস।

মিরাজ-নাঈমের উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ

মাথিশা থিকশানার বল মেহেদী হাসান মিরাজ ফ্লিক করে মিডউইকেট দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন সীমানার বাইরে। তাতে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির রান ছাড়িয়ে গেল পঞ্চাশ। ইনিংসের একাদশ ওভারে দলীয় এই মাইলফলক স্পর্শ করল টাইগাররা। ডানহাতি মিরাজের সঙ্গে ক্রিজে আছেন বাঁহাতি নাঈম শেখ। এবারের এশিয়া কাপে উদ্বোধনী জুটিতে এটি তাদের দ্বিতীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি।

বাংলাদেশের সাবধানী শুরু

নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজের উদ্বোধনী জুটির ওপরই আস্থা রাখল টিম ম্যানেজমেন্ট। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসের গোড়াপত্তন করলেন তারা। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় দলকে ভিত গড়ে দেওয়ার দায়িত্বটা তাদের কাঁধে। সেটা পালনের চেষ্টায় ব্যাটিংয়ে সাবধানতা অবলম্বন করছেন দুজন। তবে মিরাজকে ব্যাট হাতে সাবলীল দেখালেও নাঈম বেশ সংগ্রাম করছেন। আশার খবর হলো, ১০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ৪৭ রান জমা করতে কোনো উইকেট পড়েনি বাংলাদেশের। নাঈম ৩৭ বলে ১৯ ও মিরাজ ২৩ বলে ২২ রানে খেলছেন।

সাদেরার দারুণ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার চ্যালেঞ্জিং পুঁজি

দলের চাপে নেমেছিলেন, খেলেছেন ইনিংসের পুরোটা। আগের দেখায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ফিফটি করা সাদেরা সামারাবিক্রমা এবারও  জ্বলে উঠলেন। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হলেও তার আগে খেলে যান ৭১ বলে ৯৩ রানের ইনিংস। তার ব্যাটে চড়ে ৫০ ওভারে ২৫৭ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। উইকেট ব্যাট করার জন্য খুব সহজ না। এমন উইকেটে এই রান তাড়া করে জিততে হলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের নিতে হবে দায়িত্ব, দেখাতে হবে চতুরতা।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা:  ৫০ ওভারে ২৫৭/৯ (নিশানকা ৪০, করুনারত্নে ১৮, মেন্ডিস ৫০, সাদেরা ৯৩, আসালাঙ্কা  ১০, ধনঞ্জয়া ৬, দাসুন ২৪ , ওয়ালেগেলে ৩, থিকসেনা ১, রাজিতা ১*; তাসকিন ২/৬২, শরিফুল ২/৪৩ , হাসান ৩/৫৭, সাকিব ০/৪৪, নাসুম ০/৩১, মিরাজ ০/১৪ ) 

শেষ ওভারে তাসকিনের শিকার থিকসেনা

শেষ ওভার করতে এসে টেল এন্ডার মাহেশ থিকসেনাকে বাউন্সার দিলেন তাসকিন আহমেদ। তাতে গ্লাভস লাগিয়ে কিপারের হাতে জমা পড়েন তিনি। ২৪৬ রানে ৮ম উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। 

ওয়েলেগেলে রান আউট 

হাসান মাহমুদের ইয়র্কার বল সামলেই প্রান্ত বদল করতে গিয়েছিলেন সাদেরা সামারাবিক্রমা। আরেক প্রান্ত থেকে দুনিত ওয়েলেগে সময়মত পৌঁছাতে পারেননি। পা দিয়ে বল মেরে স্টাম্প ভেঙে দেন হাসান। ৪৯তম ওভারে ২৪৩ রানে শ্রীলঙ্কা হারায় সপ্তম উইকেট।

