ভারতের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়ে এশিয়া কাপ শেষ করল বাংলাদেশ
শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১২ রান। বাংলাদেশের চাওয়া ছিল বাকি থাকা একটি উইকেট তুলে নেওয়া। অভিষেক ওয়ানডে খেলতে নামা বাঁহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব স্নায়ুচাপ সামলে দেখালেন ঝলক। শর্ট ডেলিভারির পর করলেন টানা তিনটি স্লোয়ার। এই চার বলের প্রথম তিনটিই হলো ডট। শেষটিতে চার মারতে পারলেন মোহাম্মদ শামি। ফলে দাঁড়াল ২ বলে ৮ রানের সমীকরণ। পঞ্চম বলটি তানজিম করলেন ইয়র্কার। কোনোক্রমে ফাইন লেগে ঠেলে ডাবল নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে গেলেন শামি। এতে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ এবারের এশিয়া কাপ শেষ করল সুখকর অভিজ্ঞতা দিয়ে।
শুক্রবার কলম্বোতে আসরের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে হয়েছে রোমাঞ্চকর লড়াই। সেখানে ভারতের বিপক্ষে ৬ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরে টাইগারদের এটি প্রথম জয়। আগের দুটিতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল তারা। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় জয়। ১১ বছর আগে ২০১২ সালে দেশের মাটিতে প্রতিবেশী দেশটির বিপক্ষে প্রথমবার জিতেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
২৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারতকে লম্বা সময় আশা দেখান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পাওয়া ওপেনার শুবমান গিল। তার বিদায়ের পর আক্সার প্যাটেল হয়ে ওঠেন ভয়ঙ্কর। শেষের আগের ওভারে তাকে থামিয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে বাংলাদেশ। এরপর মাত্র এক বল বাকি থাকতে হয় ম্যাচের ফয়সালা।
তরুণ তানজিম শুরুতে সুর বেঁধে দেওয়ার পর শেষদিকে উইকেট শিকারে মাতেন অভিজ্ঞ মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের পাশাপাশি নজর কাড়েন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ চার স্পিনার। বাকিরা হলেন নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও শেখ মেহেদী হাসান। মাঝের ওভারগুলোতে তারা ছিলেন আঁটসাঁট। ব্যাটে-বলে অবদান রেখে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন সাকিব। পরিস্থিতি অনুসারে তার বোলিংয়ে পরিবর্তন আনাগুলোও ছিল লক্ষণীয়।
নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও প্রাপ্তি আছে অনেক। তাই এশিয়া কাপ অভিযান ফাইনালের আগেই শেষ হলেও কিছুটা আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে দেশে ফিরতে পারে বাংলাদেশ দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৪৯.৫ ওভারে ২৫৯ (রোহিত ০, গিল ১২১, তিলক ৫, রাহুল ১৯, ইশান ৫, সূর্যকুমার ২৬, জাদেজা ৭, আক্সার ৪২, শার্দুল ১১, শামি ৬, কৃষ্ণা ০*; তানজিম ২/৩২, মোস্তাফিজ ৩/৫০, নাসুম ০/৫০, সাকিব ১/৪৩, শেখ মেহেদী ১/৪৩, মিরাজ ২/৫০)।
আক্সারকেও ফেরালেন মোস্তাফিজ
৪৯তম ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে জোড়া শিকার ধরলেন মোস্তাফিজুর রহমান। দিলেন মাত্র ৫ রান। শার্দুল ঠাকুরের পর তিনি নিলেন আক্সার প্যাটেলের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ওভারের তৃতীয় বলটি ফুল টস পেয়ে চার মারলেন আক্সার। এরপর চতুর্থ বলটি ছিল স্লোয়ার। টাইমিংয়ে গড়বড় করে তিনি ক্যাচ দিলেন লং-অফ থেকে দৌড়ে আসা তানজিদ হাসানের হাতে। শুবমান গিলের পর এই উইকেটের চাওয়া ছিল বাংলাদেশের। আটে নেমে ৩৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রান করে আউট হলেন আক্সার।
অষ্টম উইকেট জুটির ইতি টানলেন মোস্তাফিজ
৪৯তম ওভারের প্রথম বলেই উইকেট শিকার করলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারের ফুল টস ফ্লিক করে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিলেন শার্দুল ঠাকুর। তার রান ১৩ বলে ১১। তার বিদায়ে ভাঙল ২৭ বলে ৪০ রানের অষ্টম উইকেট জুটি। খোঁজে থাকা উইকেটের দেখা মিলল বাংলাদেশের।
