শিল্পের মৃত্যু কি সন্নিকটে

ছবি: সংগৃহীত

আমরা ইতিহাসের এমন এক রোমাঞ্চকর সময়ে বাস করছি, যেখানে মেশিন লার্নিংয়ের অগ্রগতি আপনাকে নির্বাক করার মত 'শিল্প' তৈরি করতে পারছে। মিডজার্নি এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই যা টেক্সট প্রম্পট বা নির্দেশ থেকে কল্পনাকে পরিণত করতে পারে শিল্পে।

২০০০ সালের শুরুর দিকে, ইন্টারনেট বিভিন্ন ক্যাপচা এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে ভরে গিয়েছিল। যেগুলো, বেশিরভাগ লোকের কাছেই ছিল অজানা। এই সব ডেটাগুলো এআই-কে টেক্সটের সঙ্গে চিত্রকে সংযুক্ত করতে শেখাচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে, ক্যাপচা টেক্সট-ভিত্তিক ছিল। কিন্তু সেগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও জটিল হয়ে ওঠে। আপনি রোবট নন তা প্রমাণ করার জন্য, 'ট্র্যাফিক লাইটযুক্ত ছবিগুলো নির্বাচন করুন' পরীক্ষাগুলো মনে পড়ছে?

কিন্তু এর মানে তো এই নয় যে শিল্পের মৃত্যু ঘটেছে। তবে, এটি আপনার কল্পনার প্রকাশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। শিল্প চিরকাল একটি বিমূর্ত ধারণা থেকে যাবে, যা আমাদের মানুষ হওয়ার কারণকে সংজ্ঞায়িত করবে। তবে, এটি কিছু মানুষের জন্য কিছুটা উদ্বেগজনক এবং বিরক্তিকর মনে হতে পারে। কারণ এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত ট্রু এআই মেশিনের দিকে প্রথম উদ্যোগ হতে পারে।

এই মিডজার্নি বট দ্বারা নির্মিত চিত্রগুলো অত্যন্ত মন্ত্রমুগ্ধকর। এর সম্ভাবনাও সীমাহীন, এবার তা টাম্বলারের কোনো নান্দনিক আর্ট হোক বা বিশ্বের রক্তাক্ত অন্তিম কোনো দৃশ্যকল্প হোক। এছাড়াও, ফলাফলগুলো প্রায় তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। এই জায়গাতেই মানুষ কখনো মেশিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। পর্যাপ্ত কম্পিউটিং ক্ষমতাসহ একটি এআই, মানুষের তুলনায় সেকেন্ডে চিত্র তৈরি করতে পারে, যেখানে মানুষের ঘণ্টা এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যায়।

এই প্রযুক্তির উন্নয়ন ইন্টারনেটকে আশ্চর্যজনক সব ইলাস্ট্রেশন দিয়ে পূর্ণ করে ফেলছে। কারণ, এই বটের পরিষেবাটি ডিসকোর্ডে ট্রায়াল ভিত্তিতে পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য আপনার শুধু দরকার ইন্টারনেট সংযোগ এবং একটি টেক্সট প্রম্পট, তারপর যা কাজ প্রোগ্রামটি নিজেই করবে।

তবে, যখন মেশিন কোনো প্রম্পট ছাড়াই এই চিত্রগুলো তৈরি করতে পারবে, সেদিন আর কতদূর? তবে, সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এর মানে মেশিনটি 'আবেগ অনুভব করবে' এবং সেটি শিল্পে রূপান্তরিত করবে।

বিশ্বজুড়ে শিল্পীরা তাদের শিল্প তৈরিতে এআই সমন্বিত করলে, বিশ্ব এর মাধ্যমে শিল্পের সাংস্কৃতিক বিকাশ দেখতে পারে। এই মিথষ্ক্রিয়া শিল্পের ভবিষ্যৎ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। কারণ বিপ্লব অস্থায়ী, তবে বিবর্তন চিরস্থায়ী।

যদি এটিকে অন্যান্য অধ্যয়ন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে রূপান্তরিত করা হয়, তবে সম্ভাবনাগুলো আমাদের বিশ্বের বাস্তবতাকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। সমাজ আরও ভালোর জন্য সংস্কার হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা কীভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করি তা পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে এআই দ্বারা করা যেতে পারে।

যখন ট্রু এআই তৈরি হবে, তখন এটি সমাজে কী প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে এবং কী পরিবর্তন আনতে পারে তা ভবিষ্যদ্বাণী করা প্রায় অসম্ভব। তবে, বিশেষজ্ঞরা এখনও মনে করেন যে, এই ধরনের কোনো বিশাল পরিবর্তন এখনো কয়েক দশক দূরে রয়েছে। তাই এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।

অনুবাদ করেছেন আহমেদ বিন কাদের অনি

Comments

The Daily Star  | English

Tariff math favours Bangladesh in shifting US trade landscape

The shift of the USA to reciprocal tariffs has shaken global trade. But for Bangladesh, it’s opened a rare window of opportunity

15h ago