শানাকাকে বোল্ড করে জুটি ভাঙলেন হাসান

৬ষ্ঠ উইকেটে দারুণ জুটি গড়েছিলেন সাদেরা সামারাবিক্রমা আর দাসুন শানাকা। ৫৭ বলে তাদের ৬০ রানের জুটি ভেঙেছেন হাসান মাহমুদ। ডানহাতি পেসারের বলে স্কুল শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শানাকা। ৩২ বলে ২৪ করেন তিনি। ৪৭তম ওভারে ২২৪ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা। 

সাদেরার ফিফটি

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের দেখাতেও ফিফটি করেছিলেন সাদেরা সামারাবিক্রমা। সুপার ফোরের ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেমেও ফিফটি পেলেন এই ডানহাতি। ৪৫ বলে শরিফুল ইসলামকে ৪ মেরে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি। ৪৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৫  উইকেটে ২১৭। ৫৫ বলে ৬৬ রান করে ক্রিজে আছেন সাদেরা। ৫৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৯ করে তার সঙ্গী দাসুন শানাকা। 

ধনঞ্জয়াকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেললেন হাসান
আরও একটি জুটির খুঁজে থাকা শ্রীলঙ্কার ইনিংসে আঘাত হানলেন হাসান মাহমুদ। দারুণ সিম ডেলিভারিতে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তিনি। ৩৮তম ওভারে ১৬৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ধনঞ্জয়া ফিরেছেন ১৬ বলে ৬ রান করে। 

Taskin Ahmed

এবার আসালাঙ্কাকে আউট করলেন তাসকিন
শরিফুল ইসলামের জোড়া আঘাত সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে তাদের পথে কাঁটা হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। চাপ তৈরি করে ফিরিয়েছেন চারিথা আসালাঙ্কাকে। তাসকিনের বল পুল করতে গিয়ে টপ এজড হয়ে সাকিব আল হাসানের হাতে সহজ ক্যাচে ফেরেনন আসালাঙ্কা। ৩২ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১৪৪। ম্যাচে বেশ ভালোভাবেই এখন দাপট বাংলাদেশের। নিশানকার পর মেন্ডিসকেও ফেরালেন শরিফুল। 

shoriful islam

নিশানকার পর মেন্ডিসকেও ফেরালেন শরিফুল 
মাঝের ওভারে বল করতে এসে দলকে জোড়া সাফল্য এনে দিলেন শরিফুল ইসলাম। নিজের পর পর দুই ওভার ফেরালেন থিতু থাকা ব্যাটার পাথুম নিশানকা আর কুশল মেন্ডিসকে। ফিফটি করা মেন্ডিস শরিফুলের বাউন্সারে আপার কাট করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু থার্ড ম্যান পার করতে পারেননি। সহজ ক্যাচ নেন তাসকিন আহমেদ। ৭৩ বলে ৫০ রান করে ফেরেন মেন্ডিস। ২৬ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ১২১। 

Pathum Nissanka
ছবি: এএফপি

শরিফুলের বলে নিশানকার বিদায় 
উইকেট না পেলে হতাশা বাড়ছিল বাংলাদেশের। জুটি গড়ে দুই ব্যাটারই খেলছিলেন অনায়াসে। অবশেষে শরিফুল ইসলাম আনলেন ব্রেক থ্রো। অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে এসে শরিফুলের করা ডেলিভারি প্যাডের লাগানোর পর ব্যাটে লাগান পাথুম নিশানকা। আম্পায়ার আউট দিলে দ্রুত রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে টিকতে পারেননি। আম্পায়ার্স কলের কারণে অবশ্য রিভিউটা রক্ষা পেয়েছে। ২৪তম ওভারে ১০৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ৬০ বলে ৪০ রান করে ফিরেছেন নিশানকা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে.১০৭ বলে আসে ৭৪ রান।

এবার বেঁচে গেলেন মেন্ডিস

শরিফুল ইসলামের বলে পুল করে উড়িয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস। বাউন্ডারি লাইন থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে ছিলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। হাত লাগালেও ক্যাচ নিতে পারেননি, উল্টো হয়ে যায় ছক্কা। ২৯ রানে জীবন পেয়ে ওই ওভারে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন মেন্ডিস। ২২ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ১০৩।