ভারতের দরকার ১৭ রান, উইকেটের খোঁজে বাংলাদেশ
ভারতের ইনিংসের ৪৮ ওভার শেষ। শেখ মেহেদী হাসানের করা সবশেষ ওভারটি ছিল খরুচে। প্রথম চারটি বল অবশ্য ছিল দারুণ। তবে শেষ দুই ডেলিভারিতে একটি করে চার-ছক্কায় আক্সার প্যাটেল আনেন ১৪ রান। ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৪৯ রান। ক্রিজে আছেন আক্সার ৩২ বলে ৩৯ রানে। শার্দুল ঠাকুর খেলছেন ১২ বলে ১১ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ২৬ বলে ৪০। উইকেটের খোঁজে আছে বাংলাদেশ। শুবমান গিলকে সাজঘরে পাঠানোর পর আর সফলতা পায়নি তারা।
আক্সারকে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করলেন লিটন
৪৫তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ছক্কা হজমের পরই আক্সার প্যাটেলকে ফেরানোর সম্ভাবনা জাগালেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি বল করলেন লেগ স্টাম্পের বাইরে। কিন্তু ওয়াইড হলেও স্টাম্পিংয়ের সুযোগ ছিল। সেটা হাতছাড়া করলেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ফলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে জীবন পেলেন আক্সার। বেঁচে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ফুল টস পেয়ে মারলেন চার। ওভার শেষে ভারতের রান ৭ উইকেটে ২২২। ৩০ বলে তাদের দরকার ৪৪ রান।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ৩ উইকেট
শেখ মেহেদী হাসান করলেন ভারতের ইনিংসের ৪৪তম ওভার। তিনি সাজঘরে পাঠালেন সেঞ্চুরিয়ান শুবমান গিলকে। ওভার শেষে ভারতীয়দের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১০ রান। ৩৬ বলে আরও ৫৬ রান চাই তাদের। ক্রিজে আক্সার প্যাটেল ১৮ বলে ১১ ও শার্দুল ঠাকুর ২ বলে ১ রানে খেলছেন। এমন পরস্থিতিতে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। তাদের দরকার মাত্র ৩ উইকেট।
পথের কাঁটা গিলকে ফেরালেন শেখ মেহেদী
রাউন্ড দ্য উইকেটে বিশাল ছক্কা হজম করলেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে দমে গেলেন না তিনি। পরের বলেই নিলেন মধুর প্রতিশোধ। ওভার দ্য উইকেটে গিয়ে বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে থাকা শুবমান গিলের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি শিকার করলেন তিনি। আবার হাঁকানোর চেষ্টায় লং-অফে তাওহিদ হৃদয়ের তালুবন্দি হলেন ওপেনিংয়ে নামা গিল। থামল ৮ চার ও ৫ ছয়ে সাজানো তার ১৩৩ বলে ১২১ রানের ইনিংসটি।
গিলের সেঞ্চুরি
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩২তম ম্যাচে পঞ্চম সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন শুবমান গিল। ৬১ বলে ফিফটি স্পর্শের পর তিন অঙ্কে গেলেন ১১৭ বলে। অন্যপ্রান্তে সতীর্থরা যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও ভারতের আশার আলো হয়ে উইকেটে আছেন তিনি। তানজিম হাসান সাকিবের বলে ডাবল নিয়ে শতরান পূরণের পর টানা দুটি চার মারলেন স্লাইস ও পুল শটে। জয়ের পথে কাঁটা হয়ে থাকা গিলের উইকেটের চাওয়াতেই আছে বাংলাদেশ। কিন্তু কোনো উপায় এখনও মেলেনি। ম্যাচের ১০ ওভার বাকি থাকতে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ভারতের দরকার আরও ৭৮ রান। গিল ১২২ বলে ১১০ রানে খেলছেন। তার সঙ্গে ক্রিজে আছেন আক্সার প্যাটেল।
স্টাম্প উপড়ে জাদেজাকে বিদায় করলেন মোস্তাফিজ
বোলিংয়ে পরিবর্তন এনে সফলতা পেল বাংলাদেশ। ৩৮তম ওভারে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আক্রমণে আনলেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে। তিনি চতুর্থ ডেলিভারিতে বোল্ড করলেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। বড় শট খেলার চেষ্টায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে স্টাম্প হারালেন জাদেজা। ১২ বলে তার রান ৭। ওভার শেষে চাপে পড়া ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭১ রান। জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের।
