আইফোনের এই ফিচারগুলোর ব্যবহার জানেন কি? 

বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই আইফোনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মানুষ আগ্রহ নিয়ে কিনছেনও। কিন্তু অনেক ব্যবহারকারীই আইফোনের কিছু গোপন ফিচার সম্পর্কে জানেন না। যা আইফোন চালানোর অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে। আজকের আলোচনায় আইফোনের এমন কিছু হিডেন ফিচার সম্পর্কে  আলোচনা করা হবে।
ছবি: অ্যাপল

বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই আইফোনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মানুষ আগ্রহ নিয়ে কিনছেনও। কিন্তু অনেক ব্যবহারকারীই আইফোনের কিছু গোপন ফিচার সম্পর্কে জানেন না। যা আইফোন চালানোর অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে। আজকের আলোচনায় আইফোনের এমন কিছু হিডেন ফিচার সম্পর্কে  আলোচনা করা হবে।

ব্যাক ট্যাপ করেই বিভিন্ন টুলস চালু করা

আইফোনের পেছনে থাকা অ্যাপল লোগো আইফোনপ্রেমীদের কাছে খুবই প্রিয়। তবে, ব্র্যান্ডের আভিজাত্য বহন করা ছাড়াও কিন্তু এই লোগো বিভিন্ন টুলস চালু করতে কাজে লাগতে পারে। এই হিডেন ফিচারের সুবিধাটি পেতে হলে একটি আপডেটেড ভার্সনের আইফোনের সেটিংসে যেতে হবে।


 
সেখান থেকে অ্যাক্সেসিবিলিটি অপশনে ক্লিক করে টাচ অপশনে গেলেই খুঁজে পাওয়া যাবে ব্যাক ট্যাপ অপশনটি। এরপর নিজের পছন্দমতো অ্যাপ নির্বাচন করে সেট করে ট্যাপ অপশনে ডাবল বা ট্রিপল ট্যাপ করতে হবে। এভাবে ট্যাপ করে উপভোগ করা যাবে নিজের পছন্দের অ্যাপ।

সহজেই বিদেশি ভাষার প্রতীক অনুবাদ করুন

দেশের বাইরে গেলে কম-বেশি প্রায় সবারই যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তা হলো ভাষার প্রতীক বুঝতে না পারা। তবে, হাতে যদি একটি আইফোন থাকে, তাহলে আইফোনটি দিয়েই অনুবাদকের কাজ করে নেওয়া যাবে। তার জন্য প্রথমে বিদেশি প্রতীকটির একটি ছবি তুলতে হবে।
 
এরপর, ফটো অ্যাপ থেকে ছবিটি বের করে প্রতীকটির ওপর আঙুল টেনে এনে লেখাটিকে হাইলাইট করতে হবে। এবার, পপ-আপ বার থেকে ট্রান্সলেট অপশনে ক্লিক করলে, মুহূর্তেই টেক্সটি ইংরেজিতে কিংবা ব্যবহারকারীর কাঙ্ক্ষিত ভাষায় অনুবাদ হয়ে যাবে।

ছবি: সংগৃহীত

একাধিক অ্যাপ একসঙ্গে সরানো

যে কখনো একাধিক অ্যাপ সরিয়ে বা মুভ করেছে, সেই এই কাজের জন্যে প্রয়োজনীয় সহনশীলতা সম্পর্কে অবগত। অ্যাপের আইকনটি সরানোর উপযুক্ত করতে লম্বা সময় ধরে ক্লিক করতে হবে, তারপর এক পৃষ্ঠা থেকে আরেক পৃষ্ঠায় টেনে ধরে সরাতে হবে। যা বেশ সময়সাপেক্ষ। তবে, একই সঙ্গে নিজের ইচ্ছেমতো কয়েকটি অ্যাপ এক সঙ্গে সরানোর একটি উপায় জানা থাকলে সময় বাঁচবে।

যে অ্যাপটি সরানো দরকার সেটি হাইলাইটেড না হওয়া পর্যন্ত লম্বা ট্যাপ করে ধরে রাখতে হবে। এটি অ্যাপল থেকে সংকেত যে অ্যাপটি সরানোর জন্য প্রস্তুত। তারপরে একটি আঙুল দিয়ে, অ্যাপটিকে তার স্লট থেকে স্লিপ করতে হবে যাতে এটি সারির মধ্যে ঘোরাফেরা করে।

