টি-টোয়েন্টি সিরিজেও এই ‘সাহস’ দেখাতে চাইবে কি বাংলাদেশ?
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে অন্তত একটি ম্যাচ নির্ভেজাল ব্যাটিং উইকেটে খেলার প্রাথমিক ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশ দলের। সেই ম্যাচটি নির্ধারিত ছিল চট্টগ্রামে। কিন্তু মিরপুরের 'ডেরায়' দুই ম্যাচেই সিরিজ খুইয়ে আসায় পরিকল্পনায় আসে বদল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সুনামের বিপরীত এক বাইশগজে মিলেছে মিরপুরেরই ছবি। তাতে ফল পক্ষে এলেও নিজেদের সামর্থ্যের আরেকটি দিক বাজিয়ে দেখা হয়নি। টি-টোয়েন্টি সিরিজে তবে কোন পথে হাঁটবে টিম ম্যানেজমেন্ট?
ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছিলেন, সিরিজের শেষ ম্যাচটি চট্টগ্রামে রাখার মূল কারণ নিজেদের বাজিয়ে দেখা। আদর্শ ব্যাটিং উইকেটে বড় দলের বিপক্ষে কেমন করতে পারেন, কতদূর যেতে পারেন সেই হিসাব মিলানোর ইচ্ছা ছিল তাদের। কিন্তু সেটা আর হয়নি।
তামিম হয়ত ভেবেছিলেন ভারতের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজ জেতার কাজটা হয়ে যাবে। হয়েছে উল্টো, পাশার দানও বদলে গেছে তাই। সোমবার যে উইকেটে খেলা হয়েছে সেখানে বল থেমে এসেছে ব্যাটারদের কাছে। স্পিন ধরেছে বেশ ভালো। আচমকা নিচু হয়ে যাওয়ায় ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হয়েছে প্রবল। ২৪৬ রান করেও তাই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু চলতি বছর ভারতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে যে প্রস্তুতির পরিকল্পনা ছিল, সেটা হয়েছে কি?
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামেই শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ওয়ানডেতে যেমন চলতি বছরই আছে বিশ্বকাপ। বড় আসর কেন্দ্র করেই এখন ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। টি-টোয়েন্টিতে আবার ভিন্ন। ২০২৪ বিশ্বকাপ সামনে রেখে আদর্শ সমন্বয় খুঁজে নেওয়ার সামনে বাংলাদেশ দল। গত বিশ্বকাপের দল থেকে তাই এসেছে পাঁচটি বদল। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু কদিন আগে বলেছিলেন, এক বছরের পরিকল্পনা মাথায় রেখেই টি-টোয়েন্টি দলে এতগুলো বদল।
নতুনদের নিয়ে তাই টি-টোয়েন্টির আদর্শ ব্যাটিং উইকেটে নেমে সামর্থ্য পরখ করার একটা সুযোগ আছে স্বাগতিকদের। তবে সেই 'সাহস' দেখাতে গেলে বিগ হিটারদের দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সব সময়ই ভবিষ্যতের হিসাব বাদ দিয়ে সাময়িক তৃপ্তির পিছু নেওয়া বাংলাদেশ দল তাই আবারও হাঁটতে পারে তাদের চেনা পথে। যেখানে উইকেট থাকবে মন্থর ও উঁচু-নিচু বাউন্সের, স্পিনাররা দেখাবেন দাপট। যেখানে বড় ব্যাটার, ছোট ব্যাটাদের তফাৎ যাবে ঘুচে। এসব উইকেটে বাংলাদেশের সাফল্যের হার থাকবে তুলনামূলক বেশি। সাকিব আল হাসানের দল শেষ পর্যন্ত কোন পথে হাঁটবে দেখার বিষয়।
সোমবার ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে টি-টোয়েন্টি সিরিজে না থাকা ক্রিকেটাররা ফিরে গেছেন ঢাকায়। বাকিরা মঙ্গলবার চট্টগ্রামে ছুটির দিনটা পার করেছেন নিজেদের মতন করে। কোন রকম অনুশীলন রাখা হয়নি, গণমাধ্যমের সামনেও কথা বলতে হাজির হননি কেউ।
বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে ক্রিকেটাররা হোটেল থেকে বেরিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা রনি তালুকদার, শামীম পাটোয়ারি, নতুন আসা রেজাউর রহমান রাজা ও তানভীর আহমেদকে দেখা যায় দুপুরে লাঞ্চ করতে গেছেন হোটেলের বাইরে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাসরা ছিলেন হোটেলেই। মঙ্গলবার রাতে পবিত্র শবে বরাতের প্রার্থনায় যোগ দিতে কোন ক্রিকেটার বেরুবেন বলে জানা গেছে।
বুধবার থেকেই শুরু টি-টোয়েন্টি দলের মূল অনুশীলন। বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আসায় টি-টোয়েন্টি দলের আদলও এখন অনেকটা নতুন। তবে চিন্তা ভাবনা নতুন কিনা তা জানা যাবে সেদিনই। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জন্যও টি-টোয়েন্টি দলের হাবভাব বুঝে নেওয়ার মিশন এটি।
Comments