গিলের পাল্টা আক্রমণ
একপ্রান্ত আগলে ব্যাট করছেন শুবমান গিল। বাড়তি কোনো ঝুঁকি নিচ্ছেন না। নিজের সামর্থ্যের ছাপ রেখে ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার খেলছেন দায়িত্বশীল ইনিংস। পাশাপাশি বাংলাদেশের স্পিনারদের আঁটসাঁট থাকার চেষ্টায় আঘাত করছেন তিনি। ৩৬তম ওভারে তিনি চড়াও হলেন মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে দুটি ছক্কা হাঁকালেন তিনি। ওভার শেষে ভারতের রান ৫ উইকেটে ১৬৩।
বিপজ্জনক সূর্যকুমারকে বোল্ড করলেন সাকিব
প্রথম থেকেই বারবার সুইপ শট খেলছিলেন সূর্যকুমার যাদব। শেষ পর্যন্ত সুইপ শটেই বিদায় ঘটল তার। সাকিব আল হাসানের ফুল লেংথের ডেলিভারির লাইন মিস করে বোল্ড হলেন তিনি। পূরণ হলো বাংলাদেশের উইকেট তুলে নেওয়ার চাহিদা। ৩৬ বলে ৩ চারে ২৪ রান করা সূর্যকুমারের আউটে ভাঙল ৫৫ বলে ৪৫ রানের জুটি। ৩৩ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৫ উইকেটে ১৪১ রান। জয়ের জন্য ১৭ ওভারে তাদের দরকার আরও ১২৫ রান। বাংলাদেশের চাই ৫ উইকেট। ক্রিজে ৯৮ বলে ৭৫ রানে থাকা শুবমান গিলের সঙ্গে আছেন রবীন্দ্র জাদেজা।
দ্বিতীয় রিভিউও হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ
সূর্যকুমার যাদব চেষ্টা করলেন শাফল করে অন সাইডে খেলার। বল তার ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে লাগল প্যাডে। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় বোলার সাকিব আল হাসান নিলেন রিভিউ। তবে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেল, অফ স্টাম্পের লাইনের বাইরে ছিল সেটার ইমপ্যাক্ট। ফলে ইনিংসের ২৫তম ওভারেই বাকি থাকা রিভিউটিও হারাল বাংলাদেশ।
মিরাজের আঘাতে ইশানের বিদায়
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। নাসুম আহমেদ, সাকিব আল হাসান, শেখ মেহেদী হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে এখন পর্যন্ত ১৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৫২ রান। শেখ মেহেদীর পর উইকেটের দেখা পেলেন আরেক অফ স্পিনার মিরাজও। রিভার্স সুইপের চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হলেন ইশান কিশান। রিভিউ নিলেও কাজ হলো না, বরং তা নষ্ট হলো। ১৫ বল খেলা ইশানের রান ৫। দলীয় একশ রান পূরণ হওয়ার আগেই ভারত ৪ উইকেট হারিয়ে পড়ল চাপে। ২৪ ওভার শেষে তাদের রান ৯৮। একপ্রান্ত আগলে থাকা শুবমান গিল ৭৬ বলে ৫৭ রানে ক্রিজে আছেন। তার সঙ্গী মাত্রই নামা সূর্কুযমার যাদব খেলছেন ৩ বলে ৪ রানে।
ছক্কা মেরে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন গিল
ক্যারিয়ারের ৩২ ওয়ানডেতে নবম ফিফটি তুলে নিলেন শুবমান গিল। ভারতের ওপেনার ব্যক্তিগত মাইলফলকে পৌঁছালেন ২০তম ওভারের শেষ বলে। শেখ মেহেদী হাসানকে তিনি সীমানাছাড়া করলেন ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে। ৬১ বলে হাফসেঞ্চুরিতে যেতে তার ব্যাট থেকে এলো ৬টি চার ও একটি ছক্কা। ওভার শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ৮৯।
রাহুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন শেখ মেহেদী
খোলস ভাঙার চেষ্টায় পরাস্ত হলেন কেএল রাহুল। উইকেটের খোঁজে থাকা বাংলাদেশ পেল ব্রেক থ্রু। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিলেন রাহুল। ৩৯ বলে ২ চারে রাহুলের রান ১৯। তার বিদায়ে ভাঙল ভারতের ৮৭ বলে ৫৭ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। ১৮ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭৪ রান।
গিল-রাহুলের জুটিতে ফিফটি