প্রথম অ্যাপটি ধরে রাখার সময়, অন্যান্য যেসব অ্যাপ সরানো দরকার, সেসব অ্যাপে ট্যাপ করতে দ্বিতীয় আঙুল ব্যবহার করতে হবে। এটি বাকি অ্যাপগুলোকেও স্ট্যাকের সঙ্গে যুক্ত করবে, যাতে সেগুলোকে এক সঙ্গে সরানো যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রথম আঙুলটি স্ক্রিনে চেপে রাখা হবে ততক্ষণ স্ট্যাকে অ্যাপ সংযুক্ত করা চালিয়ে যাওয়া যাবে। তারপর, সব অ্যাপগুলোক যে অবস্থানে (বা ফোল্ডারে) রাখা দরকার সেখানে রেখে দেওয়া যাবে।

ম্যাগনিফায়ার

বই বা যেকোনো কাগজের ছোট ছোট অক্ষর পড়তে অনেকেরই সমস্যা হয়। এই সমস্যার সমাধানও করে দিতে পারে হাতে থাকা আইফোনটি। চাইলেই আইফোনকে ম্যাগনিফাইং গ্লাস হিসেবে ব্যবহার করে বইয়ের ছোট ছোট অক্ষর বড় করে দেখা যায়।

আইফোনকে ম্যাগনিফাইং গ্লাস হিসেবে ব্যবহার করতে সেটিংস থেকে অ্যাক্সেসিবিলিটি অপশনে ক্লিক করুন। সেখান থেকে ম্যাগনিফায়ার অপশনটি নির্বাচন করুন।

এরপর, আবারও সেটিংস থেকে কন্ট্রোল সেন্টারে গিয়ে 'কাস্টমাইজ কন্ট্রোলস' নির্বাচন করতে হবে। তারপরে প্লাস (+) আইকনটিতে ক্লিক করে ম্যাগনিফায়ার সিলেক্ট করলেই কাজ হয়ে যাবে। এবার আইফোনের কন্ট্রোল সেন্টার থেকে ম্যাগনিফায়ার অফারটি উপভোগ করা যাবে।

ছবি: সংগৃহীত

গোপন আইফোন কোড

আইফোন ডায়ালপ্যাডে কয়েকটি গোপন কোড টাইপ করে অনেক দরকারি আইফোন ফিচার অ্যাক্সেস করা যায়। এরকম কিছু গুরুত্বপূর্ণ কোড উল্লেখ হচ্ছে:

*#০৬# – আইএমইআই নম্বর
*৩০০১#১২৩৪৫#* - সংকেত তথ্য
*৬১* – ইনকামিং কল ডাইভার্ট করতে (যে নম্বরে কল ডাইভার্ট করা দরকার সেটি যোগ করে তারপর) হ্যাশ যোগ করতে হবে।
*৬৭ (বা #৩১# ইউএসএ-এর বাইরে) - কলার আইডি গোপন করতে
*৬৪৬# – চুক্তিতে মিনিট ধার করতে
*৩৩* এর পরে পিন তারপরে হ্যাশ চাপলে আউটগোয়িং কল প্রতিরোধ করা যাবে
*৪৩# - কল ওয়েটিং চালু করতে
#৪৩# - কল ওয়েটিং বন্ধ করতে

সহজেই পরিমাপ করা 

এখন হাতে আইফোন থাকলে দূরত্ব মাপার ঝামেলাকে 'না' বলা যাবে, কেন না হাতের ওই আইফোনটি নিমিষেই এই কাজ করে দিতে পারে। আইফোনের মেজার অ্যাপ কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই এবং দ্রুত দূরত্ব মেপে নেওয়া সম্ভব। সব সময় একদম নিখুঁত মাপ না হলেও সঠিক পরিমাপের কাছাকাছি একটা ধারণা পাওয়া যাবে।
 
দূরত্ব মাপার জন্য আইফোনের মেজার অ্যাপটি চালু করে ক্যামেরায় নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। তারপর অগমেন্টেড রিয়্যালিটি প্রযুক্তির সাহায্যে ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিটি পর্যালোচনা করে খুব দ্রুতই অ্যাপটি দূরত্বের পরিমাণ জানিয়ে দেবে।

আইফোনের এই কয়েকটি হিডেন ফিচার শুধু আইফোন ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা সুন্দরই করে তুলবে না বরং দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজকেও সহজ করে দিবে। আর প্রতিনিয়তই অ্যাপল যেভাবে তাদের আইফোনে সবশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করছে, তাতে আইফোনের জনপ্রিয়তা যে ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

 

তথ্যসূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট, দ্য বিজনেস ইনসাইডার 

 

Comments