নিশানকাকে জীবন দিলেন মুশফিক

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের মতই হাসান মাহমুদের বলে দারুণ এক ক্যাচ প্রায় নিয়েই ফেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে ডান দিকে অনেকটা ঝাঁপিয়ে হাত স্পর্শ করলেও পারলেন না তিনি। ৩৬ রানে জীবন পেলেন নিশানকা। ১৯ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ৮৫। কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পঞ্চাশ তুলে ফেলেছেন নিশানকা।  

hasan mahmud
ছবি: এএফপি

করুনারত্নকে ফেরালেন হাসান
প্রথম ৫ ওভার অনায়াসে কাটিয়ে ভালো শুরু দিকে ছিল শ্রীলঙ্কা। ৬ষ্ঠ ওভারে তাদের ইনিংসে আঘাত হেনেছেন হাসান মাহমুদ। হাসানের ওভারের প্রথম দুই বলে দারুণ দুই বাউন্ডারি মারেন দিমুথ করুনাতরনে। অন ড্রাইভ ও স্ট্রেট ড্রাইভে দুই চার পাওয়া করুনারত্নে তৃতীয় বলেই কাবু হয়ে যান। এবার বাড়তি বাউন্সে আউটস্যুইং ডেলিভারি দেন হাসান, তাতে ব্যাট ছুঁইয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে জমা পড়েন লঙ্কান ওপেনার। ১৭ বলে ১৮ করেন এই বাঁহাতি। ৩৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। 

রিভিউ নিয়ে রক্ষা পেলেন নিশানকা 

প্রথম বল ইনসাইড এজ হয়ে বাউন্ডারি হওয়ার পরও ইনস্যুয়িং ডেলিভারি চালিয়ে সাফল্যের কাছে গিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। তৃতীয় বল ভেতরে ঢুকিয়েছিলেন। পাথুম নিশানকা পরাস্ত হয়ে পায়ে লাগালে আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদন সাড়া দিয়ে দেন। দ্রুত রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান নিশানকা। প্রথম ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান বিনা উইকেটে ৮। 

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে নাসুম

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচ টস জিতেছেন সাকিব আল হাসান। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টস হারলেও অখুশি নন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। টস জিতলেও তিনি ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতেন, হারলেও তাই ক্ষতি হয়নি।

টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব বলেন, 'আমাদের জন্য এটা অবশ্য জিততে হবে। পাকিস্তানের তুলনায় কন্ডিশন একটু ভিন্ন হবে কাজেই আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। আমরা একজন বাড়তি বোলার নিয়ে খেলছি। নাসুম খেলবে আফিফের জায়গায়।' 

শানাকার মতে, ব্যাট করার জন্য উইকেট বেশ ভালো। রাতের আলোতে কিছু মুভমেন্ট পাওয়া যেতে পারে। সেজন্য তারা ব্যাটিংই বেছে নিতে চেয়েছেন আগে। 

বাংলাদেশ একাদশে একটি বদল আনলেও শ্রীলঙ্কা একই একাদশ নিয়ে নেমেছে আজও। 

শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিশানকা, দিমুথ করুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, সাদেরা সামারাবিক্রমা, চারিথা আসালাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দাসুন শানাকা, দুনিত ওয়েলেগেলে, মাহেশ থিকসেনা, কাসুন রাজিতা, মাথিশা পাথিরানা। 

বাংলাদেশ একাদশ: নাঈম শেখ, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, শামীম পাটোয়ারি, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ।   

বাংলাদেশের ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচ

সুপার ফোরে পাকিস্তানে কাছে বড় হারের পর ফাইনালের আশা ফিকে হয়ে যায় বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে শ্রীলঙ্কাকে হারানো বিকল্প নেই সাকিব আল হাসানদের।

Comments