এমন দিনে বাবাকে মনে পড়ছে রনির

Rony Talukdar
ফিফটির পর ব্যাট তুলছেন রনি তালুকদার। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক পল স্টার্লিংও তাকে তালি দিয়ে জানাচ্ছেন শুভেচ্ছা। ছবি: ফিরোজ আহমেদ/ স্টার

২০১৫ সালে স্রেফ এক ম্যাচ সুযোগ পেয়েই বাদ পড়েছিলেন। এক সময় অনেকটা বিস্মৃত হয়ে পড়েছিলেন রনি তালুকদার। ঘরোয়া ক্রিকেটে মাঝেমধ্যে আলো ছড়ালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ফেরার আশা তেমন কেউ করেনি। সেই রনি ৮ বছর পর ফিরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কিছুটা ঝলক দেখান। নিজেকে মেলে ধরার বাকি ছিল আরও। এবার সেই কাজটা করলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মেললেন ডানা,  খেললেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস। এমন দিনে প্রয়াত বাবাকে মনে পড়ছে এই ওপেনারের।

২০১৪ সালে মারা যান রনির ক্রীড়াপ্রেমী বাবা মনোরঞ্জন তালুকদার। তিন ছেলেকেই ক্রিকেটার বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। তার অন্য দুই ভাইও ক্রিকেট খেলতেন। তবে রনি বাকিদের ছাড়িয়ে বাবার নাম উজ্জ্বল করেছেন বেশি।  সোমবার চট্টগ্রামে বাংলাদেশের ২০৭ রানের পুঁজিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রনির। ৩৮ বলে তিনি খেলেন ৬৭ রানের ইনিংস। ডিএলএস মেথডে ২২ রানে জেতা ম্যাচে হন ম্যাচ সেরা।

পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রনি দিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়া, 'বাবা তোমাকে অনেক মনে পড়ছে, আমি জানি তুমি উপর থেকে আমাদের দেখছ।'

Rony Talukdar
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/ স্টার

এদিন ফিল্ডিংয়ে ইনিংসের শেষ দিকে বাউন্ডারি লাইনে বল ধরতে গিয়ে কাঁধে চোট পান। পুরস্কার বিতরণী আয়োজনে এসে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতিটা নিজে নিতে পারেননি। আসতে পারেননি সংবাদ সম্মেলনেও।  নিজের ইনিংস নিয়ে তাই বিস্তারিত জানা হয়নি তার কাছে।  তবে বিসিবির সিনিয়র মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম অবশ্য নিশ্চিত করেছেন, রনির চোট গুরুতর নয়। সুস্থ আছেন তিনি। রনি নিজেও দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন তার সুস্থ থাকার কথা।

নিজের পারফরম্যান্সে দলকে জেতাতে পেরে দারুণ তৃপ্ত তিনি, 'ম্যাচ জেতাতে পারা সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়। আমি সব সময় দলের জন্য খেলতে চাই। কারণ দলই সবচেয়ে আগে৷ সেটা করতে পেরে ভালো লাগছে বেশি।'

এবার বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করে নির্বাচকদের নজর কাড়েন রনি। ৮ বছর পর চলতি মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ফেরানো হয় তাকে।

ফেরার ম্যাচে এই চট্টগ্রামেই ক্রিস ওকস, স্যাম কারানদের বিপক্ষে দেখান ঝাঁজ। সেদিন ১৪ বলে ২১ রানের ছোট্ট কিন্তু ভীষণ কার্যকর ইনিংসে দলের জুতসই পুঁজির সুর ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। পরের ম্যাচে ৯ রানে আউট হলেও মিরপুরে তৃতীয় ম্যাচে করেন ২২ বলে ২৪।

পাওয়ার প্লের মধ্যে বোলারদের উপর চড়াও হয়ে আগ্রাসী শুরুর পথ দেখানোর কাজ করছিলেন। কিন্তু তার কাছে প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি। সোমবার তিনি মেটান সবটা।  লিটন দাসের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নেমে বিস্ফোরক ভূমিকা নেন। দুই ওপেনার মিলে পাওয়ার প্লেতে আনেন ৮১ রান। যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের রেকর্ড। ৪৩ বলের উদ্বোধনী জুটিতে ৯১ তুলেন তারা।

লিটন আউটের পর চালিয়ে যান তিনি। ২৪ বলে পান ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা। পুল, স্ট্রেট ড্রাইভের মতোন জোরালো শটে মেরেছেন ৭ চার আর ৩ ছক্কা।  টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে লিটনের আদর্শ সঙ্গী হওয়ার জোরালো দাবি প্রতিষ্ঠা করেছেন ডানহাতি ওপেনার। আপাতত নিজের জায়গা করেছেন থিতু। এখন তার কাছ থেকে দল দাবি করবে এরকম ইতিবাচক অ্যাপ্রোচের ধারাবাহিকতা।

Comments

The Daily Star  | English

Govt to review media outlets owned by AL ministers, MPs

The adviser made these remarks during a stakeholders' meeting of the Department of Films and Publications

1h ago