ইনিংসের শুরু থেকে তানজিম হাসান সাকিব একটানা করেছেন ৬ ওভার। অন্যপ্রান্তে কেউই তার মতো কার্যকর হতে পারছেন না। আরেক পেসার মোস্তাফিজুর রহমান হতাশ করছেন লাইন-লেংথে। দুই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দুটি করে ওভার হাত ঘুরিয়েছেন। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান করেছেন এক ওভার। বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছেন শুবমান গিল ও কেএল রাহুল। ৭২ বলে তাদের জুটি স্পর্শ করেছে ফিফটি। ১৫ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭১ রান। রাহুল (৩৫ বলে ১৭ রান) মন্থর থাকলেও গিল (৪৪ বলে ৪১ রান) ছুটছেন দ্রুত গতিতে। বাংলাদেশ রয়েছে উইকেটের খোঁজে।
পাওয়ার প্লেতে ভারত তুলল ৪২ রান, বাংলাদেশ নিল ২ উইকেট
প্রথম পাওয়ার প্লেতে ভারত স্কোরবোর্ডে জমা করল ৪২ রান। সাজঘরে ফিরলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও অভিষিক্ত তিলক ভার্মা। তাদের বিদায়ে চাপে পড়ার পর প্রতিরোধ গড়ার দায়িত্ব এখন শুবমান গিল ও কেএল রাহুলের। বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ভালো শুরু পাইয়ে দিলেন অভিষেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ২ উইকেটই গেল তার ঝুলিতে।
রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
তানজিম হাসান সাকিবের বল লোকেশ রাহুলের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে লাগল প্যাডের উপরের দিকে। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলেন না। শেষ মুহূর্তে রিভিউ নিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেল, স্টাম্পের উপর দিয়ে চলে যেত বল। ফলে একটি রিভিউ হারাল বাংলাদেশ। সাত ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৭ রান। ক্রিজে ওপেনার শুবমান গিল ১৭ বলে ১১ ও চারে নামা লোকেশ রাহুল ১৪ বলে ৬ রানে খেলছেন।
তিলককে বোল্ড করলেন তানজিম
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা স্বপ্নের মতো হলো বাংলাদেশের ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিবের! নিজের প্রথম দুই ওভারেই তিনি পেলেন উইকেটের দেখা। রোহিত শর্মার পর তার শিকার হলেন তিলক ভার্মা। বলটি বেরিয়ে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন তানজিমের মতোই অভিষেক ওয়ানডে খেলতে নামা তিলক। কিন্তু তা ভেতরে ঢুকে উপড়ে ফেলে স্টাম্প। ৯ বলে তিলকের সংগ্রহ ৫ রান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ল ভারত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেলেন তানজিম
রোহিত শর্মাকে ড্রাইভ করতে প্রলুব্ধ করলেন তানজিম হাসান সাকিব। ভারতের অধিনায়ক ব্যাটে-বলে সংযোগ করতে পারলেন না ঠিকমতো। বল চলে গেল কভার পয়েন্টে। অনায়াসে তা লুফে নিলেন এনামুল হক বিজয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় বৈধ বলেই উইকেটের স্বাদ পেলেন অভিষিক্ত ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার তানজিম। দলীয় ২ রানে প্রথম উইকেট হারাল ভারত। রোহিত শূন্য রানে সাজঘরে ফিরলেন ২ বল খেলে। নতুন বলে বাংলাদেশের শুরুটা হলো দারুণ।
টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় ২৬৫ করল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের টেল এন্ডারদের নিয়ে খুব একটা ভরসা নেই দলের। ১৯৩ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। কিন্তু নাসুম আহমেদ দেখালেন ঝলক। উইকেটের অবস্থা বুঝে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ দিলেন তিনি। শেখ মেহেদী হাসানকে নিয়ে ৮ম উইকেটে গড়লেন ৩৬ বলে ৪৫ রানের জুটি। ৪৫ বলে ৪৪ করে ফেরেন নাসুম। এরপর শেখ মেহেদী অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়েও পান জুটি। ১৬ বলে আনেন অবিচ্ছিন্ন ২৭ রান।
মেহেদী করেন ২৩ বলে ২৯। তানজিম ৮ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬৫/৮(তানজিদ ১৩, লিটন ০, বিজয় ৪, সাকিব ৮০, মিরাজ ১৩, হৃদয় , শামীম ১, নাসুম ৪৪, শেখ মেহেদী ২৯*, তানজিম ১৪* ; শামি ২/৩২, শার্দুল ৩/৬৫, প্রসিদ ১/৪৩, আকসার ১/৪৭, তিলক ০/২১ ০/২১, জাদেজা ১/৫৩)
ফিফটির পর ফিরলেন হৃদয়
