এই আগ্রাসী মনোভাব বিশ্বকাপেও টেনে নিতে চায় বাংলাদেশ
সিরিজের আগেই টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়া ছিল খেলা হোক রান প্রসবা উইকেটে। যেখানে ব্যাটাররা নিজেদের মেলে ধরবেন, হবে বড় রান। কিন্তু বড় রান পেরুনোর চ্যালেঞ্জ নিবেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে সেই চাওয়া পুরোপুরি পূরণ হয়েছে বলে মনে করেন লিটন দাস। নিয়মিত তিনশো ছাড়ানো পুঁজি পাওয়ায় দলের অবস্থা বেশ ভালো মনে হচ্ছে তার।
সিলেটে প্রথম ওয়ানডেতে ৩৩৮ রান করে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে তামিম ইকবালের দল। দুদিন পর দ্বিতীয় ম্যাচেই ভেঙে ফেলে তা। এবার আসে ৩৪৯ রান। দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি এসেছে একটি, ফিফটি চারটি, চল্লিশ পেরুনো ইনিংস আরও দুটি।
কয়েকজনের একসঙ্গে জ্বলে উঠা, আদর্শ অভিপ্রায় নিয়ে ব্যাট করা আসছে বিশ্বকাপেও কাজে দিবে বলে মনে করেন লিটন, 'আমরা তো চাই এটা হোক। যদি আমরা ব্যাটাররা রান করতে পারি আপনি যখন বড় বড় ইভেন্ট খেলবেন তখন কিন্তু এমনই হয় রান। সব ম্যাচে ৩০০ হয়তো হয় না, কিন্তু ২৮০ প্লাস হয়ই। চাইবো তো সবসময় ভালো উইকেট খেলি, ভালো ফল করি। কিন্তু অবশ্যই আমার মনে হয় সাহায্য করবে এই জিনিস।'
দুই ম্যাচেই মাঝের ওভারে মোড় ঘোরানো জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে চতুর্থ উইকেটে তাওহিদ হৃদয়-সাকিব আল হাসানের ১২৫ বলে ১৩৫ রানের জুটির পর শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ও হৃদয়ের ৪৯ বলে আসে ৮০ রানের জুটি। দ্বিতীয় ম্যাচে দ্বিতীয় উইকেটে লিটন-শান্তর ৯৬ বলে ১০১ রানের জুটির পর পঞ্চম উইকেটে হৃদয়-মুশফিক আনেন ৭৮ বলে ১২৮ রান।
মাঝের ওভারে রানের চাকা সচল রাখার পর শেষ দিকে ঝড়। শুরুর দিকে সতর্ক থাকলেও সবটা পুষিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ ঠিকই পাচ্ছে বিশাল পুঁজি। লিটন মনে করেন অভিপ্রায় ঠিক থাকায় মিলছে ফল, 'যারাই ব্যাটিং করতেছে মাঝের ওভারে। সবাই অভিপ্রায় নিয়েই ব্যাট করছে। এমন না যে সবাই গিয়ে বড় বড় ছক্কা মারছে। কিন্তু যে জিনিসটা ছিল কীভাবে আমরা এক-দুই কিংবা চার মারতে পারি। আমার মনে হয় যারা ব্যাটিং করছিল, তাদের অভিপ্রায় খুবই ভালো ছিল।'
সোমবার টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে শুরুর ছবিটা ছিল ভিন্ন। মেঘলা আকাশের নিচে বল মুভ করছিল দু'দিক থেকে। উইকেট ছুঁড়ে না দিয়ে কঠিন সে সময় পার করে দেন লিটন-তামিম। তামিম থিতু হয়ে রান আউটে ফিরলেও লিটন মেলেন ডানা। প্রথম ২২ বলে কেবল ৬ রান করা এই ওপেনার ৫৩ বলেই করেন ফিফটি। পরে আউট হন ৭১ বলে ৭০ রান করে।
লিটনের মতে, শুরু ঝাপটা পার করেও তিনশো ছাড়াতে পারার এই অভ্যাস কাজে দেবে, 'অবশ্যই অনেকখানি সাহায্য হবে। আপনি বিশ্বকাপে যখন ভালো ভালো বোলিং অ্যাটাকের বিপক্ষে খেলবেন, তখন এরকমই মুভমেন্ট করবে। এই কোয়ালিটির বোলিংই করবে। আমার মনে হয় আপনি যখন কন্টিনিউ ৩০০-৩৫০ রান ছুঁইছুঁই অবস্থায় থাকবেন, তার মানে আপনি ভালো ক্রিকেট খেলছেন।'
এই সিরিজ থেকে জেতার প্রত্যাশার থেকেও আরও কিছু ব্যাপার দেখার ছিল বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দিয়ে খেলানো হয়েছে তাওহিদ হৃদয়কে। তিনি সুযোগটা কাজে লাগিয়েছেন শতভাগ।
মুশফিককে চার থেকে সরিয়ে নামানো হয়েছে ছয়ে। সেখানে নতুন ভূমিকায় ঝড় তোলার দায়িত্বটা নিয়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে দুই ম্যাচ থেকে নিজেদের পরিকল্পনায় পুরোপুরি সফল বাংলাদেশ, মত লিটনের, 'শেষ দুই ম্যাচ ধরে আমরা যে পরিকল্পনা করছি, সে লক্ষ্য আমাদের ব্যাটিংয়ে সম্পূর্ণ সফল বলবো। পরের ম্যাচটা ভিন্ন বল গেম হতে পারে। আমরা পরেও ব্যাট করতে পারি।'
'আবার আগে ব্যাট করলে যে আজকে যেমন তারা খুব ভালো বল করছিল… আমি আর তামিম ভাই প্রথম ১০ ওভারে উইকেট দেইনি। যদিও বা ১১ নম্বর ওভারে গিয়ে উইকেট পড়েছে, রান আউট। ওই সময় উইকেট পড়লে ডিফারেন্ট বল গেম হতো। আমাদের রান হয়তো খুব বেশি ছিল না ৪০-৪৫ এর মতো ছিল। ওই সময় যদি উইকেট পড়ে যেতো। যদি আপনি তাড়াতাড়ি উইকেট হারাতেন, হাতে উইকেট কম থাকতো। এরকম ক্যামিও ইনিংস খেলতে পারতেন না।'
Comments