লাল বলের ক্রিকেট যেন আইরিশদের জন্য অচেনা ভুবন

Andy Balbirnie
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

১৫ জনের স্কোয়াডে ৯ জনই আছেন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। এরমধ্যে দুজন আছে যাদের নেই কোন প্রথম শ্রেণী ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও। আরও দুজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন স্রেফ একটা করে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে নামার আগে তাই রীতিমতো অচেনা ভুবনের হাতছানি আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটারদের। অধিনায়ক অ্যান্ডু বালবার্নি জানালেন, এতজনকে অভিষেক ক্যাপ দিতে হবে যে সেই কাজটা সেরে রাখবেন রাতেই।

বাংলাদেশ সফর কাভার করতে আসা আয়ারল্যান্ডের একমাত্র সাংবাদিক তাদের অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করলেন, সর্বশেষ প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ কবে খেলেছ মনে আছে? চট করে নয়, খানিকটা ভেবে উত্তর দিতে হলো বালবার্নিকে, '২০২১ সালে গ্ল্যামারগনের হয়ে তিন ম্যাচ খেলেছিলাম।'

তার না হয় সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু বেন হোয়াইট বা ম্যাথু হ্যামফ্রিস যদি মঙ্গলবার একাদশে সুযোগ পান, তাহলে প্রথম টেস্ট ম্যাচটা হবে তাদের জন্য প্রথম শ্রেণীর অভিষেকও! কার্টিস ক্যাম্ফার বা ফিওন হ্যান্ডের জন্য দ্বিতীয় প্রথম শ্রেণীর ম্যাচই হবে প্রথম টেস্ট।

সোমবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই সম্ভাবনার কথা বলেই বাস্তবতা তুলে ধরছিলে বালবার্নি, 'এটা নিশ্চিতভাবেই একদম ব্যতিক্রমী হবে। আমাদের এমন কেউ আছে যার কাল প্রথম শ্রেণীতেই অভিষেক হবে। আমি মনে করতে পারছি না, প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ না খেলে কে সবশেষ এমন টেস্ট খেলতে নেমেছিল।'

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ২০১৮ সাল থেকে এখনো মাত্র তিনটা টেস্ট খেলা হয়েছে আয়ারল্যান্ডের। সর্বশেষটি আবার সেই ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। স্বাভাবিক কারণেই রোমাঞ্চ আর উৎসবের আমেজে তারা,  'সাদা পোশাকে ফিরছি, সবাই রোমাঞ্চিত। সাদা প্যাডগুলোর ধুলো ঝাড়তে হবে। আমরা জানিয়ে বাংলাদেশ টেস্টে কতটা ভালো, বিশেষ করে এখানে। এটা চ্যালেঞ্জিং হবে কিন্তু রোমাঞ্চকর।'

'সাম্প্রতিক সময়ে খুব বেশি এমন হয়নি যে অনেক টেস্ট অভিষেক হয়েছে। নতুন টেস্ট জাতির বেলায় সেটা হয়। ২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশের বেলায় এমন হতো। আমরা আজ রাতে মিলিত হয়ে কিছু উপহার দেব। সকাল বেলা সেটা করতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে।'

প্রথম শ্রেণীতে যারা খেলেছেন তাদের বেশিরভাগই সেই অভিজ্ঞতা নিয়েছেন কাউন্টি দলে। লম্বা বিরতি পর পর একটা টেস্ট খেলা উন্নতি করাও কঠিন।  নিজেদের দেশে প্রথম শ্রেণীর কোন কাঠামো না থাকায় বেশি টেস্টের দাবিও জানাতে পারছেন না তারা, 'বছরে ১০-১৫টা টেস্ট খেলার দাবি জানানোর আগে আমাদের প্রথম শ্রেণীর কাঠামো করতে হবে। আমাদেরকে নিয়মিত লাল বলে খেলতে হবে। যখন শুরু করছিলাম তখন কপাল ভালো যে অনেক কাউন্টি খেলার সুযোগ পেয়েছি। যেটা থেকে অনেক কিছু শিখেছি কিন্তু এখন সেটা আর এভেইলেবল না। ঘরোয়া ক্রিকেটে লাল বলের খেলা না থাকলে এটা কঠিন।'

২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৫ উইকেটে হেরেছিল আয়ারল্যান্ড। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারে ৭ উইকেটে। ওই বছরই লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড নিয়েও পরে বড় ব্যবধানে হারে তারা। এবার চতুর্থ একটি দলের বিপক্ষে টেস্টে নামার আগে ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছে তারা,  'বাংলাদেশ চতুর্থ কোন দেশ যাদের বিপক্ষে আমরা টেস্ট খেলব। ইংল্যান্ডের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলাটা ছিল কঠিন। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা প্রথম টেস্ট খেলেছি, আফগানিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে খেলেছি। নতুন জাতির সংগে টেস্ট খেলা বরাবরই দারুণ। এটা ইতিহাসে ঢুকে গেল। তাদের খুব ভালো কিছু খেলোয়াড় আছে। তাদের কিছু টেস্ট বিশেষজ্ঞ আছে। তাদের কিছু পেসার ও স্পিনারদের দেখে খেলতে হবে। আমরা জানি কি পেতে যাচ্ছি। টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জ। আমরা সব মিলিয়ে রোমাঞ্চিত। আমরা সেরাটা খেলতে চাই।'

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

7h ago