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটির পর পরই ফিরে গেলেন তাওহিদ হৃদয়। স্পিনারদের খেলতে পারলেও মোহাম্মদ শামিকে সামলাতে পারলেন না। ৪২তম ওভারে শামীর বল পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৮১ বলে ৫৪ রানে থামে তার ইনিংস। ১৯৩ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
হৃদয়ের পঞ্চম ফিফটি
নিজের চেনা পাঁচের বদলে ছয়ে নেমেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। শুরুতে জড়োসড়ো থাকলেও সাকিবের সঙ্গে শতরানের জুটিতে দেন ভরসা। সাকিব ফিরে যাওয়ার পর ৭৭ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নিলেন তিনি। ৪০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৮৮।
শামীমকে আউট করে জাদেজার ২০০তম উইকেট
শামীম হোসেন পাটোয়ারি নিজের সামর্থ্য পরিচয় দিতে আরেকবার ব্যর্থ হলেন। রবীন্দ্র জাদেজার বলে ধোঁকা খেয়ে এলবিডব্লিউ হলেন তিনি। বাঁহাতি ব্যাটার ফিরে গেলেন ৫ বলে ১ রান করে। ১৬১ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। শামীমকে আউট করে ওয়ানডেতে ২০০তম উইকেট পেলেন জাদেজা।
শতরানের জুটির পর সাকিবের বিদায়
তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে শতরানের জুটিতে দলকে খেলায় ফিরিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। নিজেও জাগাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির আশা। তবে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি অধরাই রয়ে গেল তার। ৩৪তম ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বল খেলতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন সাকিব। ৮৫ বলে ৮০ রান করে ফিরে যান তিনি। ১৬০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সাকিব-হৃদয়ের শতরানের জুটি
৫৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো হয়ে যাওয়া দলকে ভরসা দিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। পঞ্চম উইকেটে দুজনে গড়েছেন শতরানের জুটি। ১১০ বলে তাদের জুটি স্পর্শ করে একশো রান। ৩২.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৫৯। সাকিব ৭৯ ও হৃদয় ৪০ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন।
দলের চাপে সাকিবের ফিফটি
১৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলের চাপে চারে খেলতে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। তিনি নামার পর ৫৯ রানে পড়ে যায় ৪ উইকেট। এমন অবস্থায় তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ইনিংস টেনে নিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৬৫ বলে আকসার প্যাটেলকে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে নিজের ৫৫তম ফিফটি স্পর্শ করেন সাকিব। ফিফটির পর মারেন আরেক ছয়। ২৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১২৪। সাকিব ৬০ ও হৃদয় ২৫ রানে খেলছেন। পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটিতে এসেছে ৬৫ রান।
এবার জীবন পেলেন সাকিব
দলের বাকিদের ব্যর্থতায় টিকে থাকা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল ভারত। অনিয়মিত অফ স্পিনার তিলক বর্মার বলে সাকিবের ক্যাচ ছেড়ে দেন কিপার লোকেশ রাহুল। ২৮ রানে জীবন পান সাকিব। ১৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৭২।
ধুঁকতে ধুঁকতে আউট হলেন মিরাজ
এক ওভারে দুবার জীবন নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। ভাগ্য সহায় হলেও নিজের কাজটা তো করতে হবে। মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিংয়ে দেখা মিলল না কিছুই। পাঁচে নেমে শুরু থেকেই ভুগলেন তিনি। বারবার পরাস্ত হয়ে ক্রিজে টিকে থাকাই যেন ছিল অস্বস্তির কারণ। শার্দুল ঠাকুরের বলে ৩ ও ৫ রান দুবার জীবন পেয়েও করলেন ১৩ রান। ২৮ বলের ইনিংসটা থামে আকসার প্যাটেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। তার আউটে ১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেট ৫৯
এক ওভারে দুবার জীবন পেলেন মিরাজ
