বিপুল সম্ভাবনার হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন

হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন। ছবি: ডয়চে ভেলে

শুধু ব্যাটারিচালিত গাড়িই যথেষ্ট মাত্রায় কার্বন নির্গমন কমাতে পারবে না। অন্যান্য যাত্রীবাহী যানকেও 'কার্বন নিউট্রাল' করতে হবে৷ সেই উদ্যোগে জার্মানির হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন সঠিকভাবেই এগিয়ে চলছে বলে বিবেচিত হচ্ছে৷

জার্মানির উত্তরের ছোট শহর ব্রেমারফ্যোর্ডের স্টেশনে লোকাল ট্রেন প্রবেশ করছে৷ এটি সাধারণ কোনো ট্রেন নয়। হাইড্রোজেনের শক্তি কাজে লাগিয়ে চলে এর ইঞ্জিন। ছাদের ওপর ফুয়েল সেল থেকে শক্তি চাকার মধ্যে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে চলে যায়৷ ডিজেল লোকোমোটিভের বিকল্প হিসেবে চালু করা পরিবেশবান্ধব এই ট্রেনের যাত্রীরা অবশ্য কোনো পার্থক্য বুঝতে পারেন না।

তবে সমস্যা হলো, সেই হাইড্রোজেন কাছের একটি রাসায়নিক কারখানা থেকে আসছে এবং জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি কাজে লাগিয়ে তা উৎপাদন করা হয়েছে৷ অর্থাৎ সেই হাইড্রোজেন মোটেই 'কার্বন নিউট্রাল' নয়৷

তবে, অদূর ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়াটিও 'কার্বন নিউট্রাল' হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পের প্রধান অ্যালেক্সান্ডার স্যোর্নার সে বিষয়ে বলেন, 'এই লক্ষ্যে আমরা বর্তমানে ব্রেমারফ্যোর্ডের এক পেট্রোল পাম্পে এক ইলেকট্রোলিসিস প্লান্ট বসানোর পরিকল্পনা করছি৷ বায়ু অথবা সৌরশক্তি দিয়ে সেটি চালানো হবে৷ এভাবে স্থানীয় পর্যায়েই গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে পারবো৷ তখন গোটা যানটি কার্বন নির্গমন ছাড়াই চলতে পারবে৷'

ফ্রান্সের আল্সটোম কোম্পানির ইঞ্জিনিয়াররা জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের কারখানায় ট্রেনটি তৈরি করেছেন৷ এমন হাইড্রোজেনচালিত ট্রেন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ফসল৷

এই ট্রেনের বগি এসেছে পোল্যান্ড থেকে। ফুয়েল সেল কানাডায় তৈরি হয়েছে৷ এটিই বিশ্বের প্রথম কারখানায় তৈরি হাইড্রোজেন ট্রেন৷

আল্সটোম কোম্পানির আন্দ্রেয়াস ফ্রিক্সেন বলেন, 'ইউরোপ অবশ্যই এ ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা নিচ্ছে। কারণ এখানে প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে এবং সেরা পরিবেশ রয়েছে৷ তবে আমরা গোটা বিশ্বে চাহিদার আশা করছি৷'

আল্সটোমের প্রতিযোগী হিসেবে সিমেন্স কোম্পানি জার্মান রেল কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে 'মিরেও প্লাস এইচ' মডেল তৈরি করেছে৷ তবে আপাতত সেই ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রা চলছে৷

২ বছর পর সিমেন্স কোম্পানির তৈরি লোকাল ট্রেন ট্র্যাকে নামার কথা৷ প্রকাশ্যে সেই ট্রেনের প্রথম যাত্রা বেশ সফল হয়েছিল। কিন্তু জার্মান রেল ডিজেলমুক্ত হতে আরও অনেক সময় লাগবে৷

জার্মান রেল কোম্পানির কর্মকর্তা রিশার্ড লুৎস বলেন, 'রেলের প্রায় ৩ হাজার ডিজেল ইঞ্জিনের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম ঘোষণা করেছি৷ জলবায়ুর স্বার্থে আমরা ২০৪০ সালের মধ্যে এগুলো বাতিল করতে চাই৷ সেই সময়ের মধ্যেই জার্মান রেল কোম্পানি পুরোপুরি ক্লাইমেট নিউট্রাল হতে চায়৷'

হাইড্রোজেন ট্রেন পুরোপুরি ডিজেল ইঞ্জিনের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে কি না, তা নির্ভর করছে কম মূল্যে যথেষ্ট পরিমাণ পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন উৎপাদনের উপর।

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

1h ago