পাঁচে নেমে শুরু থেকেই ভুগতে থাকা মেহেদী হাসান ম্মিরাজ শার্দুল ঠাকুরের বলে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন। মিড অনে সহজ সেই ক্যাচ ছেড়ে দেন অভিষিক্ত তিলক বর্মা। ৩ রানে জীবন পান বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। দুই বল পরই আবার সুযোগ দেন তিনি। এবার হকচকিয়ে স্লিপে ক্যাচ যায় তার। হাত লাগিয়েও কঠিন সে ক্যাচ জমাতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। এবার জীবন পান ৫ রানে। দশম ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৪৪।
ফেরার ম্যাচে ব্যর্থ বিজয়
লিটন দাসের অসুস্থতায় আচমকা এশিয়া কাপের দলে এসেছিলেন এনামুল হক বিজয়। দলে এলেও স্কোয়াডে জায়গা পেলেন একদম শেষ ম্যাচে। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। শুরুতে ছিলেন সতর্ক। ৮ম বলে বাউন্ডারি মেরে খুলেন রানের খাতা। কিন্তু ভুল শট নির্বাচিনে ডেকে আনেন বিপদ। শার্দুল ঠাকুরকে পুল করতে গিয়ে ব্যাটে পাননি, উঁচুতে উঠা ক্যাচ সহজেই এগিয়ে লুফে নেন কিপার লোকেশ রাহুল। ৬ষ্ঠ ওভারে ২৮ রানে বাংলাদেশ হারিয়েছে তৃতীয় উইকেট।
লিটনের পর তানজিদেরও বিদায়
জ্বলে উঠার আভাস দিয়েও নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলেন তানজিদ হাসান তামিম। তিন চারে দারুণ শুরু পেয়েছিলেন, সেটা টেনে নিতে পারলেন না। চতুর্থ ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বল স্টাম্পে টেনে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ১৫ রানে বাংলাদেশ হারায় দ্বিতীয় উইকেট। তানজিদ ১২ বলে করেন ১৩ রান।
কোন রান না করেই লিটনের বিদায়
বাজে ছন্দ থেকে বেরুতে পারলেন না লিটন দাস। এবার ওপেনিংয়ে ফিরেও থামলেন খালি হাতে। তৃতীয় ওভারে মোহাম্মদ শামির ভেতরে ঢোকা বল খেলতে গিয়ে পরাস্ত হলেন। ভেঙে গেল তার স্টাম্প। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারালো বাংলাদেশ। লিটন ফিরলেন ২ বলে ০ রান করে। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম অবশ্য ভালোই শুরু পেয়েছেন। ১১ বলে তিন চারে ১৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, তানজিমের অভিষেক
আগেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ, অন্য দিকে এক ম্যাচ আগে ভারতও ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। তাই এশিয়া কাপে সুপার ফোরে অনেকটা নিয়মরক্ষার ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুদল। কিছুটা কম তীব্রতার এই ম্যাচে টস ভাগ্য পক্ষে আসেনি সাকিব আল হাসানের। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রোহিত শর্মা।
বাংলাদেশ একাদশে এনেছে একাধিক বদল। কিছু বদল অবশ্য বাধ্য হয়ে। হাসান মাহমুদকে বিশ্রাম দিয়ে অভিষেক হয়েছে ডানহাতি পেসার তানজিম হাসা সাকিবের। এছাড়া ছন্দহীন ওপেনার নাঈম শেখের বদলে একাদশে এসেছেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতিতে খেলছেন এনামুল হক বিজয়। তাসকিন আহমেদও পেয়েছেন বিশ্রাম। একাদশে এসেছেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান।
ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ভারতও একাদশে পাঁচটি বদল এনেছে। এই ম্যাচে খেলছেন না বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিট বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজের মতোন তারকারা। ভারতের হয়ে অভিষেক হচ্ছে ব্যাটার তিলক বর্মার।
মোহাম্মদ শামির সঙ্গে পেস আক্রমণে আছেন প্রসিদ কৃষ্ণ। শার্দুল ঠাকুর ফিরেছেন একাদশে। কোহলির বদলে খেলানো হচ্ছে সূর্যকুমার যাদবকে। বাঁহাতি ব্যাটার তিলকও পেলেন নিজেকে প্রমাণের সুবর্ণ সুযোগ।
বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ,, শামীম হোসেন, নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, সূর্যকুমার যাদব, তিলক বর্মা, লোকেশ রাহুল, ঈশান কিশান, রবীন্দ্র জাদেজা, আকসার প্যাটেল, শার্দুল ঠাকুর, মোহাম্মদ শামি, প্রসিদ কৃষ্ণ।
Comments